অনলাইন ডেস্ক : ছাত্রছাত্রীদের দাবি মেনে বেশ কিছু পরীক্ষা পিছিয়ে দিল আসাম বিশ্ববিদ্যালয়। নতুন কোনও তারিখ না জানালেও পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে পিজি, ইউজি এবং আইজি পরীক্ষা। বিভিন্ন দাবি নিয়ে সোমবার আন্দোলনে বসেছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। ২৮ মার্চের পরীক্ষা পিছিয়ে নেওয়া সহ ও বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে অনেক দিন থেকে ছাত্র-ছাত্রী ও আসাম বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষের সঙ্গে বিবাদ চলছিল। সোমবার বিভিন্ন দাবিতে আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটের সামনে জড়ো হয়ে আন্দোলন করে তারা। যার পরিপ্রেক্ষিতে স্তব্দ হয়ে যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজকর্ম । বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে কাউকে প্রবেশ করতে দেয়নি বিক্ষোভকারীরা। সকাল ৯ ঘটিকা থেকে আন্দোলন শুরু হয় চলে বিকেল তিনটা পর্যন্ত। আন্দোলন চলাকালীন সময়ে ছাত্র-ছাত্রীদের পক্ষে আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লো বিভাগের ছাত্র পল্লব দে, ছাত্র নেতা অর্নব গোস্বামী, কবীর মানা চৌধুরী, রাজশ্রী মহন্ত সহ কয়েকজন ছাত্র আসাম বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষের সঙ্গে নিজের দাবি নিয়ে বৈঠকে উপস্থিত হয়। কতৃপক্ষের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথাবার্তা হয়। কতৃপক্ষ সমস্ত দাবি মেয়ে নেয় বলে জানালেন আন্দোলনকারী ছাত্র-ছাত্রীরা। আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লো বিভাগের ছাত্র পল্লব দে, ছাত্রনেতা অর্নব গোস্বামী, কবীর মানা চৌধুরী, রাজশ্রী মহন্তরা জানান, তাদের চারটি দাবি ছিল, প্রথম দাবি ছিল আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আগামী ২৮ মার্চ থেকে পিজি-ইউজি ইত্যাদি পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়া, কারণ এই পরীক্ষা প্রত্যেক বছর এপ্রিল মাসের ২৫ তারিখের পরে শুরু হত। কিন্তু এবছর আসাম বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ নোটিফিকেশন জারি করেছে যে আগামী ২৮ মার্চ থেকেই পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। নোটিফিকেশন জানার পর থেকেই ছাত্র-ছাত্রীরা পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়ার জন্য দাবি করছিল, কিন্তু কতৃপক্ষ ২৮ মার্চ থেকেই পরীক্ষা নিতে অনড় ছিল। দ্বিতীয় দাবি ছিল আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ে জলের অভাব রয়েছে, সেটি অতিশীঘ্রই পুরণ করা। তৃতীয় দাবি ছিল আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বাসের সংখ্যা পর্যাপ্ত নয়, ছাত্র-ছাত্রীদের অনেক কষ্টে আসা-যাওয়া করতে হচ্ছে। পল্লব দে জানান, কতৃপক্ষকে আমরা বলেছি যে ২৮ মার্চ পরীক্ষার জন্য যে নোটিফিকেশন জারি করা হয়েছে তারজন্য ছাত্রছাত্রীরা মোটেই প্রস্তুত নয়। তখন কতৃপক্ষ জানায় সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটিস এনট্রেন্স টেস্ট (সিইউইটি) চালু করতে হবে। সিইউটি আনতে হলে পরীক্ষা এগিয়ে শেষ করতে হবে। তখন প্রতিনিধিরা কতৃপক্ষকে বলে যে, ঠিক আছে ইউজি, আইজি জন্য সিইউইটি এপ্লিকেবল হয়েছে কিন্তু পিজির ক্ষেত্রে সিইউইটি লাগু করা ঠিক না। কারণ আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত বরাক উপত্যকায় অনেক কলেজ রয়েছে তখন সিইউইটি হওয়ার কোথায় যাবে। প্রথমে সিইউইটি কি এ সম্বন্ধে বরাক উপত্যকার ছাত্র ছাত্রীদের মধ্যে সচেতনতা করতে হবে এরপর কিছু হতে পারে। ইউজিসির নিয়ম মতে ৯০ দিনে যেন ক্লাস নেওয়া হয়, এক্ষেত্রে আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ৭৮ দিন ক্লাস হয়েছে । অনেক আলাপ আলোচনার পর আসাম বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ পরীক্ষার তারিখ পিছিয়ে দেওয়াতে রাজি হয়। বাসের সংখ্যা বাড়াতেও কতৃপক্ষ রাজি হয়েছে, কতৃপক্ষ জানিয়েছে যে ওরা এনিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে কথা বলবেন, জলের সমস্যা এক সপ্তাহের ভিতরে মিটিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে বলে জানালেন আন্দোলনকারী ছাত্র-ছাত্রীরা।