অনলাইন ডেস্ক : হাইলাকান্দি পুরবোর্ড নয় যেনো কোনো রসালো বাংলা সিরিয়াল। প্রতিনিয়ত পাল্টাচ্ছে দৃশ্য পট৷ এক সময় পুরপতি কল্যাণ গোস্বামীর পালে হাওয়া বইলে, দ্বিতীয় মুহুর্তে দেখা যায় বিদ্রোহী দলের পাল্লা ভারি । প্রথম দিন আলিঙ্গনকরে যবনিকা টেনে পরদিন ফের ইউ-টার্ন। বলতে গেলে গত মাস ধরে চলছে এই নাটক। দীর্ঘ ১ মাস ধরে চলা এই দড়ি টানাটানি পর অবশেষে নাটকীয় ভাবেই শেষ হতে চলছে হাইলাকান্দি পুরসভার অনাস্থা পর্বের। দ্বিতীয়বারের মতো মুখ্যমন্ত্রীকে নিজেদের আক্রোশ জানিয়ে অবশেষে সম্ভবত অনাস্থা উঠিয়ে নিতে প্রস্তুত হয়েছেন হাইলাকান্দির ১০ বিদ্রোহী পুর সদস্য।
হাতে আর মাত্র কয়েকঘন্টা । ১১ আগষ্ট হাইলাকান্দি পুরসভায় আস্থা ভোট । পুরপতি কল্যাণ গোস্বামীর পক্ষে ৬ কমিশনার আর বিরুদ্ধে ১০। এছাড়াও রয়েছে দুই ‘এক্স-ওফিসিও’ সদস্য সাংসদ কৃপানাথ মাল্লা ও বিধায়ক জাকির হুসেন লস্কর। ১১ আগষ্ট ফ্লোর টেষ্টের সংখ্যাগরিষ্ঠতাই বিচার করবে কল্যাণ গোস্বামীর রাজনৈতিক ভবিষ্যত৷ আস্থা ভোট নিয়ে বর্তমানে দুই শিবিরেই টান টান উত্তেজনা। এরমধ্যেই ফের এক নাটকীয় মোড় দেখাগেলো মঙ্গলবার। দ্বিতীয় বারের মতো মুখ্যমন্ত্রীকে নিজেদের ক্ষোভ জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাসে অনাস্থা উঠিয়ে নিতে পারেন বিক্ষোভ কমিশনাররা বলে জানা গেছে। বিজেপির অন্দর মহল থেকে পাওয়া তথ্য মতে, মঙ্গলবার বিকেলে লক্ষীপুরের বিধায়ক কৌশিক রাই-এর তাপাং ব্লকের বড়সাঙ্গনে থাকা বাসভবনে গিয়ে হাজির হন বিদ্রোহী দলের ৮ সদস্য। বিধায়ক কৌশিক রাইও তখন সেখানেই ছিলেন। তবে বিধায়ক রাই তাদেরকে সেখানে ডেকে পাঠিয়েছিলেন, না তারা নিজেথেকে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন তা এখনো স্পষ্ট হয়ে উঠেনি। এই বৈঠকে কৌশিক রাইয়ের মাধ্যমে তারা মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে নিজেদের ক্ষোভ তুলে ধরেন। কিন্তু এরপরও মুখ্যমন্ত্রী বোর্ড ভাঙতে সহমত না হওয়ায় অবশেষে তারা অনাস্থা উঠিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু এবিষয়ে এখনো মুখখোলতে রাজি নন বিদ্রোহী কমিশনাররা। সম্ভবত বুধবার অনাস্থা উঠিয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলন করে এর কারণ তুলে ধরবেন বলে বিদ্রোহী সূত্রে জানা গেছে। তবে কারণ যাইহোক না কেনো পুরবোর্ড আর পুর সদস্যদের এই দড়ি টানাটানির নাটকে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন শহরের নাগরিকরা। গত ১ মাস থেকে বলতে গেলে কার্যত নিষ্ক্রিয় হয়ে আছে পুরসভা। এক মাস থেকে পুরপতি, উপ পুরনেত্রী সহ কমিশনারদের ঘন ঘন বৈঠক ও গুয়াহাটি আনাগোনায় সাধারণ মানুষের বিভিন্ন ফাইল আটকে রয়েছে পুরসভা কার্যালয়ে। তাই অতিসত্তর এই নাটকের অন্ত চাইছেন শহরের সাধারণ মানুষ। এদিকে, বিক্ষোব্ধ গোষ্ঠীর কমিশনারদের গোপনে সাহায্য করতে গিয়ে হাইলাকান্দি বিজেপির কয়েকজন শীর্ষ স্থানীয় নেতা দলের হাইকমান্ডের রোষে পরেছেন বলেও জানা গেছে।