অনলাইন ডেস্ক : শুরুর আগেই কালো হরফে লেখা হয়ে গেল শেষের কবিতা। থ্রিলার টিলার এসব আর বেগ পেল না। থেকে গেল কাগজে কলমেই। ফুলস্টপ না পড়লেও এই রবিবার আর হচ্ছে না জেলা ক্রীড়া সংস্থার বহু প্রতিক্ষিত দ্বিবার্ষিক সাধারণ সভার। এক ঘন্টারও কম সময়ের ‘ নিরামিষ ‘ একটা জিবিতে ডান বাম মিলে সার্বজনীনভাবে বিজিএমের স্থগিতদেশে সিলমোহর লাগিয়ে দেন।
জেলা প্রশাসনের শহরাঞ্চলের বন্যার দরুণ বিজিএম পিছানোর আবেদন নিয়ে আলোচনাহেতু শুক্রবার জিবির বিশেষ বৈঠক ডেকেছিলেন জেলা ক্রীড়া সংস্থার সচিব বিজেন্দ্রপ্রসাদ সিং। দিন দিন গড়াতে গড়াতে আসাম অলিম্পিক সংস্থার অসহায়তা ভরা চিঠি এবং আদালতের শোকজ নোটিশ এসে পড়ে বাদশার টেবিলে। এজেন্ডা যতই বাড়ছিল, সংবাদের স্কোপের আশাটাও চড়াই করে চলছিল প্রত্যাশার হিমালয়ে। শাসক – বিরোধীদের সংঘর্ষে রবিবারের আগেই বাহুবলির একটা সিকুয়েলের আভাস পাওয়া গিয়েছিল। কিন্তু সেরকম কিছুই আর হল না। সাদামাটা একটা বৈঠকে সবাই মিলে বিজিএম পিছানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে নেন।
সভার শুরুতেই ডিএসএ সচিব বিজেন্দ্র আসাম অলিম্পিক সংস্থার চিঠির বিষয়ে অবগত করেন জিবিতে উপস্থিত সদস্যদের। রবিবার বিজিএম হলে পর্যবেক্ষক পাঠাতে পারবে না বলে অলিম্পিক সংস্থা চিঠির মাধ্যমে জানিয়ে দেয় শিলচর ডিএসএকে। অবশ্য কেন পর্যবেক্ষক পাঠানোর ব্যাপারে অসহায়তা দেখালো তারা, এ বিষয়ে স্পষ্ট কিছুই জানায়নি অলিম্পিক সংস্থা। শুধু বলেছে ১ জুলাইয়ের পর বিজিএম করলে আসাম অলিম্পিক সংস্থা পর্যবেক্ষক পাঠাতে পারবে বলে চিঠিতে জানিয়েছে। ফলে জিবি সদস্যরা পুনরায় আসাম অলিম্পিক সংস্থার সঙ্গে সংঘাতে যায়নি। এমনিতে সম্প্রীতি ঝামেলায় জড়িয়ে আসাম অলিম্পিক সংস্থার শাস্তির মুখে পড়তে হয়েছিল ডিএসএকে। তাই পর্যবেক্ষক ছাড়া আবারও তাদের বিরাগভাজন হয়ে লাভ নেই বলে সদস্যদের কাছে আর্জি রাখেন বাদশা। বাকি সদস্যরাও তাঁর হ্যাঁয়ের সঙ্গে হ্যাঁ মেলান।
এরপর আলচনায় আসে উধারবন্দ ক্রীড়া সংস্থার কাজিয়ার ইস্যু। যার পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার ডিএসএকে শোকজ নোটিশ পাঠায় আদালত। উধারবন্দ ক্রীড়া সংস্থার ‘ মালিকানা ‘ নিয়ে দু-পক্ষের মধ্যে সৃষ্ট ঝামেলার জল আদালত অবধি গড়িয়েছে। সেই মামলার নিস্পত্তি না হওয়া সত্ত্বেও কিভাবে বিজিএমের জন্য উধারবন্দ ক্রীড়া সংস্থার ‘আগের ‘ কমিটি সঞ্জু রায়ের নাম পাঠিয়েছিল এবং ডিএসএও কিভাবে তা মেনে নিল, সেই বিষয়টা জানতে চেয়ে আদালতে মামলা করেছিল উধারবন্দ ক্রীড়া সংস্থার ‘ নতুন ‘ কমিটি। শুক্রবার আদালতে এই মামলার শুনানি ছিল। এতে জবাবদিহি স্বরূপ ডিএসএকে শোকজ করেছে আদালত। তিন বিষয়ের মধ্যে এটাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন প্রত্যেক সদস্য। টাউন ক্লাব সভাপতি তথা বরিষ্ঠ সদস্য দিলীপ রঞ্জন নন্দী প্রথমে আদালতের বিষয়টা নিস্পত্তি করে তারপর বিজিএমের দিকে পা বাড়ানোর প্রস্তাব দেন। আদালতের বিপক্ষে যাওয়ার দু সাহস তো কারোর নেই। সবাই একযোগে বিষয়টা মেনে নেন।
জিবির শুরুতেই সচিব বিজেন্দ্র প্রশাসনের চিঠি নিয়ে আলোচনায় আগ্রহী হোন। তিনি স্পষ্টভাষাতেই বলেন, জিবির সবাই চাইলে বিজিএম রবিবার করানো যাবে। কিন্তু বাকি দুটা বিষয় নিয়ে কেউ আর বিতর্কের দিকে পা বাড়াননি। সভাপতি বাবুল হোড়ও সবকিছু আপোষ করে মেনে নেন।
এখন যা পরিস্থিতি, তাতে রবিবার তো হচ্ছেই না। আসাম অলিম্পিক সংস্থার কথা মানলে ১ জুলাইর পর হতে পারে বিজিএম। কিন্তু সবকিছুই সময়সাপেক্ষ। আবার যদি আষাঢ়ের বর্ষণে ভিজে যায় শহর শিলচর, তাহলে!!!