অনলাইন ডেস্ক : মিছিল আটকাতে ব্যারিক্যাড গড়ে তুলেছিল পুলিশ, তবে এতে কাজ হয়নি। প্রতিবাদী মিছিলকারীদের সম্মিলিত চাপের মুখে ভেঙ্গে যায় এই ব্যারিকেড। ডিলিমিটেশন ইস্যুতে বৃহস্পতিবার শিলচরে ফোরাম ফর ডেমোক্রেটিক রাইটস, বরাকভ্যালি নামে সংগঠনের আন্দোলন কার্যসূচিতে দেখা যায় এমন দৃশ্য।
বরাক উপত্যকার তিন জেলায় বর্তমানের ১৫টিp বিধানসভা আসন বহাল রেখে সঙ্গে কমপক্ষে আরও ১টি আসন সংযোজন। বিভিন্ন বিধানসভা এলাকা যেভাবে কাটছাঁট করা হয়েছে তা বাতিল করে বাস্তব-গ্রাহ্য সীমা নির্ধারণ ইত্যাদি দাবিতে ফোরামের পক্ষ থেকে এদিন শিলচরে মহামিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছিল । কথা ছিল জেলা ক্রীড়া সংস্থার ময়দানের সামনে থেকে শুরু হবে মিছিল। তবে কার্যক্ষেত্রে দেখা যায় মিছিলের আগে পার্ক রোডে রাজিব ভবনে আয়োজন করা হয়েছে এক সভার।
সভায় বক্তব্য রাখেন ডিলিমিটেশনের খসড়াকে ঘিরে নানা অভিযোগ এনে চড়াসুরে বক্তব্য রাখেন বিডিএফ-এর কর্মকর্তা প্রদীপ দত্ত রায়, আইনজীবী সৌমেন চৌধুরী, সমাজকর্মী কমলাকান্ত সিং, জেলা কংগ্রেস সভাপতি অভিজিৎ পাল, কংগ্রেসের অন্য তিন কর্মকর্তা থৈবা সিং, সঞ্জীব রায় ও শরিফুজ্জামান লস্কর, ফোরামের কর্মকর্তা চয়ন ভট্টাচার্য ও আজমল হুসেন লস্কর প্রমুখ। ফোরাম ফর ডেমোক্রেটিক রাইটস এদিনের এই আন্দোলন কার্যসূচির ডাক দিলেও এতে যারা যোগ দিয়েছিলেন তাদের বেশিরভাগই ছিলেন কংগ্রেস দলের সদস্য। বিশেষত লক্ষ্মীপুর কংগ্রেসের দুই কর্মকর্তা থৈবা সিং ও অমিত দাসকে দেখা যায় প্রচুর সংখ্যক সঙ্গী সহ এই কার্যসূচিতে যোগ দিতে।
এদিন এই মহা মিছিল কার্যসূচিকে ঘিরে শুরু থেকেই সক্রিয় ছিল পুলিশ। জেলা ক্রীড়া সংস্থার ময়দান থেকে মিছিল শুরু হবে ভেবে প্রথম সেখানে মোতায়ন করা হয় প্রচুর সংখ্যক পুলিশ কর্মীকে। পরে রাজীব ভবনে সভার কথা জেনে ভবনের বাইরে মোতায়ন করা হয় পুলিশ। এদিকে ভবনের বাইরে প্রচুর সংখ্যক পুলিশ মোতায়নের খবর ভেতরে পৌঁছার পর সভাস্থলে সৃষ্টি হয় সৃষ্টি বেশ টানটান পরিস্থিতির। পুলিশ বাধা সৃষ্টি করলে তা ভেঙ্গে এগিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভা শেষে যোগদানকারীরা সবাই মিছিল করে এগুলোর জন্য ভবনের গেটের সামনে এসে জড়ো হন। এদিকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুব্রত সেন ও সদর থানার ওসি অমৃত কুমার সিংয়ের নেতৃত্বে পুলিশ ব্যারিকেড গড়ে তোলে মিছিল রুখতে উদ্যত হয়। কিছুক্ষণ কথা কাটাকাটির পর শুরু হয় খেলা ধাক্কা। ঠেলাধাক্কার মাঝে এক সময় পুলিশ আর মিছিলকারীদের আটকে রাখতে পারেনি। পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙ্গে এগিয়ে যায় মিছিল। এরপর অফিস পাড়ায় জেলা শাসকের কার্যালয়ের সামনে গিয়ে সবাই সমবেত হয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন।
বিক্ষোভ শেষে এক প্রতিনিধি দল কার্যালয়ের ভেতরে গিয়ে জেলাশাসকের মারফত রাষ্ট্রপতির উদ্দেশ্যে প্রেরণ করেন স্মারকপত্র। এ দিনের সভা ও মিছিলে অন্যান্যদের মধ্যে বিশেষ ভূমিকায় ছিলেন ফোরামের কর্মকর্তা সুজিত রায়, আশু পাল, সীমান্ত ভট্টাচার্য প্রমূখ। বিক্ষোভ চলাকালীন সীমান্ত ভট্টাচার্য সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে বলেন, কিছুদিন আগেও বরাক- ব্রহ্মপুত্র সমন্বয়ের নামে কিছু সংগঠন ময়দান সরগরম করে রেখেছিল। কিন্তু বর্তমানে যখন ডিলিমিটেশনের নামে বরাক উপত্যকাকে বঞ্চনা করা হচ্ছে তখন এরা নীরব। তার কথায়, যারা সমন্বয়ের ঠিকা নিয়েছিলেন এবারও তাদের এগিয়ে আসা উচিত। কিন্তু রহস্যজনক কারণে বর্তমানে এরা সম্পূর্ণ নীরব।