অনলাইন ডেস্ক : উত্তর-পূর্বের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউএসটিএম-এ শ্রীমন্ত শঙ্করদেবের চেয়ার স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে। সমাজ সংস্কারক শঙ্করদেবের প্রচার ও চর্চার জন্য রাজ্য সরকারের প্রচেষ্টাকে অনুকরণ করার উদ্যোগ নিয়েছে।
মেঘালয়ের ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির প্রতিষ্ঠাতা চ্যান্সেলর মাহবুবুল হক জানিয়েছেন, নব্য-বৈষ্ণবদের সংরক্ষণ ও প্রচারের জন্য অসমের ১৫-১৬ শতকের সমাজ-ধর্মীয় সংস্কারক শ্রীমন্ত শঙ্করদেবের নামে চেয়ার স্থাপন করতে চলেছেন। সেখানে দর্শন ও সংস্কৃতি নিয়ে আলোচনা হবে।
অসম সরকার বিশ্বভারতী, বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়, দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়, জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় ও হায়দরাবাদ বিশ্ববিদ্যালচের নামে চেয়ার স্থাপনের পরিকল্পনা নিয়েছে। শঙ্করদেব ছিলেন ১৫-১৬ শতকের অসমীয়া পণ্ডিত, কবি, নাট্যকার, অভিনেতা, সঙ্গীতজ্ঞ, শিল্পী ও সমাজ-ধর্ম সংস্কারক। তাঁর দর্শন ও সংস্কৃতির প্রসারের জন্য এই উদ্যোগ নিয়েছেন বলে জানান মাহবুবুল হক।
দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় সম্প্রতি শ্রীমন্ত শঙ্করদেব চেয়ার স্থাপন করার পরে, গুয়াহাটির উপকণ্ঠে ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি মেঘালয় (ইউএসটিএম) এই চর্চাকে উৎসাহিত করার জন্য তার ক্যাম্পাসে অনুরূপ চেয়ার স্থাপন করতে উদ্যোগী হয়েছে।
মাহবুবুল হকের উদ্যোগকে মাজুলি উত্তর কমলাবাড়ি সাত্রের সত্রাধিকার জনার্দন দেব গোস্বামী সমর্থন জানিয়েছেন। তিনি সম্প্রতি ইউএসটিএম পরিদর্শন করেছেন। হকের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। সেখানে দেব গোস্বামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, উত্তর কমলাবাড়ি সত্র ইউএসটি-এর সঙ্গে সত্রীয় সংস্কৃতি নিয়ে গবেষণার জন্য সহযোগিতা করবে। যারজন্য ইতিমধ্যেই দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আলোচনা হয়েছে।
শ্রীমন্ত শঙ্করদেব ও তার নব্য বৈষ্ণব আন্দোলন সম্পর্কে দেব গোস্বামী বলেন, অসমের মানুষ এই সাধক সংস্কারকের দর্শন ও ধর্ম নীতি সম্পর্কে ভালভাবে অবগত। অতএব, সর্বজনীন ভ্রাতৃত্বের নীতির উপর ভিত্তি করে শঙ্করদেবের ভক্তিমূলক আন্দোলন ছড়িয়ে দেওয়া প্রয়োজন। তিনি বলেন, নব্য বৈষ্ণব ধর্মের দর্শন ও সাহিত্যের সর্বজনীন গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। তিনি আরও বলেন, জুম্বা নৃত্যের আবির্ভাবের অনেক আগেই শ্রীমন্ত শঙ্করদেব একটি নৃত্য প্রবর্তন করেছিলেন। “যদি কেউ মাটি আখোরা (একটি নাচের ফর্ম) অনুশীলন করে তবে ফিটনেসের জন্য জিমে যাওয়ার দরকার নেই। এগুলো আমাদের প্রচার করতে হবে এবং এগুলোর জন্য গবেষণা ও প্রচার প্রয়োজন। আজ আমরা জলবায়ু পরিবর্তন এবং বৃক্ষরোপণ নিয়ে কথা বলি, কিন্তু শ্রীমন্ত শঙ্করদেব ৬০০ বছর আগে গাছপালা এবং পরিবেশের দিকে মনোনিবেশ করেছিলেন, যখন তিনি বলেছিলেন যে একটি গাছের মূল্য ১০ সন্তানের সমান।
চ্যান্সেলর মাহবুবুল হক বলেন, ইউএসটিএম ইতিমধ্যেই মাজুলিতে সত্রীয় সংস্কৃতি নিয়ে গবেষণা শুরু করেছে। সত্রাধিকার, মাজুলির অন্যান্য প্রতিনিধি ও ইউএসিএর মধ্যে এ নিয়ে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল, যেখানে তারা কোর্সের রূপরেখা নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি আরও বলেন, শ্রীমন্ত শঙ্করদেব ও মাধবদেরেব দর্শন প্রসার ও চর্চার জন্য তাদের বিশ্ববিদযালয়ে একটি শ্রীমন্ত শঙ্করদেবের চেয়ার স্থাপন করা হচ্ছে। দ্রুত এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।