অনলাইন ডেস্ক : শারদীয় উৎসবের আনন্দের আবহে এক অবাঞ্চিত ঘটনা ঘটে গেল শিলচরে। মঞ্চেই গায়িকার মারে আহত হলেন সতীর্থ যন্ত্রশিল্পী। যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ,তিনি একজন ‘বাউলশিল্পী’। পুলিশে এজাহার দিয়েছেন শিলচরের পরিচিত আক্রান্ত সিন্থেসাইজার বাদক দিবাকর দাস। ঘটনাটি ঘটে গত ২১ অক্টোবর দুর্গাপুজোর সপ্তমীর সন্ধ্যায়, তারাপুর মটোর স্ট্যান্ড পূজা কমিটি আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলাকালে।
সেদিন আমন্ত্রিত শিল্পী হিসেবে গান গাইতে মঞ্চে ওঠেন ‘বাউলশিল্পী’ শর্বাণী ভট্টাচার্য । তাকে সঙ্গত করার কথা ছিল দিবাকরের। সময়মতো না পৌঁছনোয় গায়িকা তাঁর ওপর চটে লাল হন। এরপর মটোর স্ট্যান্ডের অনুষ্ঠানস্থলে আসতেই ঘটে বিপত্তি। দিবাকর জানান, অল্পবিস্তর বাকবিতণ্ডা হওয়ার পরেই তাকে টেনেহিঁচড়ে মঞ্চে তোলেন শর্বাণী। দেরি করার কারণ প্রকাশ্যে বলতে এবং এ জন্য দর্শকদের সামনে ক্ষমা চাইতে দিবাকরকে বাধ্য করেন গায়িকা। তাঁর গায়ে হাতও তোলেন শিল্পী এবং তাঁর স্বামী…। হুমকি দেন দিবাকরের প্রাণনাশেরও। মারের চোটে কমবেশি রক্তাক্ত হন দিবাকর। ঠোঁটের ভিতরভাগে মারাত্মক চোট পান তিনি। তাছাড়া শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ঘটনার পাঁচদিন পরেও সেই চিহ্ন বহন করে বিছানায় শয্যাশায়ী দিবাকর। পুজো কমিটির কর্মকর্তাদের পরামর্শে তাঁর ওপর এই আক্রমণের বিস্তারিত জানিয়ে তারাপুর ফাঁড়িতে একটি এজাহার জমা দেন পরদিন অর্থাৎ অষ্টমীর দিন। এ বিষয়ে ‘বাউলশিল্পী’ শর্বাণী ভট্টাচার্যের সঙ্গে যোগাযোগ করলে জানান, দিবাকর সময়মতো না আসায় ভীষণ সঙ্কটে পড়তে হয় তাকে। দীর্ঘ অপেক্ষার পর অবশেষে সিন্থেসাইজার ছাড়াই গান গাইতে হয়। তিনটে গানের পর ফোনে জানতে পারেন, দিবাকর একটু আগে এলেও মঞ্চে ওঠেন নি। এতে রাগ চড়ে যায় শর্বাণীর। নীচে দিবাকরকে দেখতেই বচসা বাঁধে তাঁর। কারণ, শর্বাণীর অভিযোগ, দিবাকর তাঁকে অন্য যন্ত্রীকে সঙ্গে নিশে গাওয়ার কথা বলে টিপ্পনি কাটেন। এরপর তাকে কলার ধরে মঞ্চে তেলেন শর্বাণী ও তার স্বামী। দিবাকর নাকি প্রথমে ‘প্রাইভেট পার্টসে হাত দেন শর্বাণীর। এতে আরও রাগ বাড়ে। এরপরেই কলার ধরে মঞ্চে তোলেন তিনি। সেখানেই, প্রকাশ্য শ্রোতা-দর্শকের সামনে বেদম মারপিট করেন। প্রসঙ্গক্রমে জানান, তাঁর সঙ্গে দীর্ঘকাল সঙ্গত করে আসছেন দিবাকর। কিন্তু সেদিন অন্যান্য সহশিল্পী কয়েকজনের নাম করে তাদের দিয়ে অনুষ্ঠান করার কথা বলেন দিবাকর।সিন্থেসাইজার বাদক দিবাকর জানান, রংপুরে অন্য এক অনুষ্ঠান সেরে শহরে ব্যাপক যানজটে ফেঁসে তারাপুর পৌঁছতে দেরি হয়। এসে দেখেন, শর্বাণী গাইছেন। চুপচাপ নীচে বসে থাকেন।এরপর তার উপস্থিতি জেনেই ক্ষেপে যান ‘বাউলশিল্পী’ শর্বাণী। বাকবিতণ্ডার মধ্যেই তাকে মঞ্চে টেনেহিঁচড়ে তোলেন শর্বাণী ও তার স্বামী সৌমিত্র ভট্টাচার্য। উভয়েই মারধর করেন বলে জানিয়েছেন দিবাকর। বিষয়টি ঘিরে সংস্কৃতি মহলে বিশেষত সঙ্গতকারীদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। অনেকেই শর্বাণীর এ আচরণের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। সোসাল সাইটেও শুরু হয়েছে ব্যাপক সমালোচনা। প্রসঙ্গত, আক্রান্ত দিবাকর ও হামলার অভিযুক্ত শর্বাণী একসঙ্গে বহুকাল আগে থেকেই কাজ করছেন বলে উভয়েই স্বীকার করেন। দিবাকর জানান, ‘বাউলশিল্পী’ নামধারী শর্বাণীর ঔদ্ধত্য বহু আগে থেকেই চালিয়ে যাচ্ছেন।