রাজ্যে মাধ্যমিকের প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় তিন অভিযুক্তকে সিআইডি তাদের দীর্ঘ জেরার পরে শুক্রবার আদালতে হাজির করা হয়েছে। মঙ্গলবার এই তিনজনকে হেফাজতে নেয় পুলিশ। এই অভিযুক্ত তিনজন হলেন জ্যোতিরেখা বরগোহাইঁ, হেরাম্বো কুমার দাস এবং বিন্দেশ্বর তুমুং। জ্যোতিরেখা এবং হেরাম্বো গুয়াহাটির ভাউরি দেবী সারাউগি হাই স্কুলের শিক্ষক, আর বিন্দেশ্বর তুমুং গাড়িচালক হিসেবে কাজ করে। এদিকে, এই মামলার প্রধান অভিযুক্ত কুমুদ রাজখোয়া শুক্রবার লখিমপুর জেলায় পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে্ন। রাজ্য পুলিশের প্রধান জিপি সিং এই পুরো প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে বিস্তারিত কথা বলেছেন। সেখানে তিনি বলেন, কুমদ রাজখোয়ার বিরুদ্ধে সমস্ত তথ্যপ্রমাণ পুলিশের হাতে রয়েছে। আপাতত সে পালিয়ে বেড়ালেও শীঘ্রই তাঁকে হেফাজতে নেওয়া হবে বলেও দাবি করেন ডিজিপি। জি পি সিং তাই কুমদকে আত্মসমর্পণ করার পরামর্শও দেন। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই কুমুদ রাজখোয়া লখিমপুর পুলিশের কাছে ধরা দেন। এদিন এর আগে জি পি সিং সাংবাদিকদের বলেন, ‘এই গোটা প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনার পিছনে দুই শিক্ষককে মূল চক্রী হিসাবে চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়েছি আমরা। তাঁদের বিরুদ্ধে সমস্ত প্রমাণ রয়েছে। কীভাবে প্রশ্নপত্র ফাঁসের পরিকল্পনার ছক সাজানো হয়েছে, সেসবই তদন্তকারী দলের কাছে এখন স্পষ্ট।’ দুই মূল অভিযুক্তের একজন শিক্ষক প্রণব দত্তকে আগেই পুলিশ আটক করেছিল। এদিন তাঁকে সিআইডি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। জি পি সিং জানিয়েছেন, প্রণব দত্ত ও কুমুদ রাজখোয়া দু’জনে ঘনিষ্ঠ বন্ধু। তাঁদের মধ্যে অত্যন্ত নিবিড় যোগাযোগ ছিল। মাজুলির লুহিত খাবলু উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রণব দত্ত। আর কুমুদ রাজখোয়া লখিমপুরের ডাফলকাটা হাই স্কুলে শিক্ষকতা করেন। জিপি সিঙের মতে, তদন্তকারী দল প্রণব দত্তের বাড়িতে বেশ কিছু পোড়া প্রশ্নপত্র খুঁজে পেয়েছে। সেগুলি ইতিমধ্যেই ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে রিপোর্ট এলেই আরও বেশ কিছু বিষয় খোলসা হবে। তিনি এদিন স্পষ্ট বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁসের পরের পর ঘটনাগুলি স্তরে স্তরে সাজিয়ে নিয়েছে তদন্তকারী দল।
তখনই জি পি সিং বলেন, পুলিশের কাছে কুমুদ রাজখোয়ার বিরুদ্ধে সমস্ত প্রমাণ রয়েছে। পালিয়ে তাঁর রক্ষা মিলবে না এবং তাকে শীঘ্রই গ্রেফতার করা হবে। যদিও ডিজিপির সাংবাদিক সম্মেলন শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই প্রধান অভিযুক্ত কুমুদ আত্মসমর্পণ করেন।
প্রসঙ্গত, প্রথমে মাধ্যমিকের বিজ্ঞান প্রশ্নপত্র ও পরে অসমিয়া, বাংলা-সহ মাতৃভাষা বিষয়ের সমস্ত পরীক্ষা বাতিল হওয়ায় ইতিমধ্যেই ক্ষোভ দেখাচ্ছে পড়ুয়ারা। তাদের একাংশের দাবি, নতুন করে পরীক্ষা না নিয়ে যে চার বিষয়ের পরীক্ষা ইতিমধ্যেই সম্পূর্ণ হয়েছে এর ভিত্তিতেই ফলাফল ঘোষণা করা হোক।