অনলাইন ডেস্ক : প্রথম দফায় ভেতরে ঢুকতে গেলেই গুনে দিতে হচ্ছে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণের “এন্ট্রি ফি”। এরপর ভেতরের ঢোকার পর থাকছে বিভিন্ন ধরনের মালিশের বিভিন্ন দর সম্বলিত তালিকা। এসবের পর তৃতীয় দফায় শুরু হয়ে থাকে আসল খেলা। যার দরের কোনও লিখিত তালিকা থাকে না। মুখে জানিয়ে দেওয়া হয় দর। তৃতীয় দফার “স্পেশাল সার্ভিস” বা বিশেষ পরিষেবা নাম দিয়ে চলে থাকে অবাধ যৌনতা। শিলচরের একাংশ “স্পা”-র কার্যবিবরণী এমনই। এসব “স্পা”-কে সোজা কথায় যৌনশালা বলাটাই বোধহয় যুক্তিযুক্ত। আর “স্পা”-র আড়ালে নিজেদের এই “যৌনব্যবসা” চালানোর জন্য শিকার বানানো হয় অসহায় কিশোরী- যুবতীদের।
শিলচরের একাংশ “স্পা”-সম্পর্কে অভিযোগ ছিল অনেক আগে থেকেই। এবার হাসপাতাল রোডের এক “স্পা”- মালিক বিশ্বজিৎ দাস ওরফে বাপনের কুকীর্তির সূত্র ধরে সবকিছুই প্রকাশ্যে এসে গেছে। বিশ্বজিৎ ওরফে বাপনকে গত মঙ্গলবার রাতে শিলচরে এসে স্থানীয় পুলিশের সহায়তায় আটক করে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ। পরদিন আদালতে তাকে ট্রানজিট রিমান্ডে পশ্চিমবঙ্গে নিয়ে যাওয়ার জন্য আবেদন জানায় সেরাজ্যের পুলিশের দলটি। তবে সেদিন আদালতে পেশ করার পর বিশ্বজিৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করানো হয় মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। আর ট্রানজিট রিমান্ডের প্রক্রিয়াও স্থগিত রাখা হয় আদালতে। শুক্রবার বিশ্বজিৎকে মেডিকেল থেকে রিলিজ করা হলে কলকাতা পুলিশ ফের আদালতে আবেদন জানায়। এতে আদালত তাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য আবেদন মঞ্জুর করে। খবর অনুযায়ী আবেদন মঞ্জুর হলেও পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ এদিন বিশ্বজিৎকে নিয়ে যেতে পারেনি। আগামীকাল শনিবার তাকে নিয়ে রওনা হওয়ার কথা।
বিশ্বজিতের বিরুদ্ধে অভিযোগ মাস কয়েক আগে পশ্চিমবঙ্গের এক নাবালিকা প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে এখানে আসার পর তাকে নিজের “স্পা”-তে কাজের জন্য নিযুক্ত করেন। সেসময় ওই কিশোরীকে দিয়ে মালিশ করানোর নামে যৌন নির্যাতন করা হতো বলে অভিযোগ। পরবর্তীতে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ নাবালিকাকে উদ্ধার করে পশ্চিমবঙ্গে নিয়ে গেলে তার জবানবন্দীর সূত্রে বেরিয়ে আসে পুরো কাহিনী। এর ভিত্তিতেই পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ এবার শিলচরে এসে আটক করেছে বিশ্বজিৎকে।
এদিকে একাংশ “স্পা”-সম্পর্কে যে তথ্য পাওয়া গেছে তা খুবই ভয়ঙ্কর। গোটা রাজ্য সহ দেশের বিভিন্ন অংশের এই একাংশ “স্পা”- মালিকদের সঙ্গে মিলে এরা গড়ে তুলেছেন এক সিন্ডিকেট ।
খবর অনুযায়ী, “স্পা” মালিকদের এই বোঝাপড়ার সূত্রে যৌন ব্যবসায় লাগানো অসহায় কিশোরী-যুবতীদের কখনোই খুব বেশিদিন নির্দিষ্ট কোনও “স্পা”-তে রাখা হয় না। কিছুদিন পর পর এক শহর থেকে অন্য শহরের স্পা”-তে অদল বদল করা হয় তাদের। এমনটা করা হয়ে থাকে দুটি উদ্দেশ্যে । এতে একদিকে মেটানো সম্ভব হয় গ্রাহকদের নতুন নতুন চাহিদা, অন্যদিকে এই অসহায় কিশোরী- যুবতীরা কোন বিশেষ “স্পা” সম্পর্কে খুব বেশি অবগত হতে পারে না। এতে করে আপত্তিকর সব কার্যকলাপ প্রকাশ্যে আসার সম্ভাবনাও থাকে কম।