অনলাইন ডেস্ক : স্বর্ণ যুগ অতীত। ভারতীয় হকিতে এখন অলিম্পিক্স ব্রোঞ্জের স্পর্শ। তাতে কি বিশ্বকাপ জয় সম্ভব? হরমনপ্রীত সিংহরা আত্মবিশ্বাসী। ভারতীয় হকি দলের আত্মবিশ্বাসের অন্যতম কারণ যদি ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ হয়, তা হলে অন্য কারণ দলের সাম্প্রতিক ছন্দ।
কয়েক দিন আগেই অস্ট্রেলিয়ার মতো শক্তিশালী দলকে তাদের ঘরের মাঠে হারিয়েছে ভারতীয় হকি দল। টোকিয়ো অলিম্পিক্সে পদক জয়ের পর থেকেই আত্মবিশ্বাসী মনপ্রীত সিংহ, অমিত রুইদাস, পিআর শ্রীজেশরা। অলিম্পিক্স হকিতে ভারত সফলতম দল হলেও বিশ্বকাপে তা নয়। ১৫ বার বিশ্বকাপ খেলে মাত্র এক বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ভারত। ১৯৭৫ সালের সোনাই বিশ্বকাপ হকিতে ভারতের শেষ পদক। ১৯৭১ সালে ব্রোঞ্জ এবং ১৯৭৩ সালে রুপো জিতেছিল ভারত। টোকিয়োর আগে অলিম্পিক্সে শেষ পদক এসেছিল ১৯৭২ সালে। তাই এ বার বিশ্বকাপের পদক নিয়েও আশাবাদী ভারতীয় দলের সদস্যরা।শুক্রবার বিশ্বকাপে ভারতের প্রথম প্রতিপক্ষ স্পেন। শক্তিশালী দল হলেও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ভারতের মতো ঝকঝকে সাফল্য নেই স্পেনের। ২০০৮ সালে রুপোর পর অলিম্পিক্সে পদক জেতেনি স্পেন। অলিম্পিক্স সোনা নেই তাদের ঝুলিতে। বিশ্বকাপে শেষ পদক ২০০৬ সালে ব্রোঞ্জ। কখনও বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়নি স্প্যানিশরা। ২০১৮ সালে বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নেওয়ার পর এ বারই প্রথম যোগ্যতা অর্জন করেছে তারা।শুক্রবার স্পেনকে হারিয়ে বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী ভারতীয় দল।
১৯৭৮ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত হকি বিশ্বকাপে গ্রুপের বাধা টপকাতে পারেনি ভারত। অথচ সেই দলই ৪৮ বছর পর এ বার পদক জয়ের আশা করছে। কিছু দিন আগেই বিশ্বের এক নম্বর দল অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক রাবার খেলেছে ভারত। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ১-৪ ফলে রাবার হারলেও, প্রতিটি ম্যাচেই হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছে। বিশ্ব ক্রমপর্যায়ে ভারত এখন ছ’নম্বরে। গ্রাহাম রিডে প্রশিক্ষণে গত তিন বছরে অনেক উন্নতি হয়েছে ভারতীয় দলের পারফরম্যান্সে। প্রতি আক্রমণ নির্ভর হকি ছেড়ে আগ্রাসী হকি খেলতে শুরু করেছে ভারত। তাতেই বদলে গিয়েছে দলের চেহারা। গত বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে নেদারল্যান্ডসের কাছে হেরে বিদায় নিয়েছিল ভারত। যদিও টোকিয়োর সাফল্যের পর ২০২১-২২ মরসুমে হকি প্রো লিগে তৃতীয় হয়েছেন হরমনপ্রীতরা। ২০১৯ সালে দায়িত্ব নেওয়ার পর রিড বলেছিলেন, ভারতীয় দলে প্রতিভার অভাব নেই। অভাব আত্মবিশ্বাস এবং সাহসের। আগ্রাসী হকি খেলতে পারলে এই দলের চেহারাই বদলে যাবে। অভিজ্ঞ এবং তরুণ খেলোয়াড়দের নিয়ে দল গড়েছেন। দলে অল্প কিছু ট্যাকটিক্যাল পরিবর্তন করেছেন। তাতেই বদলে গিয়েছে ভারতীয় হকি দলের চেহারা।দলের ছন্দ বিশ্বকাপের আগে আত্মবিশ্বাসী করছে রিডকেও। তিনি বলেছেন, ‘‘অনুশীলনে আমরা বিভিন্ন ম্যাচ পরিস্থিতির অভ্যাস করেছি। ধরুন আমরা ০-১ গোলে পিছিয়ে রয়েছি বা এক জন কম নিয়ে খেলছি বা প্রতিপক্ষ গোলরক্ষককে বাইরে রেখে খেলছে— সম্ভাব্য এমন সব পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে অনুশীলন করেছি আমরা।’’ পেনাল্টি কর্নার এবং পেনাল্টি শটের জন্যও আলাদা অনুশীলন করিয়েছেন দলকে। দলগত শক্তির বিচারে বিশ্বের সেরা তিন দলের তুলনায় খুব একটা পিছিয়ে নেই ভারত। প্রতিটি পজিশনেই বিশ্বমানের খেলোয়াড়রা রয়েছেন ভারতীয় দলে।