অনলাইন ডেস্ক : মা-বাবার উপস্থিতিতেই গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করল শিলচরের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এনআইটি)’র ষষ্ঠ সেমিস্টারের এক ছাত্র। পুলিশ জানিয়েছেন ছাত্রটির বাড়ি কামরূপ জেলায় এবং সে বহুদিন ধরে মানসিক অবসাদে ভুগছিল। তার এই পরিস্থিতির জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ এবং পরিবারের লোকেরা চিন্তিত ছিলেন। তার সঙ্গে সময় কাটাতে সম্প্রতি এনআইটিতে এসেছিলেন মা-বাবা। তাদের সঙ্গে গেস্ট হাউসে থাকতে দেওয়া হয়েছিল ছাত্রটিকে। তবে সেখানেই শৌচাগারে গিয়ে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করে সে।
সোমবার সকাল ১০টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে এবং খবর পেয়ে পুলিশের একটি দল এনআইটিতে গিয়ে ছাত্রটির ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করে। ঘুংগুর থানার পুলিশ আধিকারিক অংকুমণি কলিতা জানিয়েছেন, তারা মৃতদেহ উদ্ধার করে শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘প্রাথমিক তদন্তে এটা পরিষ্কার, এটি একটি আত্মহত্যার ঘটনা। এর পিছনে কি কারণ রয়েছে সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে বিষয়টি পরিষ্কার হবে।’
পুলিশ সুপার নুমাল মাহাত্তা জানিয়েছেন, এনআইটি শিলচরের চার নম্বর গেস্ট হাউসে ঘটনাটি ঘটে এবং তারা প্রাথমিক তদন্তে জানতে পারেন, ছাত্রটি বেশ কিছুদিন ধরে মানসিক অবসাদে ভুগছিল। তিনি বলেন, ‘তার এই সমস্যার কথা সবাই জানতেন এবং তাকে সুস্থ করে তুলতে তার পাশে এসে দাঁড়িয়েছিলেন মা বাবা। তাদের সঙ্গেই সে গেস্ট হাউসে থাকতে শুরু করে তবে দুর্ভাগ্যবশত সেখানেই গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করে। আমরা ঘটনার তদন্ত করছি এবং তার মা-বাবা সহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’
ঘটনার পর তার মা-বাবা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন এবং অনেক চেষ্টা করলেও তারা এবিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন নি। এনআইটি কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন তবে এব্যাপারে কোন প্রতিক্রিয়া দিতে চান না। গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে তৃতীয় সেমিস্টারের এক ছাত্র এভাবেই গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছিল। অরুণাচল প্রদেশের সেই ছাত্রের আত্মহত্যার পর তার সহপাঠীরা বহুদিন ধরে আন্দোলন করে। তাদের অভিযোগ ছিল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এক পদাধিকারী ছাত্রদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন। তার দুর্ব্যবহার সহ্য করতে না পেরে এই অরুণাচল প্রদেশের ছাত্রটি আত্মহত্যা করে। পরে ছাত্রদের দাবি মেনে ওই ব্যক্তিকে তার পদ থেকে হটিয়ে দেন এনআইটি কর্তৃপক্ষ। এতে আন্দোলন থামে এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।