অনলাইন ডেস্ক : গুয়াহাটিতে ধৃত আন্তর্জাতিক সাইবার অপরাধী চক্রের অন্যতম পান্ডা করিমগঞ্জের দেবজ্যোতি দে ওরফে ডেভিড ওরফে বুলেট ও তার সঙ্গীরা তাদের প্রতারণার জাল বিছিয়ে ছিল পশ্চিমী দেশগুলোতেও। দেবজ্যোতিদের বিরুদ্ধে সুদূর আমেরিকা এবং ফ্রান্সেও প্রতারিতরা মামলা দায়ের করেছেন বলে জানা গেছে।
গুয়াহাটিতে কল সেন্টার খুলে বেশ কিছুদিন ধরে দেশ বিদেশের লোকেদের ব্যাংক একাউন্ট খালি করে দেওয়া দেবজ্যোতি ও তার চক্রের অর্ধশতাধিক প্রতারককে সম্প্রতি গ্রেফতার করেছে অসম পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চ। জানা গেছে এরা ধরা পড়ার পর এদের প্রতারণার বহু তথ্য সিবিআইকে তুলে দিয়েছে ইন্টারপোল। সিবিআই এসব তথ্য অসম পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চকে তুলে দেওয়ার পাশাপাশি নিজেরাও পৃথকভাবে মামলা নথিভুক্ত করে তদন্ত শুরুর প্রক্রিয়া চালাচ্ছে বলে জানা গেছে। খবর অনুযায়ী দেবজ্যোতিরা ধরা পড়ার পর দুই সঙ্গী রাজন চিগনা এবং দিব্যম আরোরা সহ তার পার্সে পুলিশ কয়েকটি বিটকয়েন এবং ক্রিপ্টো কারেন্সিও খুঁজে পেয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে এসবের মূল্য কোটি কোটি টাকা। এই টাকা তারা পকেটে নিয়েই ঘুরতো। এমনই সম্পত্তির পাহাড় গড়ে তুলেছিল দেবজ্যোতিরা।
এদিকে দেবজ্যোতিদের চক্রকে ইন্টারনেট পরিষেবা দেওয়া গুয়াহাটির ৩৫ টি সার্ভিস প্রোভাইডার প্রতিষ্ঠানের প্রধানদেরও ক্রাইম ব্রাঞ্চের পক্ষ থেকে তলব করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে বলে জানা গেছে। খবর অনুযায়ী এদের কয়েকজনকেও গ্রেফতার করা হতে পারে। কারণ ক্রাইম ব্রাঞ্চের কর্মকর্তারা মনে করছেন, সাইবার অপরাধী চক্রের কাজকর্ম সম্পর্কে অবহিত হয়েও নীরব ছিলেন এরা। সন্দেহ করা হচ্ছে প্রতারণায় সংযোগ থাকতে পারে এদের কারো কারোও। এছাড়া ইতিমধ্যে দেবজ্যোতি সহ তার দুই সঙ্গী রাজন চিগনা এবং দিব্যম অরোরার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার জন্যও শুরু হয়েছে প্রক্রিয়া। ক্রাইম ব্রাঞ্চ এর পক্ষ থেকে তিনজনের সম্পত্তির তালিকা তৈরি করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরের (ইডি) র কাছে প্রেরণ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত দেবজ্যোতি মূলত করিমগঞ্জ শহরের বাসিন্দা। তার পরিবার বেশ কিছুদিন ছিল করিমগঞ্জের লক্ষ্মীচরণ রোড ও সুভাষ নগরে ভাড়াবাড়িতে। ২০০৭ সালে মাধ্যমিক পাস করার পর সে পাড়ি দেয় গুয়াহাটিতে। তার মা-বাবার ইতিমধ্যে মৃত্যু ঘটেছে। তার মা মঞ্জু দেবীর করিমগঞ্জে বিভিন্ন মহলে ব্যাপক পরিচিতি ছিল।
জানা গেছে করিমগঞ্জ থেকে গুয়াহাটিতে পাড়ি দেবার পর দেবজিৎ পল্টন বাজার এলাকায় একটি সেলুন খুলে ব্যবসা শুরু করে। পরবর্তীতে সাইবার ক্রাইম অপরাধী চক্রে জড়িয়ে এই চক্রের মাথা হয়ে গড়ে তোলে বিশাল সম্পত্তির পাহাড়। বিদেশে তার যোগাযোগ ছিল প্রচুর, বিভিন্ন দেশে প্রায়ই যাতায়াত করত সে। করিমগঞ্জের অনেকের সঙ্গেও যোগাযোগ ছিল তার। তাই তার সূত্রে করিমগঞ্জেও থাবা পড়তে পারে ক্রাইম ব্রাঞ্চের।