অনলাইন ডেস্ক : ভয়ঙ্কর ভূমিঙ্খলনের জেরে লামডিং-শিলচর পাহাড় লাইনে ট্রেন চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে পড়ে। ডিমা হাসাও জেলায় লাগাতার বৃষ্টির জেরে লামডিং-শিলচর পাহাড় লাইন অনির্দিষ্টকালের জন্য রেলপথ বন্ধ হয়ে পরার দরুন পাহাড়া লাইনে সব ধরণের ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। কিন্তু উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেল কর্তৃপক্ষ এখনও সরকারি ভাবে ট্রেন চলাচল বাতিল করে নি। কিন্তু উল্টো রেলপথ বন্ধ থাকার পর ও শিয়ালদাহ শিলচর কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস ট্রেনটিকে নিউহাফলং স্টেশনে নিয়ে আসা হয়েছে। এতে যাত্রীরা প্রচন্ড দূর্ভোগের মুখে পড়েছেন। পাহাড়ে লাগাতার বর্ষনের দরুন পাহাড় লাইনের নিউজাটিঙ্গা লামপুর ও নিউহারাঙ্গাজাও স্টেশনের মধ্যবর্তী ১১৬/৩/৪ কিলোমিটার ও ১১৭ কিলোমিটারের পাশে ১৪ নম্বর টানেলের দ্বিতীয় ফেজে পাহাড় থেকে নেমে আসা জলের পাহাড় ধসে নিয়ে এসে সম্পূর্ণ টানেল বন্ধ হয়ে পড়ে তাছাড়া ওই অংশের ১০০ মিটার এলাকা সম্পূর্ণ জল ও মাটির তলায় রয়েছে। তাছাড়া পাহাড় থেকে নেমে আসা জলের স্রোতে রেল ট্র্যাকের নীচের মাটি ধসে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এতে করে ধস সড়িয়ে তিন চার দিনের আগে পাহাড় লাইন সচল হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। কিন্তু তবু ও উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেল কর্তৃপক্ষ শিয়ালদাহ-শিলচর কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস ট্রেনটি লামডিং স্টেশনে নিয়ন্ত্রন না করে নিউ হাফলং স্টেশনে নিয়ে আসা হয়েছে। অন্যদিকে আগরতলা থেকে গুয়াহাটি পর্যন্ত একমুখী স্প্যাশাল ট্রেনটিকে বদরপুর স্টেশনে নিয়ন্ত্রন না করে নিউহারাঙ্গাজাও স্টেশন পর্যন্ত নিয়ে আসা হয় কিন্তু নিউ হাফলং স্টেশন ও নিউহারাঙ্গাজাও স্টেশনে খাবার ও জলের অভাবে রেল যাত্রীদের প্রচণ্ড দূর্ভোগের মধ্যে পড়তে হয়েছে। রেলের এখন কাণ্ডজ্ঞানহীন কাজে রেল যাত্রীদের মধ্যে প্রচন্ড ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। এদিকে ধস নেমে পাহাড় লাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ার দরুন রেলপথে ডিমা হাসাও বরাক উপত্যকা সহ ত্রিপুরা মনিপুর ও মিজোরাম বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। তবে কবে নাগাদ পাহাড় লাইনে রেল চলাচল সচল হয়ে উঠবে এনিয়ে সরকারি ভাবে উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেল কর্তৃপক্ষ কিছুই জানাতে পারল না ।
জাটিঙ্গা লামপুর ও নিউ হারাঙ্গাজাওয়ের মধ্যবর্তী ১১০/৭ কিলোমিটার অংশে লাইন মেরামতি ও পাহাড় লাইনে ধস নামায় পাহাড় লাইনে ৩ মে থেকে ১০ মে পর্যন্ত ১৫৬১৫/১৫৬১৬ শিলচর-গুয়াহাটি-শিলচর এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রা দুদিক থেকে যাত্রা বাতিল করা হয়েছে। ৪ মে এবং ৮ মে ১৫৮৮৭/১৫৮৮৮ গুয়াহাটি বদরপুর গুয়াহাটি ট্যুরিষ্ট স্প্যাশাল ট্রেনের যাত্রা বাতিল করা হয়েছে। ১৫৬১১ রঙিয়া শিলচর এক্সপ্রেস ট্রেনের রঙিয়া থেকে যাত্রা বাতিল করা হয়েছে ৪ মে থেকে ৯ মে পর্যন্ত। ১৫৬১২ শিলচর-রঙিয়া এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রা শিলচর থেকে ৫ থেকে ১০ মে পর্যন্ত বাতিল করা হয়েছে। ১৫৬১৭ গুয়াহাটি-দুল্লভছড়া এক্সপ্রেস ট্রেনটি ৪ মে থেকে ৮ মে পর্যন্ত গুয়াহাটি থেকে যাত্রা বাতিল করা হয়েছে। ১৫৬১৮ দুল্লভছড়া গুয়াহাটি এক্সপ্রেস ট্রেনের দুল্লভছড়া থেকে ৫ মে থেকে ৯ মে পর্যন্ত বাতিল থাকবে। ১৫৬৪১/১৫৬৪২ শিলচর-নিউতিনসুকিয়া-শিলচর এক্সপ্রেস ৪ মে ও ৫ মে শিলচর ও নিউতিনসুকিয়া থেকে যাত্রা বাতিল করা হয়েছে। অন্যদিকে ০৫৬৩৮/০৫৬৩৭ শিলচর নাহারলগুন-শিলচর বিশেষ যাত্রীবাহী ট্রেনের যাত্রা ৬ মে এবং ৭ মে শিলচর ও নাহারলগুন থেকে বাতিল থাকবে। তাছাড়া ১৩১৭৩ শিয়ালদাহ কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস ট্রেন ২ মে থেকে ৯ মে পর্যন্ত লামডিং ও আগরতলার মধ্যে যাত্রা আংশিক বাতিল থাকবে। ১৩১৭৫ শিয়ালদাহ-শিলচর আগরতলা এক্সপ্রেস ট্রেন মে থেকে ৮ মে পর্যন্ত লামডিং ও শিলচরের মধ্যে যাত্রা আংশিক বাতিল থাকবে। ১৩১৭৪ আগরতলা-শিয়ালদাহ কাঞ্চজঙ্ঘা এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রা ৪মে থেকে ৯ মে পর্যন্ত আগরতলা থেকে লামডিং পর্যন্ত আংশিক বাতিল থাকবে। ১৩১৭৬ শিলচর-শিয়ালদাহ এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রা ৩ মে থেকে ১০ মে পর্যন্ত শিলচর থেকে লামডিং পর্যন্ত আংশিক বাতিল করা হয়েছে। অন্যদিকে ০৭০২৯ সেকেনদ্রাবাদ আগরতলা বিশেষ যাত্রীবাহী ট্রেন সেকেনদ্রাবাদ সকাল ৬ টা ২০ মিনিটের পরিবর্তে ২৩ টা ৫০ মিনিটে সিকেন্দ্রাবাদ থেকে ছাড়বে ৩ মে জানিয়েছে উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেল কর্তৃপক্ষ। এদিকে নিউহাফলঙে আটকে থাকা শিয়ালদাহ-শিলচর কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস ট্রেনটিকে এবং আগরতলা থেকে গুয়াহাটি অভিমুখী একমুখী ট্রেনটিকে ১৪ টানেলের কাছে রেল লাইনের ধস সড়িয়ে ট্রেন দুটিকে শিলচর ও গুয়াহাটির উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হয়।