অনলাইন ডেস্ক : নির্দেশিকা লঙ্ঘন, সহিংসতা, উসকানি, সরকারি কর্মচারীদের কাজে বিঘ্ন ঘঠানো এবং সরকারি সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতির অভিযোগে রাহুল গান্ধী সহ অন্য কংগ্রেস নেতাদের বিরুদ্ধে রুজুকৃত মামলা সিআইডিকে হস্তান্তর করেছে আসাম পুলিশ। বুধবার এ কথা জানিয়েছেন খোদ অসমের পুলিশ-প্রধান (ডিআইজি) জ্ঞানেন্দ্ৰপ্ৰতাপ সিং। নিজের অফিশিয়াল এক্স হ্যান্ডলে এ খবর জানিয়ে জিপি সিং লিখেছেন, বশিষ্ঠ থানায় ভারতীয় ফৌজদারি আইনের ১২০(বি)/১৪৩/১৪৭/১৮৮/২৮৩/ ৩৫৩ (সরকারি কর্মচারীর উপর হামলা)/৩৩২ (ইচ্ছাকৃতভাবে সরকারি কর্মচারীকে কাজে বিঘ্ন ঘটানো)/৩৩৩ (সরকারি কর্মচারীকে কর্তব্য থেকে বিরত রাখতে স্বেচ্ছায় গুরুতর আঘাত করা) /৪২৭ এবং পিডিপিপি-র অধীন আর/ডব্লিউ-এর ৩ ধারায় ৫৫/২৪ নম্বরে রুজুকৃত মামলা সিআইডিকে হস্তান্তর করা হয়েছে। গতকাল ২৩ জানুয়ারি গুয়াহাটিতে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের রোড ইভেন্টের সময় প্রশাসনিক আইন লঙ্ঘন সম্পর্কিত মামলাটি এডিজিপির নেতৃত্বে গঠিত এসআইটির মাধ্যমে পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তের জন্য সিআইডি আসামের কাছে স্থানান্তর করা হয়েছে।
এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নির্ধারিত পথ পরিবর্তনের চেষ্টা, পুলিশের ব্যারিকেড ভাঙচুর এবং পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হওয়ার অভিযোগে মঙ্গলবার রাহুল গান্ধী সহ বেশ কয়েকজন কংগ্রেস নেতার বিরুদ্ধে গুয়াহাটির বশিষ্ঠ থানায় এফআইআর দায়ের করা হয়। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে রাহুল গান্ধীদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে বলে গতকাল তাঁর এক্স হ্যান্ডলে জানিয়েছিলেন পুলিশ-প্রধান জ্ঞানেন্দ্ৰপ্ৰতাপ সিং।
প্রসঙ্গত, পূৰ্ব নিৰ্ধারিত সূচি অনুযায়ী মঙ্গলবার মেঘালয় থেকে অসমে প্রবেশ করেছিল কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর ‘ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা’। নিৰ্বিঘ্নে জোড়াবাট, নয়মাইল এলাকা অতিক্ৰম করে খানাপাড়া তেমাথায় প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নির্ধারিত জাতীয় সড়ক ছেড়ে আচমকা গুয়াহাটি শহরে প্রবেশের চেষ্টা করেন কংগ্রেসের কর্মীরা। তাঁরা পুলিশের ব্যারিকেডে ভাঙচুর করে টপকে শহরে প্রবেশ করতে যান। তখন পুলিশের সঙ্গে বেশ ধাক্কাধাক্কি হয়। সামান্য দূর থেকে গোটা দৃশ্য উপভোগ করছিলেন যাত্রার হোতা রাহুল। এক সময় পুলিশের দিকে তেড়েফুঁড়ে যেতে থাকেন কংগ্রেস কর্মীরা। তখন তাঁদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠি চালায় পুলিশ।
এ ঘটনার পর রাজ্যের গৃহ দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা ডিজিপিকে নির্দেশ দেন, এ ধরনের কার্যকলাপ অসমিয়া সংস্কৃতির অংশ নয়। আমরা একটি শান্তিপূর্ণ রাজ্যে বসবাস করি। এদিনের সমগ্র ঘটনাকে ‘নকশালবাদী কার্যকলাপ’ বলে চিহ্নিত করে ভিড়কে উসকানি দেওয়ার অভিযোগে রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করার জন্য ডিজিপিকে নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। নির্দেশ পেয়ে বিলম্ব করেননি ডিজিপি। কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি এক্স হ্যান্ডলে জানান, সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে যাথাযথ কড়া আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এছাড়া, রাহুল গান্ধী যে জমায়েতকে উসকে দিচ্ছেন, প্রমাণ হিসেবে তার ফুটেজ সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করতেও ডিজিপিকে নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী শর্মা।