অনলাইন ডেস্ক : হাইলাকান্দির বহু চর্চিত নির্বাচন বিভাগের তদন্তে এবারে মুখ্যমন্ত্রীর ভিজিল্যান্স সেল। সোমবার সকালে হাইলাকান্দিতে এসে উপস্থিত হন সিএম ভিজিল্যান্স সেলের তিন সদস্যের একটি দিল। হাইলাকান্দি নির্বাচন বিভাগের ৬২ লক্ষ টাকার সান্মানিক কেলেঙ্কারির তদন্ত করবে দলটি। আগামী বুধবার পর্যন্ত হাইলাকান্দিতে থেকে এই কেলেঙ্কারির বিস্তারিত তদন্ত করবেন তারা। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের সময় বিভিন্ন বিভাগে কাজ করা একাংশ সরকারি কর্মীর সান্মানিকের ভূয়া তালিকা বানিয়ে আর্থ আত্মসাত করার একটি ঘটনা কিছুদিন পূর্বে সামনে এসেছিল। খোদ নির্বাচন আধিকারিক বিবি বরার তদন্তে এই ঘটনা সামনে এসেছিল। এই ঘটনায় তিনি সরাসরি নির্বাচন বিভাগের জ্যেষ্ঠ করণিক দেবজিৎ বিশ্বাস (বাপ্পা)কে অভিযুক্তের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে ছিলেন। এরপর চলতি বছরের অক্টোবর মাসে হাইলাকান্দির জেলা আয়ুক্ত হিভারে নিসর্গ এনিয়ে অতিরিক্ত আয়ুক্ত পর্যায়ের এক তদন্তের নির্দেশ দেন। তার নির্দেশে অতিরিক্ত আয়ুক্ত জ্যোতির্ময় দৈমারী এই ঘটনার বিস্তারিত তদন্ত করেন৷ আর এই তদন্তের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ২ নভেম্বর নির্বাচন বিভাগের জ্যেষ্ঠ করণিক দেবজিৎ বিশ্বাসকে চাকরি থেকে সাময়িক ভাবে বরখাস্ত করার নির্দেশ দেন জেলা আয়ুক্ত। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জানা গেছে, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের সময় কাজ করা একাংশ কর্মীর সান্মানিক প্রদানের জন্য চলতি বছরে হাইলাকান্দির নির্বাচন শাখা থেকে ট্রেজারি অফিসে মোঠ ৬১ লক্ষ ৮৯ হাজার ৫৮৭ টাকার একটি বিল জমা হয়েছিল। এই বিলটি রাজস্ব সেরেস্তাদার এবং নির্বাচন শাখার সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট দেবজিত বিশ্বাস (বাপ্পা ) তৈরি করেছিলেন । এবং নির্বাচন আধিকারিক বিবি বরা এই বিলটিতে অনুমোদন জানিয়েছিলেন । কিন্তু এই বিলেতে অসঙ্গতি থাকার ব্যাপারটি হাইলাকান্দির ট্রেজারি অফিসার বিশ্বজিৎ পালের নজরে পড়ে। তিনি লক্ষ্য করেন য়ে, বেশিরভাগ প্রাপকদের নাম এবং অ্যাকাউন্ট নম্বরের মধ্যে মিল নেই । জমা করা এই অনলাইন বিলে অনিয়ম ধরা পড়ায় নির্বাচন আধিকারিক বিবি বরা নিজেই এই বিল ফিরিয়ে নেন। এরপর বিষয়টি জেলা আয়ুক্ত নিসর্গ হিবারের নজরে আসে। তিনি তখনএমর্মে তদন্তের নির্দেশ দেন । আর তদন্ত পরবর্তীতে এদিন দেবজিত বিশ্বাসকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। একই সঙ্গে বিষয়টি জেলা প্রশাসনের তরফে মুখ্যমন্ত্রীর ভিজিল্যান্স সেলেও জানানো হয়৷ আর এরই তদন্তে আজ হাইলাকান্দি এসে পৌছায় মুখ্যমন্ত্রীর ভিজিল্যান্স সেলের একটি দল। এই দলে রয়েছেন দুই পরিদর্শক ক্রমে বিজু কুমার শর্মা ও নিপু কলিতা ও কনষ্টেবল রিতুমনি শর্মা। সোমবার সকালে তারা হাইলাকান্দি নির্বাচন বিভাগের কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে বিভিন্ন ফাইলপত্র তন্নতন্ন করে যাচাই করা আরম্ভ করেছেন। পাশাপাশি তলব করা হয়েছে নিলম্বিত বড়বাবু দেবজিৎ বিশ্বাসকেও। তারা আগামী দুদিন ধরে এই অনুসন্ধান চালাবেন বলে জানা গেছে। এদিকে, হাইলাকান্দি নির্বাচন বিভাগে এই ৬২ লক্ষ ছাড়াও আরও বৃহৎ পরিমাণের কেলেঙ্কারির তথ্য সামনে আসতে পারে বলে অনুমান করছে জেলার সচেতন মহল। এই কেলেঙ্কারিতে দেবজিৎ বিশ্বাস ছাড়াও আরও রাঘব বোয়ালদের নাম বেড়িয়ে আসারও সম্ভাবনা রয়েছে।