অনলাইন ডেস্ক : ঘটনা নিয়ে শুরু থেকেই সন্দেহতুর ছিল পুলিশ। তবে তদন্ত প্রক্রিয়া এগুনোর সঙ্গে সঙ্গে, পুলিশ নিশ্চিত হয়ে গেছে হেলি বেগম বড়ভূঁইয়া (২১) ও তার ১৩ মাস বয়সী শিশুকন্যা জন্নত বেগমকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।
গত মঙ্গলবার বড়খলার রায়পুরে বাঁধ তথা রাস্তা থেকে বরাক নদীতে গড়িয়ে পড়ে একটি অল্টো কার। পরদিন নদীর জলে ডুবে যাওয়া গাড়ি উদ্ধার করা হলে ভেতরে পাওয়া যায় আরোহী হেলি বেগম বড়ভূঁইয়া ও শিশুকন্যা জন্নত বেগমের মৃতদেহ। হেলি বেগমরা ছিলেন ঘটনাস্থল রায়পুর থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরবর্তী বুড়িবাইল তৃতীয় খন্ডের বাসিন্দা। ঘটনার সময় গাড়ি চালাচ্ছিলেন হেলি বেগমের স্বামী রইস উদ্দিন বড়ভূঁইয়া (২৮)। গাড়ি বাঁধ থেকে নদীতে গড়িয়ে পড়লেও অক্ষত অবস্থায় রক্ষা পেয়ে যান রইস উদ্দিন। সেসময় তিনি বয়ান দেন, বাধ তথা রাস্তা দিয়ে গাড়ি চালিয়ে যাবার পথে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। এতে গাড়ি গড়িয়ে পড়ে নিচে নদীতে। তিনি কোনওক্রমে গাড়ির কাঁচ ভেঙ্গে বেরিয়ে আসতে সক্ষম হলেও পত্নী হেলি বেগম এবং শিশু কন্যা জন্নত বেগমকে বের করে আনতে পারেননি।
রইস উদ্দিন এভাবে বয়ান দিলেও শুরু থেকেই পুলিশের কাছে তার কথাবার্তায় কিছু অসংলগ্নতা ধরা পড়ে। তদন্ত প্রক্রিয়া কিছুটা এগুনোর পর শুক্রবার পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। এরপর শনিবার পেশ করা হয় আদালতে।
পুলিশ সুপার নূমল মাহাতো জানিয়েছেন, রইস উদ্দিনকে শুরু থেকেই সন্দেহ করা হচ্ছিল । রইস উদ্দিন যে কিছু “ফাউল প্লে” করেছে তা আঁচ পাওয়া যাচ্ছিল।তদন্ত প্রক্রিয়া কিছুটা এগুনোর পর, বর্তমানে তারা নিশ্চিত যে পরিকল্পিতভাবে সে হত্যা করেছে হেলি বেগম ও জন্নতকে। তিনি আরও জানান, তদন্ত প্রক্রিয়ায় উঠে এসেছে অর্থকরী বিষয় নিয়ে রইস উদ্দিন ও হেলি বেগম এর মধ্যে মনোমালিন্য চলছিল।
এদিকে হেলি বেগমের বাবার বাড়ি বড়যাত্রাপুর এলাকার বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, রইস উদ্দিন ও হেলি বেগমের বিয়ে ছিল প্রেম বিবাহ। তবে এই বিয়েতে রাজি ছিলেন না হেলি বেগমের বাবার বাড়ির লোকেরা। পরবর্তীতে নানাভাবে চাপ সৃষ্টি করে রইস উদ্দিন তাদের বিয়েতে রাজি করায়। হেলির বাবার বাড়ির পক্ষ থেকে তার এক কাকা ঘটনা নিয়ে থানায় এজাহার দায়ের করেছেন বলে জানা গেছে।