অনলাইন ডেস্ক : বাংলাদেশের তুরাগ নদের তীরে অনুষ্ঠিত বিশ্ব ইজতেমায় দেশ-বিদেশের প্রায় ৩০ লক্ষ মুসল্লি আখেরি মোনাজাতে অংশ নিয়েছেন। মোনাজাত চলাকালে আমিন আমিন ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে তুরাগ তীরে। মোনাতে অংশ নিয়ে কান্নায় লুটিয়ে পড়েন বহু মানুষ। রবিবার আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে তিনদিনের বিশ্বইজতেমার প্রথম পর্ব শেষ হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন কাকরাইল মসজিদের ইমাম ও তাবলিগ জামাতের মুরব্বি মাওলানা মুহাম্মদ জুবায়ের আহমেদ। আখেরি মোনাজাতে অংশ আত্মশুদ্ধি, নিজ নিজ গুনাহ মাফ, সব বালা-মুসিবত থেকে হেফাজত, রহমত প্রার্থনা ও আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় লাখো মুসুল্লি আকুতি জানান। মোনাজাত চলাকালে প্রায় ২০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। কয়ে কিলোমিটার এলাকার মানুষ আখেরি মোনাজাতে অংশ নেন। ইজতেমা ময়দানে যেতে না পেয়ে হাজারো মানুষ সড়ক, বিভিন্ন বাড়ির ছাদে থেকে মোনাজাতে অংশ নেন। আখেরি মোনাজাতের আগে সকালে ফজরের পরপর হেদায়েতি বয়ান করেন ভারতের মাওলানা আবদুর রহমান। ইজতেমা ময়দানের বিদেশি নিবাসের পূর্বপাশে বিশেষভাবে স্থাপিত মোনাজাত মঞ্চ থেকে আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করা হবে। কমিটির মিডিয়া সমন্বয়ক মুফতি জহির ইবনে মুসলিম মোনাজাতে প্রায় ৩০ লাখ মুসল্লি অংশ নেবার কথা জানিয়েছিলেন। ইজতেমায় প্রায় ৬৭টি দেশের কয়েক হাজার মুসল্লি অংশ নেন। যেখানে ভারতের মুসল্লির সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। দুই বছর পর অনুষ্ঠিত হচ্ছে বিশ্বের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় জামাত বিশ্ব ইজতেমার ৫৬তম পর্ব। ধারণা করা হচ্ছে, ৫৬তম বছরের রেকর্ড ভেঙ্গে এবারের বিশ্ব ইজতেমায় ৩০ লক্ষ মুসল্লির অংশগ্রহণে আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে তিন দিনের প্রথম পর্বে ইজতেমা শেষ হবে। এরপর চার দিনের বিরতি দিয়ে ২০ জানুয়ারি শুরু হবে ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব। ১৯৬৭ খ্রিষ্টাব্দ থেকে প্রতি বছর নিয়ম করে বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। তবে ১৯৪৬ সালে ঢাকার কাকরাইল মসজিদে তাবলিগ জামাতের বার্ষিক সম্মেলন বা ইজতেমা প্রথম অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেই থেকে দিনে দিনে ইজতেমার পরিসর বড় হতে থাকে। এক পর্যায়ে স্থান সংকুলান না হওয়া, ঢাকার অদূরে তুরাগ নদের ইত্তর তীরে বিশাল ময়দানে ১৯৬৭ সালে বিশ্ব ইজতেমার জামাত অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। রবিবার আখেরি মোনাজাতের কারণে মধ্যরাত থেকে ইজতেমা ময়দান ঘিরে প্রায় ২০ বর্গ কিলোমিটার সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেয় প্রশাসন। ঢাকা ও পাশ্ববর্তী এলাকা থেকে আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে ভোররাত থেকে পায়ে হেটে মানব কাফেলা ইজতেমা ময়দানের দিকে আসতে থাকে। এদিন ফজর নামাজের পর ভারতের মাওলানা আব্দুর রহমান বয়ান শুরু করেন। এর পর হেদায়েতি বয়ানে অংশ নেন মাওলানা ইবরাহিম দেওলা হেদায়েতি। হেদায়েতি বয়ান শেষ হলে শুরু হবে আখেরি মোনাজাত। আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করবেন কাকরাইলের সুরা সদস্য ক্বারি মোহাম্মদ জোবায়ের। মুসল্লিরা ঈমান, আখলাক, ইবাদত বন্দেগি ও কোরআন হাদিসের আলোকে জীবনকে আলোকিত গড়ে তোলার বয়ান শোনেন।