অনলাইন ডেস্ক : পরীক্ষায় নকল রুখতে বড় ধরনের শাস্তির ফরমান দিয়েছে সরকার। এই পরিস্থিতিতে এবার পরীক্ষার চালচিত্র কেমন দাঁড়ায়, সেদিকে বিশেষ নজর রয়েছে শিক্ষানুরাগী মহলের। সোমবার উচ্চমাধ্যমিকের প্রথম দিন অন্তত কাছাড় জেলার বিভিন্ন পরীক্ষা কেন্দ্রের যা খবর পাওয়া গেছে, এতে এটুকু অবশ্যই বলা যায়, এবার নকলের কারবারিরা একটু হলেও সতর্ক। যার দরুন এপর্যন্ত কোনও অশান্তির খবর নেই। এসবের মাঝে এদিন জেলায় বেশ ভালো সংখ্যক পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত থাকার খবর পাওয়া গেছে।
এদিন ছিল উচ্চ মাধ্যমিকের ইংরেজি বিষয়ের পরীক্ষা। দিনের দ্বিতীয় ভাগে দুপুর দেড়টা থেকে শুরু হয় পরীক্ষা। কাছাড়ে পরীক্ষা গ্রহণ করা হচ্ছে মোট ২৯ টি পরীক্ষা কেন্দ্রে। জেলার স্কুল সমূহের পরিদর্শকের দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী জেলা আয়ুক্ত বহ্নিকা চেতিয়া জানিয়েছেন, এদিন কোনও পরীক্ষা কেন্দ্রেই নকল করতে গিয়ে কোনও পরীক্ষার্থীর ধরা পড়ার খবর নেই। তিনি দাবি করেন, সবকটি কেন্দ্রেই
কড়া নজরদারি ছিল, তাই পরীক্ষার্থীরা নকল করতে সাহস পায়নি। চেতিয়ার এই দাবি কতখানি সঠিক তা নিশ্চিত করে বলতে পারবেন যারা পরীক্ষা কেন্দ্রের ভেতরে ছিলেন তারাই। তবে এটা ঠিক, এদিন “নকলের পাঠশালা” বলে পরিচিত জেলার বিভিন্ন পরীক্ষা কেন্দ্রের বাইরে নকল সরবরাহকারীদের বিশেষ সক্রিয় হতে দেখা যায়নি। বিগত বছরগুলোতে পরীক্ষা চলাকালীন যা ছিল এক অতি পরিচিত দৃশ্য।
বাঁশকান্দির নেনামিয়া হায়ার সেকেন্ডারি স্কুল, লক্ষ্মীপুরের আর্ল হায়ার সেকেন্ডারি স্কুল, গনিরগ্রাম জে আর হায়ার সেকেন্ডারি স্কুল, পালংঘাট সিসি জেসি হায়ার সেকেন্ডারি স্কুল বা বড়যাত্রাপুরের সিরাজুল আলী হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলের মতো কিছু পরীক্ষাকেন্দ্র বিগত বছরগুলোতে নকলের জন্য বেশ দুর্নাম কুড়িয়েছে। পরীক্ষাকে ঘিরে ভেতরে অনেক কাণ্ডকারখানা চলার অভিযোগের পাশাপাশি এসব কেন্দ্রে বাইরে নকল সরবরাহকারীদের মেলা লেগে যেত। স্কুলের আশপাশের দোকানে দোকানে ভিড়, ভেতর থেকে আসা প্রশ্নপত্রের উত্তর জেরক্স করতে ব্যস্ত জেরক্স দোকানিরা, এমন চিত্র এবার কোথাও দেখা যায়নি বললেই চলে ।
জেলায় এবার পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১১,৯৭৮, এর মধ্যে ছাত্র-৫৬৭৯ এবং ছাত্রী-৬২৯৯। কলা শাখার পরীক্ষার্থী-৮৯৮৯, বিজ্ঞান শাখা-১৯৪১, বাণিজ্য শাখা-১০৩১ এবং ভোকেশনাল পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১৭। রাতে এ সংবাদ লিখা পর্যন্ত জেলার ২৯ টি পরীক্ষা কেন্দ্রের মধ্যে ১৮ টি কেন্দ্রের হিসেব পাওয়া গেছে। এই ১৮ টি কেন্দ্রের পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৬৯৫৬, এর মধ্যে এদিন অনুপস্থিত ছিল ২০১ জন। শতকরা হিসেবে২’৮৮ শতাংশ। উচ্চ মাধ্যমিকের প্রথম দিনই এতো পরীক্ষার্থীর অনুপস্থিত থাকাটা অনেকটাই নজিরবিহীন বলে অভিমত জেলার শিক্ষানুরাগী মহলের। শিক্ষানুরাগী মহলের বক্তব্য সাধারণত মাধ্যমিকে অনুপস্থিতির হার কিছুটা বেশি হয়ে থাকে। উচ্চমাধ্যমিকে এই হার থাকে খুবই কম। আর প্রথম দিনই এতো পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত, এটা মোটেই প্রত্যাশিত নয়। সরকারের কড়া মনোভাবের দরুন যারা নকলের উপর নির্ভরশীল তারা পরীক্ষা কেন্দ্রে হাজির হয়নি বলে মনে হচ্ছে।,নকল করে ধরা পড়লে কড়া শাস্তির মুখে পড়তে হবে এবং নকল না করলে পাশ করা সম্ভব নয়, অনুপস্থিতদের মধ্যে বেশিরভাগই এমন স্তরের পরীক্ষার্থী বলে অভিমত শিক্ষানুরাগী মহলের।