অনলাইন ডেস্ক : জাতি দাঙ্গায় বিধ্বস্ত পড়শী রাজ্য মণিপুর। বর্তমানে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলেও হিংসাত্মক ঘটনার খবর পাওয়া যাচ্ছে প্রায়শই। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের পথ খুঁজতে বরাকের মণিপুরিদের ঐক্যবদ্ধ করার প্রয়াস শুরু করেছে অল আসাম মণিপুরি ইয়ুথস অ্যাসোসিয়েশন (আমিয়া)। শিলচরের অনতিদূর দুধপাতিল গ্রামে আগামী ১৭ ডিসেম্বর ‘মণিপুরি ইউনিটি কনভেনশন’ শিরোনামে এক সম্মেলনের ডাক দিয়েছে সংস্থা। এতে মুখ্য অতিথি হয়ে আসছেন মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহ।
অ্যাসোসিয়েশনের মুখ্য উপদেষ্টা কুন্দল ক্ষেত্রিমায়ুম দৈনিক সাময়িক প্রসঙ্গকে জানিয়েছেন, মণিপুরের বর্তমান পরিস্থিতিকে সামনে রেখে বরাকের মৈতৈ, বিষ্ণুপ্রিয়া ও পাঙ্গাল— মণিপুরি সম্প্রদায়ের এই তিনটি শাখাকে ঐক্যবদ্ধ করার লক্ষ্যে-ই মণিপুরি ইউনিটি কনভেনশন-এর উদ্যোগ। তিনি উল্লেখ করেন, সম্মেলন শুরু হবে সকাল ৮টায়। এরপর বেলা ১টা থেকে প্রকাশ্য সমাবেশ। তিন শাখার অন্তত ১০ হাজার মণিপুরি যোগ দেবেন সম্মেলনে। সেখানে বসেই স্থির হবে মণিপুরে শান্তি প্রতিষ্ঠার ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা। তিনি আরও বলেন, আগামী ১০ ডিসেম্বর মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহ বরাকে আসবেন বলে ভূয়া প্রচার চলছে।
এক প্রশ্নে কুন্দল ক্ষেত্রিমায়ুম বলেন, মণিপুরে গণহত্যার যথাযথ বিচার হতে হবে। তাঁর কথায়, সুবিচার ব্যতিরেকে শান্তি আলোচনা কখনও ফলপ্রসূ হবে না। তাই আগে পুরো ঘটনার তদন্ত হোক। যে পক্ষ-ই দোষী সাব্যস্ত হোক না কেন, আইনানুগ তাদের বিচার হবে। তারপরই আলোচনায় বসা হবে।
মণিপুর ইস্যুতে মিজোরাম সরকারের ভূমিকা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। একই সঙ্গে মণিপুর থেকে “আসাম রাইফেলস” অপসারণের দাবি জানান। বলেন , “আসাম রাইফেলস “-এর বিভিন্ন সন্দেহজনক ভূমিকায় তাদের উপর আস্থা হারিয়ে ফেলেছেন মণিপুরিরা। তাই বিকল্প বাহিনীকে সেখানে পাঠানো হোক, যাতে বিশ্বাসযোগ্যতা প্রতিষ্ঠিত হয় । তিনি আরও বলেন , কুকিরা হিংসার পথ পরিহার না করলে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।পাশাপাশি কুকি সমাজের একাংশের মাধ্যমে দীর্ঘকাল ধরে যে ‘ ড্রাগ -সাম্রাজ্য’ গড়ে তোলা হয়েছে , তা উৎখাত করতে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। তিনি দাবি করেন আন্তর্জাতিক ড্রাগ -পাচার চক্র রুখতে মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহ কড়া পদক্ষেপ করেছিলেন। এরই প্রতিক্রিয়াতে অশান্ত হয়েছে মণিপুর। ইতিহাসের এই বর্বরোচিত- কলঙ্কজনক এই অধ্যায়কে কখনও মুছে ফেলা যাবে না ।
অ্যাসোসিয়েশন-এর উপদেষ্টা রাজেশ হদাম, সিনিয়র সহ-সভাপতি অনিল খন্ডাম, সাধারণ সম্পাদক নংপক এনএম, অর্থ -সচিব আপ্পু সিংহ প্রমুখরা সাফ জানিয়ে দেন, মিজোরামের বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী জোরাম থাঙ্গা এবং সদ্য -নির্বাচিত লালডুয়ামা যে ভাবে সংকীর্ণ রাজনীতি করছেন এবং বৃহত্তর মিজোরাম গঠনের চক্রান্তে ইন্ধন যুগিয়ে যাচ্ছেন, তা অত্যন্ত নিন্দনীয়। এর বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকবে অল আসাম মণিপুরি ইয়ুথস অ্যাসোসিয়েশন।