অনলাইন ডেস্ক : পিডব্লিউডি এমপ্লোয়িজ অ্যাসোসিয়েশন, বরাক ভ্যালি জোন কোনও ভুঁইফোড় সংগঠন নয়। অসম পূর্ত যান্ত্রিক শ্রমিক সংস্থার সভাপতির অভিযোগের জবাবে এমনটাই দাবি করলেন পিডব্লিউডি এমপ্লোয়িজ অ্যাসোসিয়েশন বরাক ভ্যালি জোনের উপদেষ্টা পার্থসারথি দে। সংস্থার পক্ষে পিডব্লুডি অ্যাথলেটিক ক্লাব ভবনে এক সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে বৃহস্পতিবার তিনি তাঁর দাবির স্বপক্ষে বিভিন্ন তথ্য উপস্থাপন করেন। বলেন, দিন কয়েক আগে পূর্ত গেস্ট হাউসে সভা ডেকে পূর্ত যান্ত্রিক সংস্থার সভাপতি তাঁর বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ এনেছেন তা পুরোপুরি ভিত্তিহীন এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তিনি অভিযোগ করেছেন আদালতের নির্দেশ অবমাননা করে-ই চলছে পি ডব্লিউ ডি এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশন-র বরাক ভ্যালি জোন। অথচ দুই সংস্থার কোনটি বৈধ তা যাচাই এবং নিষ্পত্তি করার জন্য ২০১২ সালে বিভাগীয় চিফ ইঞ্জিনিয়ারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সে-সময় আদালত দুই সংস্থাকে মিলেমিশে কাজ করার নির্দেশও দেয়। কিন্তু পূর্ত যান্ত্রিক সংস্থাকে বারবার অনুরোধ করা সত্বেও তারা একজোট হয়ে কাজ করার ব্যাপারে এগিয়ে আসেনি। পরে এ ব্যপারে সরকারকে অবহিত করা হয়। শুধু এ-ই নয়, ২০১৭ সালে শুনানির সময় পূর্য যান্ত্রিক সংস্থার সভাপতি অনুপস্থিত থাকার কারণে সরকারের পক্ষ থেকে বিষয়টিকে ফের আদালতের কাছে সমঝে দেওয়া হয়। এখন পর্যন্ত সেই অবস্থাতেই আছে বিষয়টি। এসব কথা উল্লেখ করে পার্থবাবু প্রশ্ন তোলেন, কোন যুক্তির ভিত্তিতে পি ডব্লিউ ডি এম প্লিজ এসোসিয়েশন কিভাবে বেআইনি হয়ে গেল ! তিনি আরও বলেন, অবসর গ্রহণের পরও তাঁর বিরুদ্ধে সাধারণ সম্পাদক পদ আঁকড়ে থাকার অভিযোগ তোলা হয়েছে। পার্থ দে বলেন, তিনি ২০২৪ সালের ৩১ জানুয়ারি অবসর গ্রহণ করেছেন। ইউনিয়নের সংবিধান অনুযায়ী অবসর গ্রহণের পর ছয় মাস পদে থাকা যায়। তারপরও বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত অ্যাসোসিয়েশনের সভায় তিনি সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন। তাঁর স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন বাবু সিং। আর তিনি এখন ইউনিয়নের বরাক ভ্যালি জোন-র উপদেষ্টা হয়েছেন। এছাড়া আরও একটা অভিযোগ আনা হয়েছে পিডব্লিউ অ্যাথলেটিক্স ক্লাবকে নাকি তিনি (পার্থ দে) কুক্ষিগত করে রেখেছেন। এ সম্পর্কে পার্থ বলেন পিডব্লিউডি অ্যাটলেটিক্স ক্লাবের সঙ্গে সরাসরি পূর্ত বিভাগের কোনও আর্থিক সম্পর্ক নেই। অথচ অভিযোগ তোলা হয়েছে, অবসর গ্রহণের পরও তিনি কীভাবে ক্লাবকে কবজায় রাখছেন। তিনি বলেন, পিডব্লিউডি অ্যাটলেটিক ক্লাবের সংবিধানে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে যে, চাকরি থেকে অবসর নিলেও যে কোনও কর্মচারী তাঁর যতদিন ইচ্ছে ক্লাবের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারবেন। এখানে কব্জা করে রাখার প্রশ্নই অবান্তর। এ প্রসঙ্গে তাঁর যুক্তি, অবসর গ্রহণের পাঁচ বছর হওয়ার পরও অঞ্জন স্বামী এখনও এই ক্লাবের শীর্ষ পদে রয়েছেন। তাই এ ধরনের অভিযোগ ভিত্তিহীন। এদিন পার্থ দে পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, যান্ত্রিক সংস্থা সভাপতির চাকরির মেয়াদ আর মাত্র দেড় বছর। যেখানে সরকারের নির্দেশে রয়েছে চাকরির মেয়াদ ২ বছরের কম থাকলে কেউ কোনও পদে বসতে পারবেন না। নিজেই নিয়ম না মেনে সভাপতি হয়েছেন। অথচ সেই তিনিই দোষারোপ করছেন অন্যকে। প্রসঙ্গক্রমে তিনি জানান বৃহস্পতিবার বরাক ভ্যালি পিডব্লিউডি এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশন-র সভায় সরকারের কাছে কিছু দাবি জানানো হয়েছে। এগুলির মধ্যে আছে অস্থায়ী কর্মচারীদের চাকরি নিয়মিত করতে হবে। বিশেষ করে মাস্টাররোল কর্মীদের নিয়মিত করার ব্যাপারে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। পূর্ত বিভাগে যে স্বজনপোষণ নীতি চলছে কিছু কিছু ক্ষেত্রে সেটা বন্ধ করার দাবি জানানো হয়।মুখ্য সচিবের নির্দেশমতো একটা নির্দিষ্ট সময়ে কর্মচারীদের দক্ষতা বাড়াতে তিন বছর পর পর টেবিল বদলের যে নীতি রয়েছে সেটা কার্যকর করতে হবে। না হলে দেখা যায় এক একজন কর্মী দীর্ঘদিন একই পথে আছেন। আর বহু কর্মী আছেন তাদের কোন কাজই দেওয়া হবে।সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সাধারণ সম্পাদক বাবু সিং, অশোক তরু, শ্যামল সূত্রধর নৃপেন্দ্র রায় প্রমুখ। এসোসিয়েশনের কমিটিতে পার্থ দে ছাড়াও উপদেষ্টা হিসেবে আছেন কর্মচারী পরিষদের কাছাড় জেলা কমিটির প্রাক্তন দুই সাধারণ সম্পাদক সঞ্জিত দেবনাথ ও জ্যোতিরিন্দ্র দে।