অনলাইন ডেস্ক : শিলচরে রেলের নির্মাণ শাখার কার্যালয়ে তল্লাশি চালালো সিবিআই। তল্লাশি চালানোর পাশাপাশি জিরিবাম -ইম্ফল লাইন তৈরীর দায়িত্বে থাকা সিনিয়র স্যাকশন ইঞ্জিনিয়ার সন্তোষ কুমারকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে উঠিয়ে।
জানা গেছে, সিবিআই-এর আটজনের একটি দল গত শনিবার শিলচরে আসে। শনিবারই সন্তোষ কুমারের আবাসনে হানা দিয়ে দীর্ঘক্ষন তল্লাশি চালানো হয়। সে সময় সন্তোষ কুমারকে বাইরের কারও সঙ্গে যোগাযোগ করতে দেওয়া হয়নি। শনিবারের পর রবিবার তল্লাশি চালানো হয় নির্মাণ শাখার কার্যালয়ে। তখন কার্যালয়ের অ্যকাউন্টস অফিসার আশীষ সিনহাকেও দীর্ঘক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ চালানো হয় বলে জানা গেছে। এসবের মাঝে রবিবারই তদন্তের স্বার্থে সন্তোষ কুমারকে গুয়াহাটি নিয়ে যাওয়ার জন্য আদালতের কাছে ট্রানজিট রিমান্ডের আবেদন করা হয়। আদালতের অনুমতিতে তাকে ট্রানজিট রিমান্ডে নিয়ে যাওয়া হয়েছে গুয়াহাটিতে।
প্রসঙ্গত জিরিবাম-ইম্ফল রেললাইন তৈরিকে ঘিরে বেশ কিছুদিন ধরেই বড় মাপের দুর্নীতির অভিযোগ শুনা যাচ্ছিল। এবার সিবিআই অভিযান চালিয়ে সিনিয়র স্যাকশন ইঞ্জিনিয়ার সন্তোষ কুমারকে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়ার পর নির্মাণ শাখার কর্মী আধিকারিকদের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে আতঙ্কের। সন্তোষ কুমারের পর পরবর্তীতে আরও কয়েকজনের কাঁধে থাবা পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর মধ্যে চৌধুরী ও বিশ্বাস পদবীর দুই ঠিকাদারের নাম শোনা যাচ্ছে বিশেষভাবে। জানা গেছে সিবিআই এই দুজন ঠিকাদারের খুঁজেও তল্লাশি চালিয়েছিল, তবে তাদের পাওয়া যায়নি। শিলচরের পাশাপাশি লামডিং- এ কর্মরত রেলের নির্মাণ শাখার এক ডেপুটি চিফ ইঞ্জিনিয়ারও সিবিআইর নজর রয়েছেন বলে জানা গেছে। এবং সিবিআইর পক্ষ থেকে অভিযান চালানো হয়েছে সেখানেও।
এদিকে শিলচর এবং লামডিং এর আগে সিবিআই গুয়াহাটিতে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করেছে রেলের এডিআরএম জিতেন্দ্র পাল সিং সহ এক ঠিকাদার শ্যামল কুমার দেব এবং হাওয়ালার টাকা পাঠানোর দোকানের মালিক বিনোদ কুমার সিঙ্ঘল, ওই দোকানের কর্মী দিলওয়ার খান,
সঞ্জিত রায় ও যোগেন্দ্র কুমারকে। এডিআরএম জিতেন্দ্র পাল সিংদের গ্রেফতারের পিছনে হাওয়ালার মাধ্যমে ঘুষের ৫০ লক্ষ টাকা অন্যত্র পাঠানোর অভিযোগ রয়েছে।
প্রসঙ্গত রেলের একাংশ আধিকারিক বিশেষত নির্মাণ শাখার আধিকারিকদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ নতুন কিছু নয়। একাংশ আধিকারিক যেন দেখতে দেখতেই হয়ে উঠেছেন কুবের সম ধনবান। রেলের এই একাংশ আধিকারিক এতটাই অর্থবান হয়ে উঠেছেন যে বছর কয়েক আগে শিলচরে এমনই একজনকে দেখা গেছে তার মেয়ের বিয়ের সময় ঠাটবাট বজায় রাখার জন্য বিদেশ থেকে শিল্পীদের নিয়ে আসতে। সেসময় এ নিয়ে ফিসফিসানি শুরু হলেও পরবর্তীতে সব কিছু চাপা পড়ে যায়।
রেলের এই একাংশ আধিকারিকদের কার্যকলাপ সম্পর্কে অবহিত বিভিন্ন মহলের বক্তব্য যথাযথ তদন্ত হলে সন্তোষ কুমারের মতো আরও অনেককেই আটকা পড়তে হবে জালে।