অনলাইন ডেস্ক : বিশিষ্ট কবি, সাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক এবং ‘সাহিত্য’ পত্রিকার প্রধান সম্পাদক অধ্যাপক বিজিৎকুমার ভট্টাচার্যের জীবনাবসান ঘটেছে। বুধবার বেলা ১১-৪৫ মিনিটে কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে তিনি শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। তিনি রেখে গেছেন স্ত্রী বিশিষ্ট লেখিকা শিখা ভট্টাচার্য সহ ছেলে ময়ূখ ভট্টাচার্য, মেয়ে, জামাতা, পুত্রবধূ, নাতি, নাতিনী সহ অসংখ্য গুণমুগ্ধদের।
বিজিৎকুমার ভট্টাচার্য পেশায় হাইলাকান্দির এসএস কলেজের পদাৰ্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। তিনি নিরলস সাহিত্য চর্চার মধ্য দিয়ে সমাজে বিশেষ স্থান অধিকার করেন। তার প্রচেষ্টায় ‘সাহিত্য’ লিটিল ম্যাগাজিন দীর্ঘ সাড়ে পাঁচ দশক ধরে প্রকাশিত হয়ে চলেছে। বিজিৎকুমার ভট্টাচার্য নিজেকে শুধু সাহিত্য রচনায় আবদ্ধ রাখেননি। তিনি যৌবনে মহান মার্ক্সবাদী দার্শনিক শিবদাস ঘোষের চিন্তার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে বামপন্থী ভাবধারায় পরিচালিত গণ আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। উগ্র-প্রাদেশিকতাবাদী শক্তির কুচক্রান্তের বিরুদ্ধে সংগঠিত বিভিন্ন আন্দোলন সহ শিলচর-লামডিং ব্রডগজ রূপায়ণ সংগ্রাম কমিটি, এনআরসি তৈরির নামে জনগণের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া ইত্যাদি আন্দোলনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। এছাড়াও বরাক উপত্যকায় ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, রবীন্দ্রনাথ, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, ক্ষুদিরাম প্রমুখ মনীষীদের জন্ম-মৃত্যু শতবর্ষ সহ প্রতি বছর অনুষ্ঠিত নানা অনুষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তাঁর প্রয়াণে বরাক উপত্যকায় গভীর শোকের ছায়া নেমে আসে।
তাঁর প্রয়াণে গভীর শোক প্রকাশ করেছে এসইউসিআই (কমিউনিস্ট) দল। এদিন তাঁর মরদেহে দলের পলিটব্যুরো সদস্য ও বিশিষ্ট জননেতা কমরেড অসিত ভট্টাচার্য, দলের রাজ্য সম্পাদক কমরেড চন্দ্ৰলেখা দাসের পক্ষ থেকে মাল্যদান করে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুরৎ জামান মন্ডল। এছাড়াও মাল্যদান করে শ্রদ্ধা নিবেদন করে কলকাতা হার্ট ক্লিনিক হাসপাতালের সম্পাদক কিসান প্রধান এর পক্ষে ডঃ নুপুর ব্যানার্জী, ডঃ সামস মুশাফির, কবি মনিতোষ চক্রবর্তী, কবি রনজিৎ দাস, ডঃ প্রদীপ ভট্টাচার্য, দেবাশিস তরফদার, ডঃ বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী, শ্রীহট্ট সম্মিলনীর পক্ষে জয়তোষ দত্ত চৌধুরী। তাঁর প্রয়াণে গভীর শোক ব্যক্ত করেন বরাক উপত্যকার তিন জেলা কমিটি যথাক্রমে কাছাড়, করিমগঞ্জ ও হাইলাকান্দির জেলা সম্পাদক সহ জেলা নেতৃবৃন্দ। তাঁর প্রয়াণে বরাক উপত্যকার তিন জেলার দলীয় কার্যালয়ে দলীয় পতাকা অর্ধনমিত করে রাখা হয় এবং দলের কর্মী, সমর্থকেরা কালো ব্যাজ পরিধান করেন। দলের পক্ষ থেকে অবিলম্বে একটি শোকসভা আয়োজন করা হবে বলে জানানো হয়।