সাময়িক প্রসঙ্গ অনলাইন ডেস্ক
শিলচর : দেশের অন্যান্য অংশের সঙ্গে সোমবার কাছাড় জেলায় দেশের ৭৬ তম স্বাধীনতা দিবস পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে শিলচরের পুলিশ প্যারেড গ্রাউন্ডে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। ৭৬তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে কাছাড় জেলার কেন্দ্রীয় অনুষ্ঠানে পুলিশ প্যারেড গ্রাউন্ডে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন পরিবহণ, আবগারি ও মৎস্যমন্ত্রী পরিমল শুক্লবৈদ্য।
মন্ত্রী শুক্লবৈদ্য বলেন, শিক্ষার ক্ষেত্রে, আসাম সরকার নতুন স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করেছে। চা বাগান এলাকায় শিক্ষার উপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও, মসৃণ যোগাযোগ ব্যবস্থার জন্য রাস্তা ও সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। প্রকল্প মিশন অমৃতের অধীনে, প্রতিটি জেলায় ৭৫টি অমৃত সরোবর খননের পদক্ষেপ নেওয়া হয়। রাজ্য সরকার ২০১৬ থেকে ২০২১-২২ পর্যন্ত ২০৮৪০৭০টি বাড়ি তৈরি করতেও সাহায্য করেছে। মোট ২৩.৮৩ লক্ষ বার্ধক্য পেনশন, দিব্যাঙ্গ পেনশন এবং বিধবা পেনশন সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসাবে বিতরণ করা হয়েছে। ১ মার্চ ২০২২ পর্যন্ত, ২৩৯৪৫০৩৪ জন ব্যক্তিকে খাদ্য নিরাপত্তা আইন-এর অধীনে বিনামূল্যে চাল দেওয়া হয়। কৃষকদের কল্যাণের জন্য বিশেষ বিধানও প্রয়োগ করা হয়।
২০২১ সালে আসাম এবং মিজোরামের মধ্যে আন্তঃরাষ্ট্রীয় সংঘর্ষের কথা উল্লেখ করে পরিমল শুক্লবৈদ্য বলেন, দুই রাজ্যের মধ্যে সম্পর্ক সহজ করার চেষ্টা করা হছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে এবং সীমান্ত সমস্যা সমাধানে তাদের মধ্যে ধারাবাহিক আলোচনা হয়েছে। আসাম আন্দোলনের সময় আহতদের জন্য মাথাপিছু ২ লক্ষ টাকা মঞ্জুর করা হয়। দীর্ঘদিন ধরে রাজ্যে বসবাসকারী অসমিয়া মুসলমানদের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, রাজ্য সরকার তাদের সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য ব্যবস্থা নিয়েছে।
পরিবহণ দফতরে সংস্কারের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, সরকার প্রায় ৪০টি অনলাইন পরিষেবা চালু করেছে যার ভিত্তিতে লোকেরা ব্যক্তিগতভাবে ডিটিও অফিসে যাওয়ার পরিবর্তে বাড়িতে বসে সেগুলি উপভোগ করতে পারেন। তিনি মৎস্য ও কৃষি খাতে সরকারের ইতিবাচক পদক্ষেপের কথাও তুলে ধরেন। ২০২১-২২ সালে আবগারি বিভাগ দ্বারা ১৯৩০.৬৭ কোটি টাকা আবগারি শুল্ক আদায় করা হয়। একই সময়ে ২৬৯৭০৮৬ লিটার অবৈধ এবং নকল মদ আটক করা হয় এবং ৩৩৫৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। স্বাস্থ্য খাতে রাজ্যে ৭টি নতুন মেডিকেল কলেজের কাজ পুরোদমে চলছে। ২০২২ সালে ৪১৫১৪৮৯ জন ছাত্রকে বিনামূল্যে পাঠ্য বই দেওয়া হয়েছিল। এছাড়াও অমৃতের অধীনে রাজ্যে ১৫টি প্রকল্পের কাজ চলছে। জল জীবন মিশনের অধীনে রাজ্যে ২৩৩০২৯৬টি বাড়িতে পানীয়জলের সংযোগ দেওয়া হয়েছে।
কাছাড়ের বিধ্বংসী সাম্প্রতিক বন্যার বিষয়ে মন্ত্রী শুক্লবৈদ্য বলেন, মোট ২৬৪২২টি পাকা বাড়ি এবং ৫৪৩৭৪টি কাঁচা ঘর আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই বন্যার্তরা শীঘ্রই সরকারের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ পাবেন। প্রধান ডাইকগুলি সাময়িকভাবে মেরামত করা হয়েছে। বন্যার সময় মানুষের সাহায্যে এগিয়ে আসা সকল ব্যক্তি, এনজিওকে ধন্যবাদ জানান মন্ত্রী। তিনি বন্যার সময় জনগণের সেবার জন্য তাদের দায়িত্ব পালনকারী সরকারি কর্মকর্তাদেরও ধন্যবাদ জানান। এখন পর্যন্ত, কাছাড় জেলায় ১৭১৯৪৪৫ জন লোক আধারের জন্য নথিভুক্ত হয়েছেন। আরও ৯৪০৯১৯ জন সুবিধাভোগী রেশন কার্ডের সঙ্গে আধার লিঙ্ক করেছেন। আবার কাছাড়ের ১৫৩৪১২ জন ব্যক্তিকে আয়ুষ্মান ভারত PMJAY কার্ড প্রদান করা হয়েছে। এগুলি ছাড়াও বিভিন্ন কাঠামোতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, রাস্তাঘাট নির্মাণের ক্ষেত্রে উন্নয়ন কাজ চলছে বলে জানান মন্ত্রী। এছাড়া ও তিনি নুরুদ্দিন ট্রফি জয়ের জন্য জেলা ক্রিকেট দলকে অভিনন্দন জানান।