অনলাইন ডেস্ক : যানজটে পড়ে রোগী নিয়ে যাওয়া অ্যাম্বুলেন্স আটকে থাকছে দীর্ঘক্ষণ। আর এতে অনেক রোগীরই প্রাণ নিয়ে সৃষ্টি হচ্ছে সংশয়ের। গত কয়েকদিন ধরেই শিলচরের মেহেরপুর থেকে মেডিকাল কলেজ হাসপাতাল পর্যন্ত পথে বারবার দেখা যাচ্ছে এমন দৃশ্য। আর এসব দেখতে দেখতে মানবিকতার টানে এলাকার পুরুষ মহিলারা যানজট এড়ানোর লক্ষ্যে রবিবার ইট ক্রয় করে এনে পথে নেমে ভরাট করলেন গর্ত।
গর্ত ভরাটের ক্ষেত্রে মূলত উদ্যোগ নেন আমির লাল গোয়ালা নামে এক যুবক। তার উৎসাহে এগিয়ে আসেন পুরুষ মহিলা নির্বিশেষে এলাকার বহুলোক । চাঁদা তুলে ইট ক্রয় করে এনে তারা মেহেরপুরে গ্রীন পার্কের সামনে রাস্তার দুদিকে দুটি বড় বড় গর্ত সহ সাউথ সিটি হসপিটালের সামনে এমন মাপেরই আরও দুটি গর্ত ভরাট করেন। রবিবার ছুটির দিনে গর্ত ভরাট করতে নামা আমির লাল সহ মিঠুন রায়, সাবির আহমদ, গৌরী দাস গুপ্ত, বাপি সেন ও রতিশ দাস সহ অন্যান্যরা জানান প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত দেখা যায় বীরবল বাজার থেকে মেডিক্যাল পর্যন্ত লেগে রয়েছে যানজট। এলাকার বাসিন্দা হিসেবে তাই রাস্তায় বের হলেই ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হয় তাদের। কিন্তু নিজেদের ভোগান্তি থেকে বড় হয়ে দাঁড়ায় যখন দেখা যায় রোগী নিয়ে যাওয়া অ্যাম্বুলেন্সও ঘন্টার পর ঘন্টা আটকে পড়েছে যানজটে। নিজেদের ভোগান্তি থেকে তারা অনুধাবন করতে পারেন আটকে পড়া রোগী ও তার সঙ্গে থাকা পরিজনদের মানসিক অবস্থা কেমন হতে পারে। মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পাশাপাশি ওই এলাকায় রয়েছে বেশ কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতালও। তাই রোগীদের যাতায়াত লেগে থাকে দিনরাত। আর যানজটে রোগীদের নিয়ে যাওয়া এম্বুলেন্স বা অন্যান্য গাড়িকে আটকে থাকতে হয় দীর্ঘক্ষন। এসব দেখতে দেখতে তারা কয়েকজন মিলে এই যানজট কিভাবে এড়ানো যায় এনিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করেন। আর এমন চিন্তাভাবনার সূত্র ধরে নিজেরা পুরো এলাকা ঘুরে ঘুরে নিরীক্ষণের পর যানজটের মূল কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেন গ্রীন পার্কের সামনে ও সাউথ সিটি হসপিটালের সামনে থাকা কয়েকটি বড় বড় গর্তকে।
আমিরলাল ও মিঠুনরা বলেন, বীরবল বাজার থেকে মেডিকেল পর্যন্ত রাস্তার পরিসর এমনিতে খুব কম নয়। স্বাভাবিক অবস্থায় এতোটা যানজট হওয়ার কথা নয়। কিন্তু জল ও গ্যাসের পাইপলাইন বসানোর জন্য রাস্তার দুদিকে খোড়াখুড়ির দরুন যেন কমে গেছে পরিসর। ঘুরে ঘুরে নিরীক্ষণ করতে গিয়ে তারা দেখতে পান মূলত যানজট সৃষ্টি হচ্ছে গ্রীন পার্ক ও সাউথ সিটি হাসপাতালের সামনে থাকা কয়েকটি বড় বড় গর্তের দরুন। জলে ভরে থাকা এসব করতে গাড়ি উল্টে যাবার সম্ভাবনা থেকে যায়। তাই চালকরা এসব গর্ত এড়িয়ে যাবার চেষ্টা চালান। আর গর্তের এতটা জায়গা এড়াতে গিয়ে মুখোমুখি এসে যায় উভয় দিক থেকে আসা যানবাহন। আর এ থেকেই যানজটের সৃষ্টি হয়ে তা ছড়িয়ে পড়ে বীরবল বাজার থেকে মেডিকেল পর্যন্ত।
যানজটের মূল কারণ বড় বড় গর্তগুলো চিহ্নিত করার পর তারা চাঁদা তুলে ইট ক্রয় করে আনেন। এরপর রবিবার ছুটির দিনে এসব গর্তে বিছিয়ে দেন ইট। যাতে করে গর্ত ভরাট হয়ে আর যানজটের সৃষ্টি না হয়। তারা জানান গর্ত ভরাটের পর এদিন যানজট অনেকটাই কমে গেছে। এরপর এর সূত্র ধরে সরকারের কাছে আবেদন জানান, রাস্তার স্থায়ী কাজ হওয়ার আগে যেন আপাতত বীরবল বাজার থেকে মেডিকাল পর্যন্ত অন্যান্য গর্তগুলোও শীঘ্র ভরাট করা হয়। এতে করে ঘন্টার পর ঘন্টা আটকে থেকে রোগীদের প্রাণসংশয় হবে না।
তাদের কথায় তারা কয়েকটি বড় গর্ত ভরাট করার পরই যদি যানজট অনেকটা কমে যায় তবে বাকি গর্তগুলো ভরাট করা হলে নিশ্চিতভাবে অবস্থার আরও উন্নতি ঘটবে। অন্তত রোগীদের কথা ভেবে এমনটা করা খুবই জরুরী।