শিলং, ১২ ডিসেম্বর : মেঘালয়ের মাটিতে পা দিয়েই মানুষের উষ্ণ আতিথেয়তায় অভিভূত তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার দুপুরেই শিলং-য়ের মাটিতে পা দিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। এদিন দুপুর আড়াইটে নাগাদ শিলং বিমানবন্দরে নামেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সঙ্গে ছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বিমানবন্দরের বাইরে পা দিয়েই তাঁকে উত্তরীয় পরিয়ে অভ্যর্থনা জানান সেখানের দলের কর্মীরা। তাঁকে দেখেই ‘দিদি’ বলে ডাকেন দলের নেতাকর্মীরা। তাঁদের এই উষ্ণ অভ্যর্থনায় অভিভূত হন তৃণমূল সুপ্রিমো। তারপরেই সোশাল মিডিয়াতে তিনি তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লেখেন, ‘আপনাদের ভালবাসা, উষ্ণতা এবং সমর্থনে আমি অভিভূত। আপনাদের সবাইকেই আমার আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।’
উত্তরপূর্ব ভারতে মাটি শক্ত করার লক্ষ্যে সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস । আগামী বছরেই ত্রিপুরার সঙ্গেই মেঘালয়ে বিধানসভা নির্বাচন। এই দুই রাজ্যেই জেতার লক্ষ্য নিয়ে লড়াই করতে নামছে তৃণমূল। তার আগে সেখানের দলের নেতাকর্মীদের মনোবল বাড়াতে অভিষেককে সঙ্গে নিয়ে মেঘালয়ে এসেছেন মমতা। তাদের স্বাগত জানাতে উমরোই এয়ারপোর্টে ছিলেন মেঘালয়ে তৃণমূলের পর্যবেক্ষক তথা পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া, মেঘালয় তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি চার্লস পাইনগ্রোপে ও বিধানসভার দলনেতা মুকুল সাংমা। ছিলেন দলের অন্য নেতারাও। এদিন বাইরে গিয়েই সেখানে অপেক্ষারতদের বড়দিনের আগাম শুভেচ্ছাও জানান পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী।
এদিন সোশাল মিডিয়াতে মমতা লেখেন, ‘পাহাড়ি রাজ্য মেঘালয়ের সৌন্দর্য এবং এখানের মানুষের সরলতা হৃদয়গ্রাহী। আমি এখানে পৌঁছানোর পরেই তাঁরা আমাকে হাসিমুখে স্বাগত জানান। তাঁদের এই আনন্দিত এবং হাসিমুখ আমার হৃদয়ে চিরদিন থাকবে।’ সেই সঙ্গেই মুকুল সাংমা, চার্লস পাইনগ্রোপে, জর্জ লিংডো এবং জেনিথ সাংমাকেও কৃতজ্ঞতা জানান তিনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, তিনি মেঘালয়ের মানুষের কথা এবং চাহিদার কথা শুনবেন। তাদের চাহিদাকে অগ্রাধিকার দেবেন তিনি। তিনি লিখেছেন, ‘এই রাজ্যে আমাদের যাত্রা সবে শুরু হল। আমাদের অনেকটা পথ যেতে হবে।’
তৃণমূল সূত্রে খবর, তিনদিনের মেঘালয়ে সফরে গিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার তাঁরা থাকছেন মেঘালয় পর্যটন দফতরের অতিথি নিবাস পাইনউডে। মঙ্গলবার দুপুর ১২টার সময়ে শিলং-এর স্টেট সেন্ট্রাল লাইব্রেরিতে দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করবেন মমতা। বিকালে শিলং-এ ‘প্রি –ক্রিসমাস’ অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন তিনি।
প্রসঙ্গত, ২০১৮-এর বিধানসভা নির্বাচনে নিখিল ভারত কংগ্রেসের ১৭ জন বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছিলেন, একটি আসনও পায়নি তৃণমূল। কিন্তু গত বছরের নভেম্বরে সাবেক কংগ্রেস নেতা তথা মেঘালয়ের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মুকুল সাংমার নেতৃত্বে কংগ্রেসের অন্য ১১ সহ মোট ১২ জন বিধায়ক পার্বত্য এই রাজ্যে প্রধান বিরোধী দল হিসেবে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করেছিলেন। পরে অবশ্য তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদানকারী ১২ জন বিধায়কের মধ্যে হিমালয় শাংপ্লিয়াং গত মাসে বিধানসভা এবং দল থেকে পদত্যাগ করেছেন। ফলে বিধানসভায় তৃণমূল কংগ্রেসের শক্তি ১১-তে নেমে এসেছে।