অনলাইন ডেস্ক : মনিপুর রাজ্যে উপজাতি সম্প্রদায়ের এক প্রতিবাদী আন্দোলনকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত, অগ্নিগর্ভ সে রাজ্যের পরিস্তিতি। উত্তর পূর্বের পাহাড়ি রাজ্যটির পরিস্তিতি এখনও থমথমে। হিংসার আগুনে দগ্ধ হচ্ছে মনিপুর রাজ্যের কয়েকটি জেলা। হিংসাত্মক পরিস্তিতির মধ্যে সেখানকার সাধারণ মানুষ চরম উৎকন্ঠায় আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। প্রাণ ভয়ে সে রাজ্যের নীরিহ জনগণ নিজের এলাকা ছেড়ে পালাচ্ছেন। উত্তপ্ত পরিস্তিতির মধ্যে মনিপুর রাজ্যের সহস্রাধিক পুরুষ মহিলা, বৃদ্ধ,শিশু দের নিয়ে আজ শুক্রবার অসমের কাছাড় জেলার লক্ষীপুর মহকুমা এলাকায় আশ্রয় নিয়েছেন। এদের প্রায় সবাই উপজাতি সম্প্রদায়ের জনগণ বলে জানা যায়।। এই বিষয়টি নিয়ে শুক্রবার বিকেলে লক্ষীপুরে মহকুমা শাসকের কার্যালয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলন করে আগত শরনার্থীদের নিয়ে তথ্য প্রদান করেন কাছাড়ের জেলাশাসক রোহন কুমার ঝা। জেলাশাসক বলেন সে রাজ্যের মানুষ আতঙ্কিত হয়ে অন্যত্র আশ্রয় নিচ্ছেন।আজ শুক্রবার মনিপুর রাজ্যের জিরিবাম জেলার সহস্রাধিক মানুষ নদী পথে এবং পায়ে হেঁটে লক্ষীপুর এলাকায় আশ্রয় নিয়েছেন বলে জানান । লক্ষীপুর মহকুমা এলাকার জরখা মার এলপি স্কুল, মিরপুর এলপি স্কুল, রমজাইলং,কে বেথেল,ফুলেরতল ইউনিয়ন হাইস্কুল সহ কয়েকটি স্থানে শরনার্থী শিবির করে এদেরকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে বলে জানান । মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে অসহায় লোকদের আশ্রয় দিয়ে সরকারিভাবে তাদের কে আপাতত দু দিনের খাদ্য সামগ্রী দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে আরও খাদ্য সামগ্রী প্রদান করা হবে বলে জানিয়েছেন কাছাড়ের জেলাশাসক। শরনার্থীদের সুবিধা দিতে স্থানীয় লোকজন যথেষ্ট সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন।আগত শরনার্থীরা যেন নিরাপদ এবং নির্বিঘ্নে থাকতে পারেন সেদিকে লক্ষ্য রাখতে বলেন কাছাড় জেলা পুলিশ সুপার নুমাল মহাতো। তিনি বলেন অসমের মনিপুর সীমান্তের কাছাড় জেলা এলাকায় পরিস্তিতি একেবারে শান্তিপূর্ণ। শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে আহ্বান রাখেন জেলা পুলিশ সুপার। মনিপুরের অগ্নিগর্ভ পরিস্তিতি নিয়ে জিরিবাম জেলার বিভিন্ন গ্রামের মানুষ আতঙ্কিত হয়ে কাছাড় জেলার লক্ষীপুরে আশ্রয় নিয়েছেন।মানবিক কারনে তাদেরকে নিরাপদে আশ্রয় দেওয়া আমাদের দায়িত্ব বলে মনে করেন জেলাশাসক ও পুলিশ সুপার। তারা বলেন কোন ধরণের গুজব ছড়াবেন না এবং গুজবে কান দিবেননা। সাংবাদিক সম্মেলনে জেলাশাসক ও পুলিশ সুপার ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন লক্ষীপু্রের ভারপ্রাপ্ত মহকুমাশাসক তথা এডিসি সুদীপ নাথ। তারা যৌথভাবে কয়েকটি শরনার্থী শিবির পরিদর্শন করে আগত লোকদের সঙ্গে মত বিনিময় করেন। অন্যদিকে মনিপুর রাজ্যের মোট ২৬ জন ব্যক্তি আশ্রয় নিয়েছেন লক্ষীপু্রের বিন্নাকান্দি সাউথ বরাক কমিউনিটি হলে। তারা সবাই মিজোরাম রাজ্য থেকে এসেছেন। সবাই মনিপুরের বাসিন্দা হলেও মিজোরাম রাজ্যে সরকারি চাকরি করেন। মনিপুরের পরিস্থিতি নিয়ে তারা মিজোরামে আতঙ্কিত ছিলেন। সেখানে কোন অঘটন না ঘটলেও আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে মিজোরাম থেকে এসে বিন্নাকান্দি সাউথ বরাক কমিউনিটি হলে বর্তমানে আশ্রিত রয়েছেন। মনিপুর রাজ্যে গত বুধবার থেকে পরিস্তিতি বেশ থমথমে। বুধবার বিকেলে সে রাজ্যের আটটি জেলায় কার্ফু জারি করা হয়।পরবর্তীতে আরও দুটি জেলা সহ দশটি জেলায় কার্ফু রয়েছে। এতে রয়েছে অসম মনিপুর সীমান্তের জিরিবাম জেলা। এপর্যন্ত জিরিবামে কোন অঘটন ঘটেনি।জিরিবামের পরিস্তিতি একেবারে শান্তিপূর্ণ।