অনলাইন ডেস্ক : খাদ্য, গনবন্টন ও গ্রাহক পরিক্রমা বিভাগ আয়োজিত শিলচর টাউন ক্লাবের ময়দানে এক অনুষ্ঠানে মঙ্গলবার রাজ্য বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার নোমল মুমিন শিলচর বিধানসভার কেন্দ্রের অন্তর্গত ৮৮২২ জন হিতাধিকারীর মধ্যে নতুন রেশন কার্ড বন্টনের সূচনা করেন।
অনুষ্ঠানে মুখ্য বক্তা হিসেবে উপস্থিত হয়ে মুমিন পরাক্রম দিবস উপলক্ষে নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে বলেন, নেতাজীর উদ্যোগে উত্তর পূর্বাঞ্চল বাংলাদেশের সাথে যুক্ত হয়নি এবং গোপীনাথ বরদলৈর নেতৃত্বে ভারতবর্ষের সঙ্গে আসাম তথা উত্তর পূর্বাঞ্চল একটি অভিন্ন অঙ্গ। এই মহান ব্যক্তিত্বের জীবন আদর্শ সমগ্র আসামবাসী চিরকাল মনে রাখবে। তিনি বলেন, ১৯৩৮ সালে নেতাজি ১৫ দিন রাজ্যের বিভিন্ন এলাকা পরিভ্রমণ করেন এবং গোপীনাথ বরদলৈকে আসামের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত করেছিলেন। তিনি রামমন্দিরের প্রাণ প্রতিষ্ঠার জন্য সমস্ত দেশবাসীর হয়ে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে বলেন, পূর্ববর্তী অ-বিজেপি সরকারের অপশাসন থেকে মুক্ত হয়ে বর্তমান সরকার দেশের প্রত্যেক নাগরিকের সামগ্রিক উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখেছে। তিনি রেশন কার্ড, আয়ুষ্মান কার্ড, উজ্জলা ইত্যাদি বিভিন্ন যোজনার কথা উল্লেখ করে বলেন, মানুষ আজ কাউকে কোনও প্রকারের ঘুষ না দিয়ে উপকৃত হচ্ছেন। তিনি প্রধানমন্ত্রীর বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজকর্মের প্রশংসা করে বলেন, আজ মানুষ রোগমুক্ত হচ্ছে, ক্ষুধামুক্ত হচ্ছে, যোগাযোগ, শিক্ষা, ইত্যাদি সর্বক্ষেত্রে রাজ্যের মানুষ উপকৃত হচ্ছেন। ভারতবর্ষ আজ পৃথিবীর মধ্যে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ইত্যাদি বিভিন্ন ক্ষেত্রে অগ্রগতি লাভ করছে, এর জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
অনুষ্ঠানে সাংসদ রাজদীপ রায় বলেন, বর্তমান সরকার ভারতে সাড়ে ৩ কোটি ঘর নির্মাণ করেছে। এরমধ্যে এ অঞ্চলে এক লক্ষ বারো হাজার ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। এতে রয়েছে সাতানব্বই হাজার ঘর গ্রামীণ এলাকায় এবং শহরাঞ্চলে প্রায় চৌদ্দ হাজার ঘর। ২ লক্ষের অধিক উজ্জ্বলা যোজনা, দেড় লক্ষের ওপর শৌচালয়, এক লক্ষের উপর প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার সুবিধা লাভ হয়েছে। আসামে অরুনোদয় প্রকল্পের অনুসরণ করে বিভিন্ন রাজ্যে সুবিধা প্রদানের জন্য প্রয়াস চালানো হচ্ছে, এরজন্য তিনি মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার নেওয়া পদক্ষেপের প্রশংসা করেন।
অনুষ্ঠানে বিধায়ক দীপায়ন চক্রবর্তী প্রথমে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে তার বক্তব্যে জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইনের অধীনে দেশের সামাজিক ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য সরকার যথেষ্ট সফলতা লাভ করেছে বলে উল্লেখ করেন। আসামে ২০১৫ সালের ডিসেম্বর থেকে খাদ্য সুরক্ষা আইন বলবৎ হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার নেতৃত্বাধীন আসামে সরকার গঠনের পর শিলচর বিধানসভার অধীনে কি জনসংখ্যা বা কার্ড ছিল তা বিধানসভায় প্রশ্ন তিনি করেছিলেন, বর্তমানে জনসাধারণই বলতে পারবেন যে তারা কতটুকু উপকৃত হয়েছেন। বিধায়ক ঘুষ না দিয়ে সরকারি সকল প্রকল্পের সুবিধা কিভাবে পাওয়া যাচ্ছে সে বিষয় নিশ্চিত করে বলেন, এখন থেকে আর কেউ কাউকে ঘুষ দিতে হবে না, ঘুষ চাইলে বিহিত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান।
অনুষ্ঠানে জেলা উন্নয়ন আধিকারিক রাজীব রায়, নিত্যভূষণ দে প্রমুখ প্রাসঙ্গিক বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে কাছাড় জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন আধিকারিক এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দলের কর্মকর্তারাও অংশ নেন।