অনলাইন ডেস্ক : অসম পাবলিক সার্ভিস কমিশন (এপিএসসি) নিয়োগ কেলেঙ্কারির ঘটনায় একের পর এক নিবন্ধিত অফিসারকে নোটিশ জারি করেছে। সম্প্রতি করিমগঞ্জের এডিসি মিনার্ভা দেবী, এপিএস দীপঙ্কর দত্ত লহকর এবং ধীরাজকুমার জৈন নামে তিন কর্মকর্তাকে নোটিশ প্রদান ছাড়াও কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে বিশেষ তদন্তকারী দল নন্দবাবু সিংকে গ্রেফতার করে। রাকেশ পালের আমলে এই নন্দবাবু সিং মুখ্য পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ছিলেন। কাছাড় থেকে গ্রেফতার হওয়া প্রাক্তন মুখ্য পরীক্ষা নিয়ন্ত্রককে গুয়াহাটিতে আনা হচ্ছে। তিনি রাকেশ পালের অন্যতম সহযোগী ছিলেন। তিনি তার ক্ষমতা ও অর্থ দিয়ে তার মেয়ে মিনার্ভা দেবীকে চাকরিও দিয়েছিলেন। উল্লেখ্য, নন্দবাবু সিং, ২০১৩ সালের মার্চ থেকে ২০১৫ এর জুলাই পর্যন্ত অসম পাবলিক সার্ভিস কমিশনের মুখ্য পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ছিলেন। ২০২২ সালে আগস্টে নন্দবাবু সিংকে জেরা করেছিল বিপ্লব শর্মা কমিশন। নন্দবাবু সিংয়ের বিরুদ্ধে ৪৯ হাজার এপিএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র পোড়ানোরও অভিযোগ রয়েছে। তিনি ২০১৪ সালের প্রাথমিক পরীক্ষার ওএমআর শিট পুড়িয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ। রাকেশ পালের ডানহাত নন্দবাবু সিং অবশ্য রহস্যজনক কারণে গ্রেফতার হননি।নন্দবাবুর বিরুদ্ধে উত্তরপত্র পুড়ানো সহ নিজের কন্যাকে এপিএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ করার অভিযোগ রয়েছে। নিজের কোন নিকটাত্মীয় পরীক্ষা প্রার্থী হলে সংশ্লিষ্ট পরীক্ষা পরিচালনা করার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিতে হয়, কিন্তু নন্দবাবু সিংহ মূখ্য পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক থাকা অবস্থায় নিজের কন্যা মিনার্ভা দেবী এপিএসসির পরীক্ষায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। এই সময়েই এপিএসসি তে বৃহৎ কেলেঙ্কারি সংঘটিত হয়।২০১৪ সালের এপিএসসি কেলেঙ্কারির ভূত আজও অনেককেই তাড়া করছে। এসিএস, এপিএস চাকরি বাণিজ্য নিয়ে ২০১৬ সালে ডিব্রুগড় জেলায় এক মামলা দায়ের হয়েছিল।মামলা নম্বর ৯৩৬/২০১৬।এই মামলার সুত্র ধরে তদন্তের শুরু হয়। এছাড়াও শিলচরের মূল বাসিন্দা ওকরাম প্রশান্ত সিংহ এপিএসসি কেলেঙ্কারি নিয়ে গুয়াহাটিতে সোচ্চার হয়েছিলেন। পরবর্তীতে বিপ্লব কুমার শর্মা তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে চাকরি বাণিজ্যে জড়িতদের গ্রেফতার শুরু করে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।পূর্বে ছয়বার জেরার সম্মুখীন হয়েছিলেন প্রাক্তন মূখ্য পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এ নন্দবাবু সিংহ।এবার তার কন্যা মিনার্ভা দেবীকে ও তলব করা হয়েছে সিআইডি দফতরে। প্রাক্তন মূখ্য পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও এডিসি কন্যাকে এক সঙ্গে জেরা করা হতে পারে। এই নন্দবাবু সিংহ লক্ষীপুরের বিন্নাকান্দি ঘাটের মূল বাসিন্দা। তিনি চাকরি প্রাপ্তির পূর্বে ১৯৭৪ সালে এক খুনের মামলায় আসামি ছিলেন। সেই খুনের মামলায় হাজতবাস করেও পরে খালাস পেয়েছিলেন। খুনের মামলা থেকে রেহাই পেলেও এবার চাকরি জীবন থেকে অবসর গ্রহণের পরও চাকরি বাণিজ্যের মামলায় বারবার জেরার সম্মুখীন হচ্ছেন। অবসর জীবনে চরম অশান্তির মুখে পড়েছেন তিনি।