অনলাইন ডেস্ক : শিলচর গুরুচরণ কলেজে ছাত্র সংসদের নির্বাচনে ক্লিনসুইপ করলো অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ (এবিভিপি)। শুক্রবার ভোটগ্রহণকে ঘিরে যে চিত্র দেখা গেছে ছাত্র রাজনীতির ক্ষেত্রে তা অবশ্যই এক বড়সড় নেতিবাচক ব্যাপার। নির্বাচনে ভোট পড়েছে মাত্র ১৮’৯২ শতাংশ, এর মধ্যেই আবার নোটায় ভোট পড়ার অংকটাও অনেকটাই বিশাল।
ছাত্র সংসদের মোট ১০টি পদের মধ্যে সহকারী সাধারণ সম্পাদক (গার্লস) পদে এবিভিপির মহাদ্রি রায় এবং ম্যাগাজিন সেক্রেটারি পদে ওই সংগঠনের অভিষেক আচার্য আগেই জয়ী হয়েছেন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়। এরপর শুক্রবার সভাপতি, সহ-সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, সহকারী সাধারণ সম্পাদক, স্পোর্টস সেক্রেটারি, কালচারাল সেক্রেটারি, বয়েজ কমনরুম সেক্রেটারি এবং গার্লস কমনরুম সেক্রেটারি-এই আটটি পদের জন্য ভোট গ্রহণ করা হয়। ভোট গণনার পর দেখা যায় এই আটটি পদেও জয়ী হয়েছেন এবিভিপির প্রার্থীরাই।
প্রসঙ্গত লিংডো কমিশনের গাইডলাইন অনুযায়ী ছাত্র সংসদের নির্বাচনে কোনও প্রার্থী সরকারিভাবে তার সংগঠনের নাম জাহির করতে পারেন না। তবে
মৌখিক প্রচারে এসেই যায় সংগঠনের নাম। এবারের নির্বাচনে সাংগঠনিকভাবে অনিয়মের অভিযোগ এনে এনএসইউআই সরে দাঁড়িয়েছে আগেই। তবে ব্যক্তিগতভাবে ওই সংগঠনের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত কয়েকজন অবশ্যই ছিলেন ময়দানে। এছাড়া এবিভিপির পাশাপাশি ছিলেন এআইডিএসও এবং তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্যরাও।
সভাপতি পদে এবিভিপির রোহিত চন্দ জয়ী হয়েছেন ৭৬৯ ভোট পেয়ে, এই পদে অন্য প্রার্থী আঞ্জুমা আক্তার লস্কর পেয়েছেন ১৮৮ টি ভোট, নোটায় ভোট পড়েছে ৫৭ টি।
সহ-সভাপতি পদে ৮০২টি ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন এবিভিপির স্নেহাংশু শেখর ভট্টাচার্য, পরাজিত রিপন চৌধুরী পেয়েছেন ১৩৬টি ভোট,
নোটা-৭৬।
সাধারণ সম্পাদক পদে জয়ী এবিভিপির তুষার ঘোষ পেয়েছেন ৬৯৯টি ভোট, অন্য দুই প্রার্থী নন্দিনী ঘোষ-২১৮ এবং দিপালী দাস পেয়েছেন ৭১টি ভোট, নোটা-২৬। সহকারী সাধারণ সম্পাদক পদে একই সংখ্যক ৬৯৯টি ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন এবিভিপির অঙ্কুশ দেব, অন্য দুই প্রার্থী এ রোহন সিং-২০৭ এবং লিটন দাস পেয়েছেন-৭০টি ভোট, নোটা-৩৮। স্পোর্টস সেক্রেটারি পদে জয়ী এবিভিপির রাকেশ সিং পেয়েছেন ৮০৩ টি ভোট, অন্য প্রার্থী গৌতম দাস পেয়েছেন ১৪২ ভোট,নোটা-৬৯। কালচারাল সেক্রেটারি পদে এবিভিপির গোবিন্দ পাল ৬৭০ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন, অন্য প্রার্থী বিশাল দাসের পক্ষে পড়েছে ২৪৩ ভোট,নোটা-১০১। বয়েজ কমনরুম সেক্রেটারি পদে জয়ী এবিভিপির বিশাল নাথ পেয়েছেন ৬৯৪ ভোট, অন্য প্রার্থী জাবির মহম্মদ লস্করের পক্ষে ভোট পড়েছে ২৪৩টি,নোটা-৭৭। গার্লস কমনরুম সেক্রেটারি পদে ৭৬৬ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন এবিভিপির ঋত্বিকা খেরসা, অন্য প্রার্থী দীপা দাস পেয়েছেন ১৫৬ টি ভোট,নোটা-৯২।
এদিন ভোট গ্রহণপর্বে মোট ৫৩৬০ জন ভোটারের মধ্যে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন মাত্র ১০১৪ জন। অর্থাৎ ভোট পড়েছে ১৮ ‘ ৯২ শতাংশ।
এর মধ্যেও আবার সবকটি পদেই নোটায় বেশ ভালো সংখ্যক ভোট পড়েছে। সব মিলিয়ে ব্যাপারটা ছাত্র সংসদের নির্বাচনের প্রতি পড়ুয়াদের উদাসীনতাকেই ফুটিয়ে তুলেছে বলে বিভিন্ন মহল থেকে অভিমত ব্যক্ত করা হয়েছে। যদিও ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে জড়িত কেউ কেউ এমন অভিমত উড়িয়ে দিতে মন্তব্য করেছেন, আগামীকাল শনিবার ঈদ, তাই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অনেক পড়ুয়াই ভোট দিতে আসেননি। এছাড়া সঙ্গে ছিল বৃষ্টি, এটাও অনেক পড়ুয়াকে আটকে রেখেছে বাড়িতে।
এসব কথা বলে যতই ব্যাপারটাকে চাপা দেবার চেষ্টা হোক না কেন, যারা উদাসীনতার পক্ষে মত ব্যাক্ত করেছেন, তাদের কথায়, মাত্র ১৮’৯২ শতাংশ পড়ুয়ার ভোটাধিকার প্রয়োগ স্বাভাবিক ছবি হতে পারে না কোনও অবস্থায়ই। তাই ছাত্র রাজনীতির পৃষ্টপোষকদের এ নিয়ে গুরুত্ব সহকারে ভাবা জরুরী।