অনলাইন ডেস্ক : শীতকালীন শাকের মধ্যে পালং শাক সর্বাধিক পরিচিত। প্রায় সারা ভারত জুড়েই এই শাকেরা দেখা মেলে। পালক পনির হোক ঝিংবা পালং-বেগুন-বড়ি দিয়ে বাঙালি রান্না – এই শাকের সব রেসিপিই সমান জনপ্রিয়। কিন্তু এই শাকের মধ্যে যে বিস্ময়কর পুষ্টি রয়েছে, তা শুনলে অবাক হতে হয়।
সাধারণত শাকের মধ্যে যে সমস্ত পুষ্টি গুণ থাকে, সেগুলির বাইরেও আরও দুর্লভ কিছু উপাদানে ভরপুর এই পালং শাকের অশেষ গুণের কথা বলে শেষ করা যাবে না। তাই আজ এর বিশেষ কিছু গুণাগুণ ও উপকারিতার দিকগুলিই পাঠকের কাছে তুলে ধরবো।
১. পালং শাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি এবং বিটা ক্যারোটিন। এই উপাদান দু’টি কোলনের কোষের সুরক্ষায় কাজ করে।
২. মাইগ্রেনের ব্যাথায় পালং শাক বেশ কার্যকর। ৩. পালং শাকে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, পটাশিয়াম এবং ফলেট মস্তিষ্কের কিছু অংশের ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়ক, ফলে স্মৃতিশক্তি ও মনোযোগ ক্ষমতার বিশেষ উন্নতি ঘটে।
৪. পালং শাকে থাকা অ্যামাইনো অ্যাসিড আমাদের হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটায় ।
৫. জন্ডিসে আক্রান্ত রোগীদের জন্য পালং শাক বিশেষ উপকারী।
৬. লুটেইন নামক একটি উপাদান রয়েছে এই শাকে, যা খারাপ কোলেস্টেরলকে কমিয়ে হৃদযন্ত্রকে সুরক্ষিত রাখে।
৭. প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি থাকায় এই শাক সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষা করে। ফলে স্কিন ক্যান্সারের ঝুঁকিও অনেক কমে যায়।
৮. পালং শাকে রয়েছে ফলেট ও ভিটামিন কে (k)- যা ত্বককে ফর্সা ও উজ্জ্বল করতে সহায়ক। এছাড়া এই শাক চোখের নিচের কালো দাগ দূর করে।
৯. পালং শাকে আছে দশটিরও বেশি বিভিন্ন ধরণের ফ্ল্যাভোনয়েড, যা নানা ধরণের ক্যান্সারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
১০. এই শাকে থাকা উচ্চ মাত্রার বিটা ক্যারোটিন চোখের ছানি পড়া আটকাতে সহায়ক।
তবে সব খাবারের মতোই, পালং শাকও অতিরিক্ত খেলে এর কিছু অপকারী প্রভাব পড়ে আমাদের শরীরে। যেমন, এতে উপস্থিত অক্সালিক অ্যাসিড নামক প্রাকৃতিক যৌগটি শরীরে পরিমাণের চেয়ে বেশি হয়ে গেলে তা অন্যান্য খনিজ শোষণে বাধা সৃষ্টি করে। ফলে শরীরে খনিজের ঘাটতি দেখা দেয়। যাঁদের কিডনিতে পাথর হওয়ার প্রবণতা বা ঝুঁকি রয়েছে, তাঁরা অতিরিক্ত পালং শাক খেলে এই ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়। অস্থিসন্ধির ব্যথা যাদের রয়েছে, তাঁরাও বেশি। পরিমাণে এই শাক খেলে ব্যথা বাড়ার সম্ভাবনা থাকে। বেশি পরিমাণে পালং শাক খেলে পেটে গ্যাস, ফোলাভাব বা ক্র্যাম্পের মতো সমস্যাও দেখা যেতে পারে। এই শাক বেশি খেলে এর মধ্যে থাকা ভিটামিন কে (k) রক্ত তরল রাখতে বাধা সৃষ্টি করবে। তাই যাঁরা রক্ত তরল রাখার ওষুধ খান, তাঁরা খুবই অল্প পরিমাণে এই শাক খাবেন।