অনলাইন ডেস্ক : কাছাড় -সহ গোটা রাজ্যে জাল চিকিৎসকের ছড়াছড়ি নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে উঠে আসছিল অভিযোগ। ঘটনার গুরুত্ব অনুধাবন করে এ ব্যাপারে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বিভিন্ন মহল। জনস্বাস্থ্য নিয়ে এহেন গুরুতর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কড়া মনোভাব পোষণ করে সরকার। যার পরিপ্রেক্ষিতে কাছাড়ে ভুয়ো চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করল জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। মঙ্গলবার সংবাদমাধ্যমের কাছে এ খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন জেলা যুগ্ম স্বাস্থ্য সঞ্চালক ডাঃ আশুতোষ বর্মন। তিনি জানান, ভুয়ো চিকিৎসকের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে গঠন করা হয়েছে তদন্ত কমিটি। সঙ্গে প্রতিটি ব্লক প্রাইমারি হেলথ সেন্টার (বিপিএইচসি) প্রধান-কে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, আশেপাশে কোনও ভুয়ো চিকিৎসকের দেখা মিললে সেটা যেন দ্রুত জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের নজরে আনা হয়। যাতে ভুয়ো চিকিৎসকের বিরুদ্ধে তড়িঘড়ি ব্যবস্থা নিতে পারে স্বাস্থ্য বিভাগ। কাছাড়ের প্রত্যন্ত অঞ্চল-ই শুধু নয়, অল্টারনেটিভ মেডিসিন-এর ওপর এমবিবিএস ডিগ্রি এমনকি জাল নথি সংগ্রহ করে বহু চিকিৎসক শিলচরের একাধিক প্রতিষ্ঠিত স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে রোগী দেখছেন বলে অভিযোগ। কিছুদিন আগে সোনাই শহরে এরকম এক ভুয়ো ডিগ্রিধারী চিকিৎসক বৈধ অনুমতি ছাড়াই চেম্বার সহ খুলে বসেছিলেন বিশাল নার্সিংহোম। পরে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে ফার্মাসি -সহ সেই নার্সিংহোম সিল করে তালা ঝুলিয়ে দেয় প্রশাসন। সাম্প্রতিককালে এ ধরনের আরও কয়েকটি ঘটনায় প্রশাসন কড়া পদক্ষেপ করলেও ভুয়ো চিকিৎসকদের নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি। অনেকেই হেকিম কিংবা বৈদ্য ডিগ্রি নিয়েও চেম্বার খুলে রোগী দেখছেন। কিন্তু ইউনানি বা আয়ুর্বেদিক ওষুধের পরিবর্তে দিব্যি এলোপ্যাথি ওষুধ লিখছেন ব্যবস্থাপত্রে। জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে এমনসব হাতুড়ে চিকিৎসক রয়েছেন, যাদের পসার-প্রতিপত্তি পাশ করা চিকিৎসক থেকে কোনও অংশে কম নয়। এদের চলনবলন এবং ঠাটবাট দেখে বিভ্রান্ত হচ্ছেন গ্রামের সাধারণ মানুষ। আর এইসব মানুষের অজ্ঞতাকে পুঁজি করে অর্থের পাহাড় গড়ছেন ভুয়ো চিকিৎসকরা। আশঙ্কার কথা হচ্ছে, হাতুড়ে চিকিৎসকদের পাল্লায় পড়ে জীবনের ঝুঁকি নিচ্ছেন রোগীরা। এমন পরিস্থিতিতে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের এই পদক্ষেপ কিছুটা হলেও আশার আলোর সঞ্চার করবে বলে মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ। জেলা যুগ্ম স্বাস্থ্য সঞ্চালক ডাঃ আশুতোষ বর্মন জানিয়েছেন, বেসরকারি হাসপাতালে এ ধরনের চিকিৎসক নিযুক্ত থাকার অভিযোগ সত্য কি-না, যাচাই করে দেখবে তদন্ত কমিটি। কমিটির রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে পদক্ষেপ করবে স্বাস্থ্য বিভাগ। এ ব্যাপারে কাউকে তিলমাত্র ছাড় দেওয়া হবে না। কারণ, বিষয়টি মানুষের জীবন-মরণের প্রশ্ন।