অনলাইন ডেস্ক : ভুঁড়িওয়ালা পুলিশ রাজ্যের সর্বত্রই চোখে পড়ে। ঝুলে পড়া পেটের জন্য হাঁটা চলা করেন এঁরা কচ্ছপ গতিতে। নড়তে চড়তে অসুবিধের দরুন স্বভাবতই অলস হন এঁরা। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা আগেই কড়া বার্তা দিয়েছেন, অফিসারই হন বা সাধারণ পুলিশ কর্মী, ভুঁড়িওয়ালাদের বাহিনীতে ঠাঁই নেই। অতএব ভুঁড়ি কমাতে না-পারলে স্বেচ্ছাবসর নিতেই হবে। মুখ্যমন্ত্রীর এমন হুঁশিয়ারিতে তটস্থ অনেক পুলিশ কর্মীই ব্যায়ামে মন দিয়েছেন। আবার অনেক ভেবেছিলেন, ওসব কথার কথা। শেষমেষ তেমন কিছুই হবে না। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী যা বলেছেন তা-ই যে হবে, সেটা পরিস্কার করে দিয়েই পুলিশ প্রধান জিপি সিংহ টুইট করে জানিয়ে দেন, হাতে আছে আর মাত্র পঁয়তাল্লিশ দিন। এর মধ্যেই আইপিএস, এপিএস অফিসার থেকে শুরু করে সব পুলিশ জওয়ানকে ‘ফিট’ হতে হবে।
ডিজিপি জানাচ্ছেন, আগামী ১৬ আগস্ট থেকে রাজ্যের ছত্রিশটি জায়গায় প্রত্যেক পুলিশ কর্মীর বিএমআই (বডি মাস ইনডেক্স) টেস্ট হবে। কে কতটা শারীরিকভাবে সতেজ, কার শরীরে কতটা চর্বি জমেছে, সবই এই পরীক্ষায় ধরা পড়বে। মোট কথা, পুলিশ কর্মীদের শারীরিক সুস্থতার প্রমান দর্শাবে বিএমআই টেস্ট। তিনি বলেছেন, মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের নির্দেশেই এই ব্যবস্থা হাতে নেওয়া হয়েছে। ডিজিপি-র বক্তব্য, নিজেদের ‘ফিট’ প্রমাণ করার জন্য পুলিশ কর্মীদেই সময় দেওয়া হয়েছে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত। ১৬ আগস্ট থেকে শুরু হবে বিএমআই টেস্ট। এই বিএমআই পরীক্ষায় ৩০ প্লাস ক্যাটাগরিতে যাঁরা পড়বেন তাঁদের আরও তিন মাস সময় দেওয়া হবে ওজন কমানোর জন্য। এরপরও শরীর সেই মেদবহুলই থেকে গেলে একটাই পথ খোলা থাকবে। সেটা হল স্বেচ্ছাবসর।
এদিকে, সরকারি ফরমান পাওয়ার পর থেকে বহু পুলিশ কর্মী মেদ ঝরাতে শারীরিক কসরত শুরু করেছেন। ওজন কমানোর প্রশ্নে অনেকেই আদর্শ করে নিয়েছেন আইপিএস আধিকারিক বিবেক রাজ সিংহ কেকরেলেকে। ২০১৯-এ তাঁর ওজন ছিল ১৩৮ কে জি। মাত্র এক বছরের মধ্যে সেই ওজন কমে দাঁড়িয়েছে ৮৩ কেজি। সামাজিক মাধ্যমে কেকরেলে তাঁর শরীরকে মেদমুক্ত করার কাহিনী বর্ণনা করেছেন। রোজ সকালে নিয়ম করে হাঁটতেন তিনি। সঙ্গে নানান ধরনের ব্যায়াম তো ছিলই।এছাড়া পরিমিত খাবার খেয়েছেন। ২০২০-এর জুলাইয়ের মধ্যে তাঁর ওজন ১৩৮ থেকে কমে হয় ৯৪ কেজি। সেই বছরেরই নভেম্বরে আরও কমে দাঁড়ায় ৮৩ কেজি। কেকরেলে বলেছেন, মেদ ঝরিয়ে সবারই তরতাজা হয়ে ওঠা ভীষণ জরুরি। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের পুলিশ কর্মীরাও বলছেন, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মেনে যথার্থ পদক্ষেপই নিয়েছেন ডিজিপি। বাহিনীকে স্মার্ট হতে হবে। এর জন্য প্রত্যেক পুলিশ কর্মীর শরীর মেদহীন হতে হবে।