অনলাইন ডেস্ক : “এখানে প্রস্রাব করা নিষেধ। প্রস্রাব করলে ১ হাজার টাকা জরিমানা।” গত কিছুদিন ধরে শহরের থানা রোডে রাস্তার পাশের নালা সংলগ্ন দেওয়ালে দেখা যাচ্ছে এমন নোটিশ। না নোটিশের বয়ান অনুযায়ী জরিমানা অবশ্য আদায় করা হয়নি। তবে গত ৪ দিনে এই রাস্তায় উন্মুক্ত স্থানে প্রস্রাব করায় সদর থানা পুলিশ আটক করে ৮৬ জনকে।
উন্মুক্ত স্থানে এই প্রস্রাবকারী ধরা অভিযান পুলিশ শুরু করেছে পুজোর আগে থেকেই। পুজোর কদিন ব্যস্ততায় বন্ধ থাকে এই অভিযান। পুজোর পর ১৫ অক্টোবর মঙ্গলবার থেকে ফের জোর কদমে অভিযান শুরু হলে শুক্রবার পর্যন্ত আটক করা হয় ৮৬ জনকে। দেওয়ালে জরিমানার সতর্ক বাণী লিখে রাখলেও আটক করার পর এদের অবশ্য ঘন্টাখানেক সময় থানায় বসিয়ে আর এমন কাজ না করার প্রতিশ্রুতি নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। পুলিশের এক সূত্র জানান, এতে কাজও হচ্ছে বেশ। মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতিবার জোর কদমে ধরপাকড়ের পর শুক্রবার সংখ্যা কমে এসেছে অনেকটাই।
পুলিশের সূত্রটি জানান, লাগাতার একের পর একজন শরীরের তরল বর্জ্য রাস্তার পাশের নালায় নির্গমনের দরুণ একেক সময় এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়ে যে দুর্গন্ধে রাস্তা দিয়ে চলাফেরা তো বটেই সদর থানার ভেতরেও টিকে থাকা মুশকিল হয়ে দাঁড়ায়। এছাড়া অনেক মহিলাই অনেক সময় থানায় এসে এ নিয়ে নালিশ জানিয়ে গেছেন। এসবের জেরে পুলিশকে সক্রিয় হতে হয়। তবে মুখে ভদ্রভাবে মানা করলেও কেউ এতে কান দিতে রাজি হন না। তাই মাঝে মাঝেই আটক করে রাখা হয় প্রস্রাব কারীদের। এবার লাগাতার কয়েকদিন ধরে চলছে এই অভিযান। সূত্রটি জানান, যারা প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিয়ে থানা রোডের নালায় প্রস্রাব করতে আসেন তাদের বেশির ভাগই আশপাশ এলাকার দোকানী। আর এদের দেখে পথ চলতি অনেকেও সেখানে শরীরের ভার লাঘব করতে লেগে যান। অথচ এমন নয় যে ওই এলাকায় প্রাকৃতিক কর্ম সারার কোনও ব্যবস্থা নেই। বেশ কিছুদিন হল থানা রোডেই ফাটক বাজারের দিকে সুলভ শৌচালয়ের ব্যবস্থা করে দিয়েছে রোটারি ক্লাব। কিন্তু ওই শৌচালয়ে অনেকেই যেতে চান না।
এদিকে রোটারি ক্লাবের গড়ে তোলা সুলভ শৌচালয়ের তদারকিতে থাকা কর্মী কানূ নায়েক জানান, পুলিশ এবার জোরদার অভিযান শুরু করার পর শৌচালয়ে প্রস্রাবকারীর সংখ্যা আগের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। ঘন্টাখানেক সময় থানায় আটকে থাকার ভয়ে অনেকেই শৌচালয়ে আসছেন প্রাকৃতিক কর্ম সারতে। আগে বলে বলেও যাদের শৌচালয়ে আনা সম্ভব হতো না, এখন আসছেন তাদের অনেকেও।
কানু আরও জানান, এলাকার দোকানীদের জন্য শৌচালয়ে “মান্থলি” ব্যবস্থাও রয়েছে। ৬০ টাকা জমা করলে দেওয়া হচ্ছে “মান্থলি”কার্ড। আর এর বিনিময়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ১ মাসে যতবার খুশি ব্যবহার করতে পারবেন শৌচালয়।