অনলাইন ডেস্ক : পড়ন্ত বিকেল থেকে থানার সামনে এক অন্ত:সত্ত্বা মহিলা। স্বামীর নির্যাতনের শিকার হয়ে দ্বারস্থ হয়েছিলেন পুলিশের। কিন্তু কাটিগড়া পুলিশ গ্রহন করেনি তাঁর মামলা!
অন্যদিকে, সন্ধ্যার সময় দু’পক্ষের কথা কাটাকাটির জেরে হওয়া মামলায় পুলিশের বিরাট বাহিনী নিয়ে ছুটে গিয়ে থানায় নিয়ে আসে সত্তরোর্ধ এক ব্যক্তিকে ! এই দুই ঘটনাকে সামনে রেখে কাটিগড়ায় পুলিশের নিরপেক্ষতা এবং দায়বদ্ধতা নিয়ে দেখা দিয়েছে প্রশ্ন। ওঠেছে একাধিক অভিযোগও।
জানা গেছে, সুবোধনগর কলোনির বাসিন্ধা স্বপ্না দাস বৃহস্পতিবার বিকেলে পুলিশের সাহায্য নিতে থানায় আসেন। স্বপ্নাদেবীর অভিযোগ, তাঁর স্বামী মদ্যপান করে প্রতিনিয়ত মারধর করেন। বর্তমানে তিনি অন্ত:সত্ত্বা থাকলেও স্বামীর নির্যাতন থেকে রেহাই পাচ্ছেন না। তাই পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু কাটিগড়া পুলিশ তাঁর অভিযোগ গ্রহন করতে অস্বীকার করে। স্বপ্না দাস বলেন, ‘এখন কেউ নেই, পরে এসো’ বলে তাঁকে থানা থেকে বের করে দেওয়া হয়। নিরুপায় হয়ে প্রচন্ড গরমে অন্ত:সত্ত্বা স্বপ্নাকে থানার সামনের দোকানের বারান্দা, গাছের তলা, নদীর পার ইত্যাদি স্থানে অনেক রাত পর্যন্ত গড়াগড়ি করতে দেখেছেন স্থানীয় মানুষ।
অতচ, থানার লাগোয়া সাব রেজিস্ট্রার অফিসে সন্ধ্যার সময় দুই মুহুরির মধ্যে তর্কাতর্কির জেরে হওয়া মামলার আধ ঘন্টার ভেতর অভিযুক্তকে ধরতে ছুটে যায় বিশাল পুলিশ দল। হিবরুল ইসলাম নামের এক মুহুরির দায়ের করা মামলার প্রেক্ষিতে বছর সত্তরের আরেক মুহুরি ইলিয়াস আহমদকে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। এনিয়ে এলাকাজুড়ে বেশ বিরূপ প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যায়।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, টাকা মিলবে না দেখে অসহায় গর্ভবতী মহিলার মামলা নিতে অস্বীকার করে পুলিশ। অতচ, স্রেফ টাকার জোর থাকায় তর্কাতর্কির মামলায় সত্তোরোর্ধ ব্যক্তিকেও ধরে আনতে আধ ঘন্টা সময় নিলো না কাটিগড়া পুলিশ! যদিও ইলিয়াস আহমদকে থানায় আনার প্রতিবাদে দলে দলে লোক থানায় আসতে দেখা গেছে। জানা গেছে, ইলিয়াসের বিরুদ্ধে মামলাকারী মুহুরি হিবরুল কাটিগড়া থানার ওসি-র খুব ‘খাস’ লোক। ওসি-র সঙ্গে রোজ কয়েক দফা রুদ্ধদ্বার বৈঠক হয় হিবরুলের। কাটিগড়া সাব রেজিস্ট্রার অফিসের বিরুদ্ধে যতো দূর্ণীতির অভিযোগ রয়েছে, সবটিতেই প্রথম সারিতে নাম থাকা হিবরুল কাটিগড়া থানাকে তার কার পার্কিং স্থল হিসেবেও দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার করে আসছেন। প্রশ্ন ওঠেছে, একাধিক মামলায় অভিযুক্ত, সরকারি দায়ের করা মামলায় জেল ফেরত হিবরুলের সঙ্গে কাটিগড়া পুলিশের এতো হৃদ্যতা কেন? কী সেই ভিত্তি? গর্ভবতী মহিলা যেখানে ঠাঁই পায়নি, সেখানে কোন যাদুবলে হিবরুলের মামলা জেট গতি পেল? অবশ্য উত্থাপিত যাবতীয় অভিযোগ নিয়ে পুলিশের কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।