অনলাইন ডেস্ক : বিজেপি ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দিচ্ছেন সোনাইর প্রাক্তন বিধায়ক আমিনুল হক লস্কর। এনিয়ে কাছাড়ের রাজনৈতিক মহল বর্তমানে বেশ সরগম। এরমধ্যে এই ইস্যুতে এবার মুখ খুলল শিলচর জেলা কংগ্রেসের সংখ্যালঘু বিভাগ। সংখ্যালঘু বিভাগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, কংগ্রেসে যে কেউ আসতে পারেন। যিনিই আসবেন, তাকে দলে স্বাগত জানানো হবে। তবে আমিনুলের মতো কেউ দলে আসার পরই যদি তাকে নির্বাচনে টিকিট দেওয়া হয়, তবে সংখ্যালঘু বিভাগ তা মেনে নেওয়া নেবে না। প্রয়োজনে জেলা কংগ্রেসের গোটা সংখ্যালঘু বিভাগের কর্মকর্তারা একযোগে পদত্যাগ করবেন।
বৃহস্পতিবার জেলা কংগ্রেস কার্যালয়ে ইন্দিরা ভবনে দলের সংখ্যালঘু বিভাগের পক্ষ থেকে এক সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে এভাবে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা হয়। জেলা কংগ্রেসের সংখ্যালঘু বিভাগের চেয়ারম্যান আনসার হোসেন বড়লস্কর, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম লস্কর সহ অন্যান্যরা বলেন, আমিনুল হক লস্কর বিজেপি ছেড়ে কংগ্রেসে
যোগ দিচ্ছেন বলে তার শিবির থেকে বর্তমানে প্রচার চালানো হচ্ছে। দলীয় হাই কমান্ড আমিনুলকে দলে নিয়ে এলে সংখ্যালঘু বিভাগের কোনও আপত্তি নেই। তাকে স্বাগতই জানানো জানানো হবে। তবে একটা জায়গায় অবশ্যই আপত্তি রয়েছে। আমিনুলের পক্ষ থেকে বর্তমানে প্রচার চালানো হচ্ছে তিনি কংগ্রেসের যোগ দেওয়ার পর ২০২৬ -এর বিধানসভা নির্বাচনে দলীয় টিকিটে সোনাইয়ে নির্বাচন লড়বেন। এসব থেকে মনে হচ্ছে ডিলিমিটেশনের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে স্রেফ বিধায়ক হওয়ার জন্যই তিনি কংগ্রেসে আসতে চাইছেন। এই ব্যাপারটা মেনে নেওয়া যায় না। দলে যোগ দেওয়ার পর পরই যদি আমিনুলকে টিকিট দিয়ে দেওয়া হয়, তবে এতদিন ধরে যারা নানা ঝড়-ঝাপটা সহ্য করে কংগ্রেস করছেন তাদের আত্মত্যাগের কি মূল্য থাকবে।
আনসাররা আরও বলেন, গত বিধানসভা নির্বাচনে সোনাই বাসী আমিনুলকে পরাস্ত করেছেন। এরপর আমিনুলকে যদি কংগ্রেস নেতৃত্ব ২০২৬ এর নির্বাচনে সোনাইয়ে দলের টিকিট দিয়ে দেন, তবে তা হবে সোনাইবাসীর অপমান। সংখ্যালঘু বিভাগ তা কোনওভাবেই মেনে নিতে পারবে না। এরপর আরও বলেন, আমিনুল শিবির থেকে বর্তমানে প্রচার চালানো হচ্ছে যে শিলচর জেলা কংগ্রেস বিশেষত সোনাই কংগ্রেসে নাকি উপযুক্ত নেতৃত্বের অভাব। আমিনুলের পক্ষ থেকে বিশেষত কংগ্রেসের সংখ্যালঘু নেতৃত্ব নিয়ে নানাভাবে কটাক্ষ মূলক কথাবার্তা বলা হচ্ছে । এমন প্রচার চালিয়ে সাধারণ লোকেদের বোঝানোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে যে আমিনুল দলে যোগ দিয়ে দলকে নেতৃত্ব দেবেন। এমন প্রচার খুবই আপত্তিজনক। আমিনুল যদি ভেবে থাকেন, জেলা কংগ্রেসে উপযুক্ত নেতৃত্বের অভাব রয়েছে, তবে তিনি ভুল করছেন। অন্যান্যরা তো রয়েছেনই, জেলা কংগ্রেসের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় থেকেও রয়েছেন মিসবাহুল ইসলাম লস্কর, খলিল উদ্দিন মজুমদার, জালাল আহমদ মজুমদার সহ আরও অনেক বলিষ্ঠ নেতা। তাই আমিনুল যদি ভেবে থাকেন তিনি দলে যোগ দিয়েই নেতৃত্ব দেবেন তবে তার প্রয়োজন নেই। এছাড়া তাকে মনে রাখতে হবে তিনি বর্তমানে রয়েছেন আরএসএস প্রভাবিত বিজেপি দলে। তাই অসাম্প্রদায়িক দল কংগ্রেসের যোগ দেবার আগে তাকে তার চিন্তাধারা সম্পূর্ণ বদলাতে হবে।
এদিনের সাংবাদিক সম্মেলনে কংগ্রেস সংখ্যালঘু বিভাগের অন্যান্য কর্মকর্তাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আব্দুল কাদির লস্কর, মিনাজ মজুমদার, জহুর হোসেন চৌধুরী, কারশাদ আহমদ বড়ভূঁইয়া, মায়াজুল আলি, আব্দুল হোসেন লস্কর, সাবির আহমেদ চৌধুরী ও আসলাম আহমদ বড়ভূঁইয়া প্রমুখ।