অনলাইন ডেস্ক : সেটেলমেন্টের কতিপয় কর্মীর সঙ্গে যোগসাজশে সিন্ডিকেট তৈরি করে কয়েক দশক আগের কেনা জমি হড়প করতে মরিয়া হয়ে পড়েছে ভূ-মাফিয়ারা। এর ফলে শিলচর শহরের পার্শ্ববর্তী রংপুর এলাকায় জমি দালালদের তাণ্ডবে আতঙ্কে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন অনেক লোক। এই অভিযোগ এনে রংপুর তৃতীয়-চতুর্থ খণ্ডের ভুক্তভোগীরা শিলচরে সাংবাদিক বৈঠক করে বিভিন্ন ঘটনার কথা উল্লেখ করেন। সালাব উদ্দিন বড়লস্কর, হানিফ আহমেদ বড়ভূঁইয়া, সমর উদ্দিন বড়লস্কর, ফয়েজ উদ্দিন বড়লস্কর, আব্দুল মকসুস বড়লস্কর, মিসবাউদ্দিন বড়লস্কর, সোহরাব হোসেন বড়লস্কর, খালিক চৌধুরী, বাবলু হোসেন মজুমদাররা অভিযোগ করেন, ভূ-মাফিয়াদের যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষ। বিশেষ করে জমি বিবাদের জেরে দিনদুপুরে শিলচর ওয়াটার ওয়ার্কস রোডে বাড়ির সামনে শিশু আয়ান মঞ্জুরকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করার পর থেকে তাঁদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।নিজেদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে চিন্তিত তাঁরা।
ভুক্তভোগীরা জানান, বর্তমান সরকারের প্রতি তাঁদের ভরসা রয়েছে। ভূ-মাফিয়াদের নিয়ন্ত্রণ করতে মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা যে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছিলেন, কিছুটা হলেও এর ইতিবাচক প্রভাব পড়েছিল। অভিন্ন ভাবে এই কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করলে প্রকৃত জমি-মালিকরা জমি-দালালদের খপ্পর থেকে রেহাই পাবেন বলে তাঁরা মনে করেন। ভুক্তভোগীরা বলেন, কাছাড়ের জেলাশাসক অতি সম্প্রতি এক সংগে ১৪ জন পাটোয়ারিকে বদলির যে নির্দেশ দিয়েছেন, সেটা অত্যন্ত শক্তিশালী পদক্ষেপ। জেলাশাসকের এই পদক্ষেপের ফলে সিন্ডিকেটের কাছে নিশ্চিতভাবেই একটা বার্তা গিয়েছে। তাঁদের মতে, জেলাশাসক নিশ্চয়ই নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে এই ব্যবস্থা নিয়েছেন। অবশ্য তাঁরা এ-ও উল্লেখ করেন, অনেক গুরুতর অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও রংপুর এলাকার দায়িত্বে থাকা ভট্টাচার্য পদবির পাটোয়ারি যথারীতি বহাল তবিয়তে থেকে গিয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে শীঘ্রই কড়া ব্যবস্থা গ্রহণের আর্জি জানিয়েছেন তাঁরা। দালালরা সেটেলমেন্টের কতিপয় কর্মী ও অন্যান্য দায়িত্বশীল আধিকারিকদের মদত না পেলে জমি নিয়ে এতটা নৈরাজ্য তৈরি হতো না। উচ্চপর্যায়ে তদন্তের জন্য জেলাশাসকের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তাঁরা।
এ দিন তাঁরা অভিযোগ করেন, জমি দালালদের বৃহৎ সিন্ডিকেটের কবলে রংপুর এলাকার প্রায় কুড়িজন জমি মালিক অশান্তিতে দিন কাটাচ্ছেন। ভুক্তভোগী রয়েছেন আরও অসংখ্য। জমির দালালরা মিথ্যা নাম ঢুকিয়ে হেনস্থা করার বিরাট চক্রান্তজাল তৈরি করেছে। বছরের পর বছর ধরে এ রকমই চলছে। এই অন্যায় কাজে জড়িত জমির দালালদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে জেলাশাসকের হস্তক্ষেপ চাইছেন তাঁরা। কিছু জমি দালালের নামও তাঁরা জেলাশাসকের কাছে দিয়েছেন বলেও জানিয়েছেন। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রংপুর পুলিশ পেট্রোল পোস্টে কয়েক জনের নামে একটি মামলাও দায়ের করেছিলেন হানিফ আহমেদ বড়ভূইয়ারা। মধুরবন্দের ওয়াটার ওয়ার্কস রোডের মতো জঘন্য ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে, এ জন্য অবিলম্বে জমি-দালালদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য জেলাশাসকের কাছে বিনীত অনুরোধ জানিয়েছেন রংপুরের বাসিন্দারা।