অনলাইন ডেস্ক : বর্ষার শুরুতেই প্রকৃতির তাণ্ডবে গোটা বরাক উপত্যকা সড়ক এবং রেলপথে প্রায় বিচ্ছিন্ন। এবার আবহাওয়া দপ্তরের তরফে জানানো হয়েছে আগামী এক সপ্তাহ অর্থাৎ ১১ মে পর্যন্ত অসম সহ গোটা উত্তর পূর্বের প্রতিটি রাজ্যে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। প্রতিদিন ৭৫ থেকে ১০০ শতাংশ বৃষ্টিপাত হতে পারে বলে জানিয়েছে বিভাগ। অসমের ডিমা হাসাও, ডিব্রুগড় সহ বেশ কয়েকটি জেলা ইতিমধ্যে জনগণের উদ্দেশ্যে সতর্কবার্তা জারি করেছে। বিভাগের তরফে বলা হয়েছে, সোমবার অসম এবং মেঘালয়ে ৭৬ থেকে ১০০ শতাংশ বৃষ্টিপাত হবে, মঙ্গলবার কিছুটা কমে আসবে বৃষ্টিপাতের মাত্রা, এদিন ৫০ থেকে ৭৫ শতাংশ বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। বুধবার বৃষ্টিপাত কিছুটা কম হলেও বৃহস্পতিবার ফের ৫০ থেকে ৭৫ শতাংশ বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। ১১ মে পর্যন্ত অসমের প্রায় প্রতিটি জেলায় বৃষ্টিপাত হবে। এর মধ্যে কাছাড়, ডিমা হাসাও, গোয়ালপাড়া, হাইলাকান্দি, কামরূপ, করিমগঞ্জ ইত্যাদি জেলায় অতিরিক্ত সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে। রাজ্য সরকারের দুর্যোগ মোকাবেলা বিভাগ জানিয়েছে রাজ্যে এখনও কোনও নদীর জল বিপদসীমার উপরে উঠে না এলেও জল দ্রুত বাড়ছে। টানা বৃষ্টিপাতের ফলে আগামীতে বেশ কিছু নতুন এলাকা প্লাবিত হতে পারে। তারা জানিয়েছেন, সরকারের বিভিন্ন বিভাগ ইতিমধ্যে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের প্রস্তুতি নিচ্ছে। বিভিন্ন সুরক্ষা বাহিনীকে তৈরি রাখা হয়েছে। কিছু কিছু জেলায় ত্রাণকেন্দ্র গড়ে তোলার জন্য জায়গা চিহ্নিত করা হয়েছে। তারা বলেন, ‘যদিও পরিস্থিতি এখনও নিয়ন্ত্রণের বাইরে যায়নি তবে যে পরিমাণে বৃষ্টিপাত করছে সেটা চিন্তার বিষয়। আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে আপাতত এক সপ্তাহ টানা বৃষ্টি হতে পারে, পরবর্তীতে আরও বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বেশি হলে হঠাৎ একসঙ্গে জল নেমে আসবে এবং সেটা বন্যা পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে। ফলে রাজ্যের কিছু কিছু এলাকায় সাধারণ মানুষকে বলা হয়েছে তারা যেন নিজেদের সুরক্ষিত রাখেন। বিশেষ প্রয়োজন না হলে কেউ যেন দূরপাল্লার যাত্রা না করেন।’ ২০২২ সালে মে মাসের প্রথম দিকে এভাবেই বৃষ্টি হয়েছিল এবং পরবর্তীতে পরপর দুবার বন্যা পরিস্থিতি দেখা দেয়। ওই বছরের বন্যায় রাজ্যের ৯০ লক্ষের বেশি লোক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন, প্রায় ২০০ ব্যক্তি প্রাণ হারান। এবারও বৃষ্টিপাতের তুলনামূলকভাবে বেশি, ফলে এখনই অনেকে বন্যার পদধ্বনি শুনতে পাচ্ছেন। তবে প্রশাসনের তরফে বলা হয়েছে অযথা আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। কাছাড়ের জেলাশাসক রোহন কুমার ঝা জানিয়েছেন, সড়ক এবং রেলপথ আংশিকভাবে বন্ধ থাকলেও এতে খাদ্যের মজুদের ওপর প্রভাব পড়বে না।