অনলাইন ডেস্ক : শিলচর রেলস্টেশনকে আদানির হাতে তুলে দেওয়া হবে বলে বুধবার আশঙ্কা ব্যক্ত করেছে এন এফ রেলওয়ে মজদুর ইউনিয়ন। বৃহস্পতিবার একই সুরে আশঙ্কা ব্যক্ত করল কংগ্রেসও। এভাবে আশঙ্কা ব্যক্ত করে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে এমনটা হলে তারা এর বিরুদ্ধে গড়ে তুলবেন তীব্র আন্দোলন।
এদিন শিলচর জেলা কংগ্রেস কার্যালয় ইন্দিরা ভবনে এক সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে দলের কর্মকর্তারা বলেন, সরকার যেভাবে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান বেসরকারি করনের পথে হেটে বৃহৎ পুজিপতিদের হাতে তুলে দিচ্ছে, এতে সব পরিষেবাই যেন সাধারণ মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তদের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। সরকারের নীতি থেকে এটা বলতেই হচ্ছে, এদেশে বোধহয় আর সরকারের কোনও প্রয়োজনই নেই। সরকারের বদলে কোনও পুঁজিপতির হাতে দেশ পরিচালনার ভার তুলে দিলেই সব লেঠা চুকে যাবে।
আসলে এদিনের সাংবাদিক সম্মেলনই ছিল বর্তমানে দেশের বহু বিতর্কিত পুঁজিপতি গৌতম আদানি কেন্দ্রিক। এআইসিসির নির্দেশে প্রতিটি জেলাস্তরে দলের পক্ষ থেকে সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে সরকার অনৈতিকভাবে অত্যাধিক আদানি প্রীতি দেখিয়ে দেশের সর্বনাশ করছে বলে অভিযোগ তুলে ধরা হয়। শিলচরের সাংবাদিক সম্মেলনে জেলা কংগ্রেস সভাপতি তমাল কান্তি বনিক, বিধায়ক মিসবাহুল ইসলাম লস্কর ও দলের কর্মকর্তা কিশোর ভট্টাচার্য সহ অন্যান্যরা ক্ষোভের সুরে বলেন, বিমানবন্দর থেকে বিভিন্ন নদী ও সমুদ্র বন্দর, বৈদ্যুতিক ক্ষেত্র সবকিছুই তুলে দেওয়া হচ্ছে আদানীর হাতে। এমনকি প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রেও অনেক কিছু পাইয়ে দেওয়া হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী মোদি ঘনিষ্ঠ এই পুঁজিপতি গুষ্টিকে। বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে অন্য কোনও ব্যবসায়িক গোষ্ঠী এগিয়ে গেলে চাপ সৃষ্টি করে হটিয়ে দেওয়া হচ্ছে তাদের। পরিসংখ্যান তুলে ধরে কিশোরবাবুরা বলেন, সরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোও আদানীর স্বার্থ রক্ষার জন্য ডুবতে চলেছে। সরকারের চাপে কৃত্রিমভাবে দর বৃদ্ধি করা আদানির কোম্পানির শেয়ার কিনতে বাধ্য হয়েছে এলআইসি ও স্টেট ব্যাংক। যার দরুন এলআইসির ক্ষতি হয়েছে ৪৪ হাজার কোটি টাকা। আর এসবের প্রভাব যে সাধারণ লগ্নিকারীদের উপর চাপবে তা বোধহয় বলার আর অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু এসবের বিরুদ্ধে কেউ বলতে গেলেই নানা সরকারি এজেন্সিকে লেলিয়ে দিয়ে চুপ করিয়ে দেওয়া হচ্ছে তাদের। তবে কংগ্রেস আর এসব ভীত হতে রাজি নয়। দমনমূলক কার্যকলাপ যত চলবে ততই প্রতিবাদে গর্জে উঠবে কংগ্রেস।
কথা প্রসঙ্গে মিসবাহুল ইসলাম লস্কর সাম্প্রতিককালে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন অপরাধ মূলক ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে বলেন এসবের পিছনে মূল কারণ সরকারের অর্থনীতি। সরকারের পুঁজিপতি বান্ধব অর্থনীতির দরুন সাধারণ লোকেদের নাভিশ্বাস উঠার উপক্রম হয়েছে। আর আর্থিক অনটনের সূত্র ধরেই ঘটছে একের পর এক অপরাধমূলক ঘটনা। এই অবস্থায় এবার সমগ্র দেশবাসীকে একযোগে সোচ্চার হয়ে উঠতে হবে।
এদিনের সাংবাদিক সম্মেলনে অন্যান্যদের উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন বিধায়ক গিরিন্দ্র মল্লিক, বাবুল হোড়, সূজন দত্ত, আজমল হোসেন লস্কর, আব্দুল রেজ্জাক ও পাবলভ লস্কর ।