অনলাইন ডেস্ক : আঁচ মিলেছিল মহালয়ার ভোরে-ই। আর ঘটেছে-ও তাই। তৃতীয়ার সন্ধ্যাতে-ই উৎসবের মেজাজে চলে গিয়েছে শহর শিলচর। এদিন-ই মণ্ডপ উদ্বোধন করে উৎসবের সলতেটা যেন আরও উসকে দিয়েছে বিলপার পদ্মনগর এলাকার আপনজন সর্বজনীন। মণ্ডপ ও প্রতিমার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করে উপত্যকাবাসীকে নেশাদ্রব্য বর্জনের আহবান জানান ভারত সেবাশ্রম সংঘের গুণসিন্ধু মহারাজ। পাশাপাশি ষড়রিপু নিয়ন্ত্রণে পঞ্চেন্দ্রিয়’র ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখার অভ্যেস গড়ে তোলার পরামর্শও দেন। দেবী দুর্গার মর্ত্যে আগমনের কারণও ব্যাখ্যা করেন তিনি। এদিন পদ্মনগর শঙ্কর দিঘির ওপর গড়ে ওঠা সুবিশাল লন্ডন ব্রিজ ও দেবী দর্শনে ভিড় জমায় তরুণ প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা। সুদৃশ্য মণ্ডপ, পুকুরে জলের ফোয়ারা, বাহারি আলোর রোশনাই, সাত্ত্বিকভাব—সব মিলিয়ে এবারও পুজো আয়োজনে স্বতন্ত্রতা বজায় রেখেছে আপনজন। এই বছর ষষ্ঠ বর্ষে পা রেখেছে আপনজনের পুজো। গতবছর তাদের গড়া সুউচ্চ মণ্ডপ, পুকুরের ওপর ফ্লাই ওভার, ফোয়ারা, সেলফি জোন, পাহাড় ইত্যাদি মন জিতেছে সবার। এ বছরও চমকের মেগা প্যাক নিয়ে হাজির হয়েছে আপনজন সর্বজনীন। বিলপার পদ্মনগর এলাকার শঙ্কর দিঘির এপার-ওপার জলের ওপর গড়ে তোলা হয়েছে অবিকল লন্ডন ব্রিজের রেপ্লিকা। পাশে-ই বর্তমান প্রজন্মের জন্য বানানো হয়েছে র্যাম্প -সদৃশ বেশ বড়সড় সেলফি জোন। এছাড়া কাল্পনিক মন্দিরের আদলে দৃষ্টিনন্দন সুবিশাল মণ্ডপ, কারুকার্যখচিত প্রতিমা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান—–সব মিলিয়ে আয়োজনে এ বারও কোনও খামতি রাখেনি কমিটি। দুর্গা পুজোকে ঘিরে কার্যত উৎসবের আবহ তৈরি হয়েছে পদ্মনগর এলাকায়। প্রতিটি বাড়ির মানুষ জড়িত রয়েছেন এই পুজোর সঙ্গে।
কমিটির প্রচার-সচিব শঙ্কর শীল, সভাপতি রঞ্জন পাল, সম্পাদক রঞ্জন রায়-সহ অন্যান্যরা জানিয়েছেন,দিঘির ওপর লন্ডন ব্রিজের চুড়োর উচ্চতা ৬০ ফুটের কাছাকাছি।ভেতরে মন্দিরে থাকবে ১৪ থেকে ১৫ ফুট উঁচু শাস্ত্রীয় প্রতিমা। প্রতিমায় চালির কাজে ব্যবহৃত হয়েছে মুক্তা, ঝিনুক ও পুঁতি। সেতু বানানো হয়েছে কাঠের পাটাতন, বাঁশ, চাটাই ইত্যাদি পরিবেশ বান্ধব উপকরণ দিয়ে। বাড়তি আকর্ষণ হিসেবে দিঘির জলে রয়েছে ফোয়ারাও। বিশাল মাপের আলোর তোরণ বসানো হয়েছে ৫টি। পুজোর তিনদিনই বিতরণ করা হবে মহা প্রসাদ। ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে বিশেষ নজর রাখবেন স্বেচ্ছাসেবকরা। প্রচার সচিব শঙ্কর শীল জানান, প্রতিমা নির্মাণ করেছেন নবদ্বীপের শিল্পী শুকদেব পাল। সম্পূর্ণ শাস্ত্রীয় প্রতিমায় পুজো হবে এবারও। আলোকসজ্জায় রয়েছেন স্থানীয় বিপুল নাথ। মন্ডপ সজ্জায় রয়েছেন শিল্পী জয় দাস। আলোর খেলায় এবার সেরা চমক থাকছে আপনজনের। বিগত বছরগুলির মতো এবারও আপনজনের দুর্গা পূজায় ভিড় উপচে পড়বে বলে আশাবাদী আয়োজকেরা।