অনলাইন ডেস্ক : ফের নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁসের অভিযোগ উঠল মোদি সরকারের বিরুদ্ধে। সৌজন্যে কোভিড ভ্যাকসিনের পোর্টাল ‘কো-উইন’। শুধু সাধারণ মানুষ নয়, প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা কংগ্রেস এমপি পি চিদাম্বরম, তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন, কংগ্রেসের রাজ্যসভার মুখ্যসচেতক জয়রাম রমেশ, শিবসেনা (উদ্ধব গোষ্ঠী)-র সঞ্জয় রাউত, এমনকী কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণ, তাঁর স্ত্রী বিজেপির উত্তরাখণ্ডের বিধায়ক রিতু খাণ্ডুরি ভূষণের মতো ভিভিআইপিদের আধার থেকে ফোন নম্বর, ঠিকানা, জন্মতারিখ ইত্যাদি যাবতীয় ফাঁস হয়ে হয়ে গিয়েছে বলেই উঠল অভিযোগ। টেলিগ্রাম মেসেজিং অ্যাপের একটি ‘বট’ (রোবট) অ্যাকাউন্ট সেগুলি প্রকাশ্যে এনেছে। ‘কো-উইন’ থেকেই এই তথ্য ‘লিক’ হচ্ছে বলে সোমবার সকাল থেকে সোচ্চার বিরোধীরা। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে মোদি সরকার। তথ্যের নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করা ‘সাউথ এশিয়া ইনডেক্স’ নামে একটি নিউজ পোর্টাল এদিন প্রথম বিষয়টি প্রকাশ্যে আনে। টুইট করে তারা অভিযোগ করে, ‘টেলিগ্রাম’ নামের সোশ্যাল মিডিয়ায় কোভিডের টিকা গ্রহীতাদের যাবতীয় ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস হয়ে গিয়েছে। কে কোথা থেকে টিকা নিয়েছেন, তাঁর জন্মতারিখ, পরিবারের সদস্যের নাম, মোবাইল নম্বর, আধার, পাসপোর্ট বা ভোটার কার্ড নম্বর—সবই রয়েছে সেই তালিকায়। এরপরই ‘কো-উইন’ থেকে ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে সুর চড়ায় তৃণমূল। দলের মুখপাত্র সাকেত গোখলে একের পর এক স্ক্রিনশট টুইট করে দেখান, তৃণমূলের সুস্মিতা দেব, কংগ্রেসের অভিষেক মনু সিংভি, রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান হরিবংশ নারায়ণ সিং সহ আরও বহু লোকের ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস হয়ে গিয়েছে। সরকারের কাছে জবাবদিহিও চান তিনি।
একইভাবে কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র জয়রাম রমেশ বলেন, ‘বিষয়টি খুবই চিন্তার বিষয়। এব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য সামনে রেখে শীঘ্র সরকারকে চেপে ধরব। তবে ফাঁস হওয়া তথ্য দেখে তো আমার মনেই প্রশ্ন উঠেছে, আধারের স্রষ্টা রামসেবক শর্মা কেন নিজের আধার নম্বরের বদলে পাসপোর্ট দেখিয়ে টিকা নিয়েছেন? এ তো রহস্য!’ অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পরেই সরকারের অন্দরেও শুরু হয়ে যায় খোঁজখবর। সত্যি কী হয়েছে, জানতে ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড টেকনোলজি মন্ত্রকের সঙ্গে বৈঠক করে স্বাস্থ্যমন্ত্রক। এবং তারপর দুপুরেই এক বিবৃতিতে তারা সাফ জানায়, ‘কো-উইন’ নিরাপদ। তবে কেন এমন অভিযোগ, তা খতিয়ে দেখে কেন্দ্রের ‘ইন্ডিয়ান কম্পিউটার ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিম’কে দ্রুত রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। ফলে প্রশ্ন ওঠে, মোদি সরকার যদি কো-উইনের নিরাপত্তা নিয়ে এতই নিশ্চিত, তাহলে তদন্তেরই বা কীসের প্রয়োজন? কিন্তু বিকেলে কেন্দ্রীয় তথ্য-প্রযুক্তি রাষ্ট্রমন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখর টুইটারে লেখেন, ‘রেসপন্স টিম বিষয়টি দ্রুত পর্যালোচনা করে জানিয়েছে, একটি টেলিগ্রাম বট মূলত ফোন নম্বরের ভিত্তিতে কো-উইন অ্যাপের তথ্য প্রকাশ করেছে। ওই তথ্যগুলি অন্য কোনও ডেটাবেস থেকে নেওয়া হয়েছে। সেগুলি অতীতে চুরি করা হয়েছিল। কো-উইন অ্যাপ বা ডেটাবেস সরাসরি তথ্য ফাঁস হয়নি।’ মন্ত্রকের দাবি, কোউইন পোর্টাল পাঁচটি নিরাপত্তার বেড়া দিয়ে ঘেরা রয়েছে। ওটিপি (ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড) ছাড়া সেটা খোলাই যায় না।