অনলাইন ডেস্ক : অনিয়মের পাহাড় তৈরি হয়েছে শিলচর সদর তহসিল কার্যালয়ে। জনগণের জমাকৃত খাজনার অর্থ নয়ছয় থেকে শুরু করে সরকারি নথিপত্র গায়েব করার মতো গুরুতর অনিয়ম চলছে বহুকাল ধরে। এবার নির্দিষ্ট অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে প্রথমে কার্যালয়ে তালা ঝোলান সদর সার্কেল অফিসার। এবার সেই অসাধু কর্মীদের বদলির নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসক। গত ডিসেম্বরে সদর তহসিলের চতুর্থ শ্রেণির কর্মী মেহজামিন লস্কর কার্যালয়ের আর্থিক কেলেঙ্কারি এবং অনিয়ম নিয়ে জেলাশাসকের কাছে নালিশ জানান। রাজস্ব সেরেস্তাদারের কাছে অভিযোগপত্র তুলে দিয়ে তিনি কার্যালয়ের ভেতরের চালচিত্র তুলে ধরেন। সরকারি রাজস্ব আদায় করে সিংহভাগ টাকা তহসিলের একাংশ কর্মী ভাগ করে নেন বলে অভিযোগ। ভাগের অংশ থেকে বঞ্চিত হওয়ায় বিষয়টি বিভিন্নভাবে সামনে আসে। এনিয়ে বারকয়েক বৈঠকের পর সার্কেল অফিসার কার্যত রেগে গিয়ে সদর তহসিল কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেন। বিষয়টি জেলাশাসকের নজরে গেলে ব্যাপক রদবদলের নির্দেশ দেন তিনি। কাছাড়ের অতিরিক্ত জেলাশাসক দীপক জিডুং গত ৪ জানুয়ারি এক নির্দেশে সাতজন কর্মীকে একযোগে বদলির নির্দেশ দেন। সে অনুযায়ী মূল অভিযোগের তীর যাদের দিকে, সেই সদর তহসিলের বরিষ্ঠ সহকারী রত্নারানি দাস এবং কনিষ্ঠ সহকারী সাদিক আহমেদ বড়ভূইয়াকে জেলাশাসকের রিসেপশন কাউন্টারে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া তহসিলের কনিষ্ঠ সহকারী ওলিউল ইসলাম চৌধুরীকে উন্নয়ন শাখায়, সদর রাজস্বের সুব্রত সরকারকে সদর তহসিলে, রেসেপশনের রঞ্জিতকুমার চক্রবর্তী ও উন্নয়নের কৃষ্ণা বর্মনকে সদর তহসিলে এবং রিসেপশনের বিকাশ দত্তকে সোনাই তহসিলে বদলি করা হয়েছে।কাছাড়ের জেলাশাসক কার্যালয়ে অনিয়মই কার্যত নিয়ম! খোদ জেলার সর্বময় কর্তাকে অন্ধকারে রেখে একাংশ কর্মী এককালে গড়ে তুলেছিলেন ‘বাবু সিন্ডিকেট’! আজ সেটা ফুলে-ফলে-পাতায় ঢেকে এমন গভীরে লুকিয়েছে, যেখানে শেকড় বের করা মুশকিল হয়ে পড়েছে। বলা ভাল, এখন আর কেউ তা সমূলে উৎপাটনের চেষ্টাও করেন না। এক ব্যক্তি দুটি শাখার বড়বাবুর দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন, নামে বেনামে অনেকে ঠিকাদারি এবং গাড়ির ব্যবসা চালাচ্ছেন, রয়েছে এমন হাজারো অভিযোগ। কিন্তু কোনও ঘটনায় কারও বিরুদ্ধেই নিরপেক্ষ তদন্ত হয় না, ব্যবস্থা গ্রহন তো বহু দূর! সদর তহসিলে বাবু সিন্ডিকেটের খাজনা কেলেঙ্কারি সামনে এলেও এতে ঠিক কারা জড়িত, কত টাকার রাজস্ব হজম হয়েছে বা কে কতটা ভাগ পেয়েছেন, সেসব এখনও অজানা রয়ে গেছে। অনিয়ম সামনে আসায় ব্যাপক রদবদলের পাশাপাশি জেলাশাসক এবার তদন্তের মাধ্যমে কড়া পদক্ষেপ করবেন, এই আশা প্রকাশ করছেন অনেকেই।