অনলাইন ডেস্ক : দিনদুপুরে হাইলাকান্দিতে খুন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মী। শহরের টোল রোডে ঘরের ভেতর থেকে উদ্ধার মৃতদেহ। চুরির উদ্দেশ্যে ঘরে ঢুকে খুন করার সন্দেহ। ধন্দে পুলিশ। শহরের নাগরিক জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন সচেতন মহলের। ফের একবার চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ড হাইলাকান্দি শহরে। বৃহস্পতিবার দুপুরে হাইলাকান্দি শহরের ঠিক মাঝখানে থাকা টোল রোডে সংঘটিত হয় এই ঘটনা। মৃত্যু হয়েছে তাপস পুরকায়স্থ (৬৮) নামের এক অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মীর৷ তিনি জনস্বাস্থ্য ও কারিগরী বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত সাব-ইজ্ঞিনিয়ার। জানা গেছে, শহরের টোল রোড ও আশ্রম রোডের সংযোগী গলিতে বাড়ি রয়েছে তাপস পুরকায়স্থের। চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার পর থেকে এই বাড়িতে একাই বসবাস করতেন তিনি। বৃহস্পতিবার মুশলধারে বৃষ্টির মধ্যেও সকাল দশটা-সাড়ে দশটা নাগদ বাড়ি থেকে বের হন কোনো কাজে। কাজ শেষ করে ফেরেন বাড়িতে। আর বেলা আনুমানিক সাড়ে বারোটা নাগাদ তার প্রতিবেশীরা তার চিৎকার শুনতে পান। তিনি “বাঁচাও, বাঁচাও” বলে চিৎকার করছিলেন। তার আওয়াজ শুনে প্রতিবেশীরা ছুটে গিয়ে দেখতে পান এক অজ্ঞাত পরিচয় যুবক তাপস বাবুর গেট দিয়ে বেড়িয়ে যাচ্ছে। তারা কিছু আঁচ করতে না পেড়ে ঘরে প্রবেশ করে দেখেন তাপস বাবুর নিথর দেহ মেঝেতে পড়ে রয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে খবর দেওয়া হয় পুলিশে।
কিছু মুহুর্তের মধ্যেই ঘটনাস্থলে ছুটে আসে বিশাল পুলিশ বাহিনী। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ শাখা) সমীর দপ্তর বরুয়াও এসে উপস্থিত হন। আরম্ভ হয় পুলিশের প্রাথমিক তদন্ত। পরে পুলিশ মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাইলাকান্দির এস কে রায় আসামরিক হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়। এদিকে, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বরুয়া সংবাদ মাধ্যমে জানান, ঘটনার তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। তিনি জানান, মৃতদেহের মুখে রক্তের দাগ ছিল। এছাড়া শরীরে আর কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই। তাপস বাবু ঘরে একা থাকেন জেনে চুরির উদ্দেশ্যে ঘরে ঢুকে কেউ তাকে হত্যা করেছে বলে পুলিশ অনুমান করছে বলে জানান তিনি। কিন্তু আশ্চর্যজনক ভাবে তার হাতের আংটি, সোনার চেন এটিএমকার্ড (সঙ্গে পিন লিখা) পাসবুক বা নগদ টাকা এসব কিছুই চুরি হয়নি বলেও জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বড়ুয়া। স্থানীয়রা জানান, গত ক’দিন আগেও তাপস পুরকায়স্থের বাড়িতে চোরের দল হানা দিয়েছিল। বৃহস্পতিবার অঝোরে বৃষ্টির মধ্যে সম্ভবত ওই চোরটি চুরি করতে এসেছিল। আর নগদ অর্থ সামগ্রী না পেয়ে তাকে খুন করে পালিয়ে যায়, এমনটি মনে করছেন স্থানীয়রা। এদিকে, দিনের সূর্যালোকে এধরনের এক লোমহর্ষক ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য বিরাজ করছে শহরে। এর আগেও গত ১৯ মার্চ শহরের শিলচর রোডে একটি পার্লারের ভেতর থেকে পার্লারের মালিকের মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছিল। এছাড়াও। শহরে চুরির ঘটনাও অনেকাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে অনিশ্চিয়তা ও দুশ্চিন্তার ভাঁজ পড়েছে নাগরিক জীবনে।