অনলাইন ডেস্ক : ‘মোদি পদবি’ মামলায় সুপ্রিম কোর্টে স্বস্তি পেলেও এখনই সংসদে ফেরা হচ্ছে না রাহুল গান্ধীর । সবকিছু নির্ভর করছে স্পিকারের উপর । তবে কংগ্রেস শিবির অবশ্য রাহুলের সাংসদ পদ ফিরে পাওয়ার ‘সম্ভাবনা’কে সাফল্য হিসাবেই দেখছে। কংগ্রেসের সরকারি টুইটার হ্যান্ডেলে টুইট করে বলা হয়েছে,’সত্যমেব জয়তে।’ রাহুল নিজে অবশ্য বিশেষ উচ্ছ্বাস দেখাননি। শাস্তিতে স্থগিতাদেশ দিতেই কংগ্রেসে শিবিরে রীতিমতো উৎসবের মেজাজ। রাহুলের শাস্তি বাতিল হচ্ছে, এ খবর এআইসিসি সদর দপ্তরে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে দলের কর্মী-সমর্থকরা উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন। কেউ মাটিয়ে লুটিয়ে নাগিন ডান্সে মত্ত, কেউ আবার শূন্য দু’বাহু তুলে কীর্তনে ব্যস্ত, কেউ হয়তো ঢাক-ঢোল পেটাচ্ছেন, কেউ আবার রাহুলের নামে জয়ধ্বনি দিচ্ছেন। এক লহমায় দেখলে মনে হতে পারে, বড় কোনও নির্বাচনে হয়তো সাফল্য পেয়েছে কংগ্রেস।
তিনি ছোট্ট টুইটে বলেছেন,”পরিস্থিতি যাই হোক, আমার কর্তব্য একটাই। ইন্ডিয়ার ধারণাকে রক্ষা করা।” প্রিয়াঙ্কা গান্ধী গৌতম বুদ্ধর বাণী তুলে ধরে বলেছেন, ‘সূর্য, চন্দ্র এবং সত্যি কখনও চাপা থাকে না।’ দলের অন্যতম প্রধান মুখপাত্র সুপ্রিয়া শ্রীনাতে যেমন বলে দিচ্ছেন, সংসদে আবার সিংহগর্জন হবে। অধীর চৌধুরী, ডিকে সুরেশদের মতো সাংসদরাও উচ্ছ্বসিত। নেতাকে সংসদে ফিরে পাওয়ার আনন্দে তাঁরা বলে দিচ্ছেন, এবার INDIA জোটের নেতৃত্ব দেবেন রাহুল গান্ধী। আসলে এআইসিসি সদর দপ্তরে যে ছবিটা ছিল, সেই একই ছবি দেখা গিয়েছে সংসদেও। কংগ্রেসের সাংসদরাও রীতিমতো নাচাগানার মেজাজে চলে গিয়েছিলেন রাহুলের শাস্তি মকুবের খবরে।
আপাতত রাহুলের সাংসদ পদ কত তাড়াতাড়ি ফেরানো যায়, সেদিকে সচেষ্ট কংগ্রেস। সুপ্রিম কোর্টের রায় প্রকাশ হওয়ার পরই কংগ্রেসের লোকসভার দলনেতা অধীর চৌধুরী স্পিকার ওম বিড়লার সঙ্গে দেখা করে দ্রুততার সঙ্গে রাহুলের সাংসদ পদ ফেরানোর দাবি জানিয়েছেন। সূত্রের খবর, রায়ের কপি হাতে নিয়ে রাহুল নিজেও যাবেন সংসদের সচিবালয়ে। আসলে কংগ্রেস চাইছে যেভাবেই হোক মণিপুর ইস্যুতে যে অনাস্থা প্রস্তাব সংসদে আনা হয়েছে, সেই অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার আগে রাহুলকে সংসদে ফেরাতে। দলের প্রাক্তন সভাপতি লোকসভায় থাকলে, দলের মূল বক্তাও তিনিই হবেন।
কিন্তু কংগ্রেসের এই পরিকল্পনার বাস্তবায়ন পুরোপুরি নির্ভর করছে স্পিকারের উপর। আসলে কোনও সাংসদের শাস্তি বাতিল হলে কতদিনের মধ্যে তাঁর সাংসদ পদ ফেরাতে হবে, তার কোনও ডেডলাইন কোনও বেঁধে দেওয়া নেই। সেক্ষেত্রে আজ রাহুলের শাস্তি মকুব হল, আর কালই তিনি সাংসদ পদ ফিরে পাবেন, তেমন কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। শেষবার লাক্ষাদ্বীপের সাংসদ মহম্মদ ফয়জলের সাংসদ পদ এভাবে ফেরানো হয়েছিল। সেবার হাই কোর্ট ফয়জলের শাস্তি বাতিল করার পরও দীর্ঘদিন তাঁর সাংসদ পদ ফেরায়নি লোকসভার সচিবালয়। পরে আবার সুপ্রিম কোর্টে সংসদের সচিবালয়ের বিরুদ্ধে মামলা করতে হয় তাঁকে। যদিও সেই মামলার রায় ঘোষণার আগেই শেষপর্যন্ত ফয়জল সাংসদ পদ ফিরে পান। ততদিনে মাসখানেক কেটে গিয়েছে। রাহুলের ক্ষেত্রে স্পিকার কতদিন সময় নেন, সেটাই দেখার। তাৎপর্যপূর্ণভাবে, শাস্তি পাওয়ার পর কিন্তু একদিনের মধ্যেই কংগ্রেস নেতার সাংসদ পদ বাতিল হয়েছিল।