অনলাইন ডেস্ক : শেষ পর্যন্ত ঐতিহ্যবাহী ক্যাপ্টেন নলিনীমোহন গুপ্ত স্মৃতি প্রাইজমানি আমন্ত্রণমূলক ফুটবল প্রতিযোগিতা করার জন্য প্রস্তুতি শুরু করেছে শিলচর জেলা ক্রীড়া সংস্থা (ডিএসএ)। মঙ্গলবার সংস্থার গভর্নিং বডির সভায় আগস্টে গুপ্ত ট্রফি আয়োজন করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরই নড়েচড়ে বসেছেন সংস্থার কর্মকর্তারা। সভায় চার দলীয় প্রতিযোগিতা করার সিদ্ধান্ত সর্ব সম্মতিতে গৃহীত হয়েছে। তবে প্রতিযোগিতা ছয়টি দলকে নিয়ে করার জন্যও কয়েকজন সদস্যের প্রস্তাব ছিল। তাদের যুক্তি ছিল চারদলীয় প্রতিযোগিতা হলে সেটা ক্রীড়া মহলে সেভাবে প্রভাব ফেলবে না। সোজা কথায় ফুটবল প্রেমীদের কাছে প্রতিযোগিতাটি জমবে না। কিন্তু আর্থিক ক্ষতির দিক বিবেচনা করে শেষ পর্যন্ত চারটি দলকে নিয়ে করার ব্যাপারেই সভা সায় দিয়েছে। সভার দশ নম্বর এজেন্ডায় ছিল ক্যাপ্টেন গুপ্ত ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজনের বিষয়টি। সচিব অতনু ভট্টাচার্যের নির্দেশে সহসভাপতি (ক্রীড়া) সুবিমল ধর চারদলীয় ও ছয় দলীয় প্রতিযোগিতার দুটি পৃথক বাজেট সভায় পেশ করেন। চারটি দলকে নিয়ে প্রতিযোগিতা করলে ১০ লক্ষ ও ছয়টি দলকে নিয়ে করলে ১৫ লক্ষ খরচ হতে পারে বলে জানান সুবিমল। সেক্ষেত্রে দুটি বাজেটেই প্রাইজমানি থাকবে একই। চ্যাম্পিয়ন দল ১ লক্ষ টাকা এবং রানার্স দলকে দেওয়া হবে ৫০ হাজার। চারটি সম্ভাব্য দলের নামও জানিয়ে দিয়েছেন সুবিমল ধর। সেগুলির মধ্যে শিলচরের সুপার ডিভিশন চ্যাম্পিয়ন দল, লক্ষীপুরের লেনরোল এফসি থাকছেই। এছাড়া বাকি দুটি দলের মধ্যে নাগাল্যান্ড পুলিশের সঙ্গে ইতিমধ্যেই আলোচনা শুরু করা হয়েছে। আই লিগ বি ডিভিশনের কোনও দলকে আনা যায় কিনা ভাবা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে লাজং এফসি বা আইজল এফসি-র কথাও ভাবা হচ্ছে। করিমগঞ্জ, হাইলাকান্দিকে এক্ষেত্রে ব্রাত্যই রাখা হয়েছে। সভায় সুবিমল সদস্যদের অবগত করার জন্য বলেছেন প্রতিযোগিতা আয়োজন করতে গিয়ে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে এটা অনিবার্য। অবশ্য দর্শকদের মাঠে প্রবেশের জন্য গেটমানি রাখা হবে। গ্যালারি ২০ টাকা ও ক্লাব হাউস ৫০ টাকা। এছাড়া আরও কুরিটির অধিক বিষয় নিয়ে সভায় আলোচনা হয়েছে। এরমধ্যে গুপ্ত ট্রফি শুরু হওয়ার আগেই ক্যাপ্টেন গুপ্ত স্মৃতি ফুটবল প্যাভিলিয়নের সংস্কার করা হবে।
গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের মধ্যে স্টেডিয়ামের পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য রাজ্য পাঁচ কোটি টাকা রিলিজ করায় মুখ্যমন্ত্রী ড.হিমন্ত বিশ্ব শর্মা,
তৎকালীন সাংসদ রাজদীপ রায় ও বিধায়ক দীপায়ন চক্রবর্তীকে ধন্যবাদ জানান হয়েছে।
সহসভাপতি (আদার্স) নীলাভ মৃদুল মজুমদারের ইস্তফার বিষয়টি উত্থাপন হলে সভাপতি শিবব্রত দত্ত জানান, নীলাভ মৃদুল মজুমদার তার খুবই হৃদ্যতার মানুষ। তাই অন্তত দশবার তাকে ইস্তফা পত্র প্রত্যাহারের অনুরোধ করেছেন। কিন্তু জিবি সদস্যরা একসুরে বলেন আরও একবার বাড়িতে গিয়ে তাকে অনুরোধ করা হোক। এরপর তার ইস্তফা পত্র গ্রহন করা হবে কিনা সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সে অনুযায়ী খুব শীঘ্রই সদস্যরা তার বাড়িতে গিয়ে তার ইস্তফা পত্র প্রত্যাহারের জন্য অনুরোধ জানাবেন। সঙ্গে অন্যান্য বিষয়ে আলোচনার সময় সাংস্কৃতিক সচিব প্রণব কুমার দে-র (কল্যাণ) দেওয়া ইস্তফা পত্র নিয়ে একই সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এছাড়া ব্যাডমিন্টন কোর্টের সংস্কার, টেবিল টেনিস ইন্ডোরের সংস্কার করতে জিবি-র অনুমোদন পাওয়া গেছে।
ডিএসএ-র প্রশাসনিক কাজ চালাতে আরও তিনটি নিয়োগ দিতে সভা অনুমতি দিয়েছে। পোস্ট গুলি হল – একজন অফিস সুপারিন্টেন্ডেন্ট, একজন অ্যাকাউন্টেন্ট ও একজন পিওন। এছাড়া আগের স্টাফদের কাজ অনুযায়ী ২০ – ৩০ শতাংশ বেতন বৃদ্ধি করা হবে।
গত একবছর সহকারী কোষাধ্যক্ষ পদটি খালি পড়ে ছিল। এই পদে রামকৃষ্ণ দেবকে আনা হয়েছে। ডিএসএ-র ফুটবল অ্যাকাডেমি গঠনের ব্যাপারটিও সভায় অনুমোদন পেয়েছে। অ্যাকাডেমির চেয়ারম্যান এবং কনভেনার কে হবেন সেটা স্থির করার দায়িত্ব সমঝে দেওয়া হয়েছে সংস্থার সভাপতি এবং সচিবের উপর।