অনলাইন ডেস্ক : এবার হিংসার আগুনে পুড়ল মণিপুরের একমাত্র মহিলা মন্ত্রী নেমচা কিপগেনের বাড়ি। বুধবার গভীর রাতে ইম্ফল পশ্চিম জেলার লামফেল এলাকায় নেমচা কিপগেনের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। যদিও সেই সময়ে বাড়িতে ছিলেন না নেমচা কিপগেন।
মণিপুরের শিল্পমন্ত্রী নেমচা কিপগেন কাংপোকপি কেন্দ্রের কুকি উপজাতির বিজেপি বিধায়ক। গত মাসের ৩ তারিখ থেকে কুকি এবং মৈতেই সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। এই জাতি সংঘর্ষ শুরুর পরে যে ১০জন কুকি বিধায়ক সেখানকার আদিবাসী-উপজাতিদের জন্য আলাদা প্রশাসনের দাবি করেন। তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন নেমচা কিপগেন। অশান্তির শেষ নেই হিংসা বিধ্বস্ত মণিপুরে। গত কয়েকদিনে নতুন করে অশান্তি এবং হিংসা ছড়িয়েছে মণিপুরে। কারা মন্ত্রীর বাড়িতে এই আগুন লাগিয়েছে তা এখনও জানা যায়নি। যদিও কুকিদের অভিযোগ, মৈতেই সম্প্রদায়ের মানুষের দিকেই।
জানা গেছে, চেকন এলাকায় মৈতেই, কুকি, মুসলমান এবং বাঙালি জনগোষ্ঠীয় মানুষ বসবাস করেন। এদিকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন থাকার পরও কী করে মিশ্র জনগোষ্ঠী অধ্যুষিত অঞ্চলে দুর্বৃত্তরা নাগরিকের ঘরে অগ্নিসংযোগ করল, সে রহস্য উদ্ঘাটনে তদন্ত করছে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, গত ১৩ জুন রাতে নতুন করে সংগঠিত সহিংসতার ঘটনায় ১১ জনের মৃত্যু এবং ২৫ জন আহত হয়েছেন। ঘটনা ওই দিন রাতে ইম্ফল পূর্ব এবং কাংপোকপি জেলার সীমান্তবর্তী আইগেজাং গ্রামে সংগঠিত হয়েছে।
অন্যদিকে, নিরাপত্তা বাহিনীর তরফে জানানো হয়েছে, মঙ্গলবার মধ্য রাত থেকে শুরু হওয়া অশান্তি নিয়ে রিপোর্ট জমা দেওয়া হবে রাজ্য নিরাপত্তা পরামর্শদাতা কুলদীপ সিংকে। সেনাবাহিনীর তরফে সন্দেহ, মঙ্গলবার মধ্য রাতে খামেনলোক গ্রাম ঘিরে ফেলা, সাধারণ মানুষের উপরে গুলি চালানো, বাড়িঘরে আগুন লাগিয়ে দেওয়া এবং তারপরে রাস্তা আটকে দেওয়ার গোটা ঘটনাটিই পূর্ব পরিকল্পিত হতে পারে। কারণ অশান্তির আগের দিন, সোমবারও খামেনলোকের চানুঙ্গ অঞ্চলের রাস্তা আটকে রেখেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। খামেনলোকের আশেপাশে আটটি গ্রাম সম্পূর্ণ জ্বালিয়ে দেওয়ার খবর মিললেও হাজারো প্রচেষ্টা করেও সেনা বাহিনীর ২০০ জওয়ান ও অসম রাইফেলসের ২৫০ জওয়ান ঘটনাস্থলগুলিতে পৌঁছতে পারেননি। এমনকী, খামেনলোক গ্রামের অন্দরেও সেনাকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি বলেই জানা গিয়েছে।
প্রসঙ্গত, মৈতেই জনজাতির সংরক্ষণ নিয়ে গত মে মাসের শুরু থেকে যে অশান্তি শুরু হয়েছে মণিপুর জুড়ে, তাতে এখনও অবধি কমপক্ষে ১২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। কেন্দ্রের তরফে কার্ফু, ইন্টারনেট ব্যান থেকে শুরু করে সেনা মোতায়েনের মতো একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলেও অশান্তি রোখা সম্ভব হয়নি এখনও।