অনলাইন ডেস্ক : করিমগঞ্জ-সুতারকান্দি ৩৭/১৫১ নম্বর জাতীয় সড়ক সংস্কারের বছর যেতে না যেতেই ফের ধ্বংসস্তপে পরিণত।নিম্নমানের কাজের জন্যই সংস্কারের স্বল্পদিনের মধ্যেই জাতীয় সড়কের এই বেহাল অবস্থা।৩৭/১৫১ নম্বর জাতীয় সড়কের কাজে কতো টাকা বরাদ্দ হয়েছে তার নেই কোনও হদিস বা তথ্যফলক।কাজের নাই কোন তথ্য ফলক।ম্যান্টেনেন্সের টাকা আত্মসাৎ করার জন্য লাগানো হয়নি কাজের কোনও খতিয়ান বা তথ্যফলক।সংস্কারের এতো কমদিনের মধ্যে সড়ক ধ্বংসস্তপে পরিণত হওয়ার কারণ সম্পর্কে জনগণের একই উত্তর,রাজনৈতিক নেতাদের প্রত্যক্ষ মদতে নিম্নমানের কাজ করার ফল এই বেহাল দৃশ্য।জাতীয় সড়কে কাজের তথ্যফলক না থাকায় রহস্য ঘণীভূত হচ্ছে।পঞ্চায়েত স্তরে পঞ্চাশ হাজারের কাজ হলেও তথ্য ফলক লাগানো বাধ্যতামূলক।কিন্তু জাতীয় সড়কের নামে কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ হলেও লাগানো হয়নি কাজের খতিয়ানমূলক কোনও সাইনবোর্ড।তথ্য ফলক কেন লাগানো হল না,ঠিকাদারের বিরুদ্ধে রহস্যজনকভাবে এই প্রশ্ন তুলতে ব্যর্থ ছিলেন শাসক-বিরোধী নেতারা।এই করিমগঞ্জ-সুতারকান্দি জাতীয় সড়কের কাজে তথ্য জানার অধিকার আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখানো হয়েছে বলেও অভিযোগ।ঝড়-বৃষ্টির মধ্যে জাতীয় সড়কের সংস্কার নিম্নমানের কাজের অভিযোগের প্রতিফলন ঘটলো শেষপর্যন্ত।উল্লেখ্য, কাজে দুর্নীতির জন্য ছয় মাসের মধ্যে ধ্বংসস্তপে পরিণত হওয়ার কথা সাময়িক প্রসঙ্গে প্রকাশিত হওয়ার জেরে টনক নড়েছিল ঠিকাদারের।স্বল্পদিনের মধ্যে ফাটল আর গর্তে র ছড়াছড়ি থাক অংশগুলো মেরামত করেছিলেন আজ থেকে বছর খানেক আগে।পুরনো পিচ না উঠিয়ে পাতলা বিটুমিন দিয়ে পিচের প্রলেপ দেওয়ার দরুন সংস্কারের বছর পূর্ণ হতে না হতেই ফের উঠে গেছে পিচ।এতে নিত্যদিন দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন জনগণ সহ গাড়িচালকরা।এই সড়ক দিয়ে বাংলাদেশে কয়লা, লাইমস্টোন রফতানি করে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করলেও সড়কটির বেহাল চিত্র পাল্টাতে নেই কোনও সরকারি তোড়জোড়।শাসক ও বিরোধী দলের নেতা থেকে সাংসদ-বিধায়ক সবাইকে সন্দেহের আবর্তে রেখেছেন জনগণ।এনিয়ে আওয়াজ তোলার মতো নেই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনও।একদিকে নিম্নমানের কাজ,অন্যদিকে অভারলোড পাথরের লরি চলাচলের জন্য সড়কটি কম সময়ে ধ্বংসস্তপে পরিণত হয়েছে বলে অনেকের ধারণা।সড়কের পনেরোঘর থেকে সুতারকান্দি অবধি অংশে সৃষ্টি হয়েছে খাল-বিলের মত নালা।হালকা বিটুমিনের প্রলেপ সরে গিয়ে উঁকি দিচ্ছে সেই পুরনো ভগ্ন পিচের মুখ।মুলত গ্রামীণ এলাকাগুলোতে যে নিম্নমানের কাজ হয়েছে তা প্রত্যক্ষ করা যায় পনেরোঘর থেকে সুতারকান্দি অবধি।আর এসব দেখে শাসক- বিরোধী নেতা,মন্ত্রী থেকে শুরু করে সবাই নীরব ভূমিকায়।গ্রামীণ এলাকায় যে কমদিনের মধ্যে সড়কের কাজ নিশ্চিহ্ন হবে সেটা কাজের শুরু থেকে আঁচ করা গিয়েছিল।শহর এলাকায় পুরনো পিচ উঠিয়ে দু’বার পিচের প্রলেপ দেওয়া হয়েছে।আবার গ্রামীণ এলাকা অর্থাৎ পনেরোঘর থেকে পুরনো পিচ না তুলে নামেমাত্র একবার পিচের প্রলেপ দেওয়াটা ছিল রহস্যের আবর্তে।অবাক দৃশ্য,শহর এলাকায় পিচ এখন অবধি ঝকঝকে থাকলেও পনেরোঘর ঘর থেকে সুতারকান্দি অবধি পিচের অস্তিত্ব নেই।বর্তমান অবস্থায় ভাঙা পিচের উপর দিয়ে গাড়ি ও মানুষ চলাচল অব্যাহত আছে।কিন্তু ভেঙে যাওয়া অংশগুলো মেরামতের নেই কোনও উদ্যোগ।সাধারণ পথচারীরা দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন প্রতিনিয়ত।করিমগঞ্জ সুতারকান্দি জাতীয় সড়কের কাজে দুর্নীতির নেই কোনও তদন্ত,নেই কোনও প্রতিবাদ।
সূচনালগ্নে রাতের অন্ধকারে বৃষ্টির মধ্যে সড়কে পিচের কাজ শুরু করেছিলেন ঠিকাদার।সেই অন্ধকারে অনুপস্থিত থাকতেন বিভাগীয় টেকনিশিয়ানরা।কাজের শুরু থেকেই ছিল গ্রাম-শহর বৈষম্য।শহরে অনেক উন্নতমানের কাজ হলেও পুর এলাকা ছেড়ে গ্রামীণ এলাকায় কাজ শুরু হতেই দুর্নীতির আশ্রয় নেন ঠিকাদার।একই রাস্তা,একই এস্টিমিট হলেও শহরে দুই কোড আর আবার গ্রামীণ এলাকায় নামেমাত্র এক কোড পিচের প্রলেপ দেওয়া হয়। কয়লা লরি হোক আর যাত্রীবাহী গাড়ি গ্রাম ও শহরে সমান তালে টেক্কা দিয়ে চলে। এরপর এখানে কাজের ধরন ছিল দু’ধরণের। গ্রামীণ এলাকায় কাজে অনিয়ম সংঘটিত করার মতলবেই রাতে অন্ধকারে কাজ হয়।বটরশিবাজার-কেশরকাঁপন থেকে পনেরোঘর অবধি যে কাজ হয় অত্যন্ত নিম্নমানের।এখানে রাস্তা পিচ করার দু-‘দিনের মাথায় মার্বলের মত পিচগুলো খসে উঠেছিল।শুধু তাই নয় পুরনো গর্তগুলো বড় আকারের মাটিমেশানো পাথর দিয়ে ভরাট করে তার উপর দেওয়া হয়েছিল পিচের প্রলেপ।কিন্তু ছিল না কোনও প্রতিবাদ।আর বিভাগীয় কতৃপক্ষের সঙ্গে দহরম-মহরম থাকার কারণে এতো অভিযোগের পরেও হয়নি কোনও তদন্ত।শীঘ্র পনেরোঘর থেকে সুতারকান্দি অবধি গ্রামীণ এলাকায় নতুনভাবে কাজ করার দাবি উঠেছে বিভিন্ন মহল থেকে। কাজের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদারের বিরুদ্ধে উচ্চপর্যায়ের তদন্তের দাবিও তুলেছেন জনগণ।