অনলাইন ডেস্ক : শিলচর শহরে ভূমাফিয়াদের উৎপাত দিন দিন বেড়েই চলেছে। বিশেষ করে শহরের আশ্রম রোড, কলেজ রোড, ন্যাশনাল হাইওয়ে এলাকার পুরনো বাসিন্দারা ভূমাফিয়াদের দাপটে শান্তিতে বসবাস করতে পারছেন না। এবার ভূমাফিয়াদের নজর পড়েছে প্রয়াত প্রাক্তন কংগ্রেস নেতা প্রদীপ নন্দীর বসতবাড়ির ওপর। দিন দুপুরে লাঠিসোঁটা, ধারালো শস্ত্র হাতে দলবল নিয়ে সুভাষনগর ও কলেজ রোডের সংযোগস্থলে তিস্তা এপার্টমেন্টের পেছনে থাকা প্রদীপবাবুর বাড়িতে চড়াও হয়ে তাঁর স্ত্রী এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের উপর হামলা চালানো হয়। এ ঘটনায় ওই এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, গত ৩ নভেম্বর হামলার এই ঘটনা ঘটে। প্রয়াত নন্দীর গুরুতর আহত স্ত্রী তৃষা নন্দী পরিবারের সদস্যদের সুরক্ষা চেয়ে ঘটনার বিস্তারিত উল্লেখ করে শিলচর সদর থানায় এক মামলা দায়ের করেন। এতে তিনি শিলচর আশ্রম রোড সংলগ্ন মালিনী বিল এলাকার অঞ্জন চৌধুরী এবং সজলকান্তি দাস সহ অন্যান্যদের অভিযুক্ত করেন। অভিযোগের সত্যতা যাচাই করে শিলচর সদর পুলিশ মামলাটি নথিভুক্ত করে। ২১২৭/২০২৩ নম্বরের মামলাটি পুলিশ ভারতীয় দন্ডবিধির ৪৪৮, ৩৫৪, ৩২৫, ৫০৬ এবং ৩৪ ধারায় নথিভুক্ত করে তদন্ত শুরু করেছে।
মামলায় উল্লেখ করা বয়ান অনুযায়ী, ঘটনার দিন বিকেল তিনটা নাগাদ উল্লিখিত দুই ব্যক্তি সহ অন্যান্যদের নেতৃত্বে শতাধিক পুরুষ ও মহিলা তাদের বাড়িতে চড়াও হয়। দা, রড, লাঠি, কুড়াল ইত্যাদি সহযোগে ঘরে ব্যাপক ভাংচুর চালায় তারা। কোনও কারণ ছাড়াই সবাইকে ঘর থেকে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য হুমকি দিতে থাকে। সেই সময় অভিযুক্তদের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে তৃষা নন্দী মেঝেতে ছিটকে পড়েন। এতে তাঁর পা ভেঙে যায়। সেই সময় বাড়িতে থাকা তাঁর মেয়ে সঞ্চিতা নন্দী ধর, নাতি দেবানু ধর এবং কাজের শ্রমিক লালু মিয়া লস্করকেও মারধর করে দুষ্কৃতিরা। শারীরিক অসুস্থতার কারণে মামলা দায়ের করতে খানিকটা বিলম্ব হয়েছে, একথা উল্লেখ করে ঘটনার তদন্তক্রমে দোষীদের বিরুদ্ধে বিহীত ব্যবস্থা গ্রহণের আর্জি জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, প্রয়াত প্রদীপ নন্দীর এই বাড়ি নিয়ে কয়েকবছর ধরে বিবাদ চলছে। এ নিয়ে শিলচর আদালতে একটি মামলাও বিচারাধীন। তবে এদিনের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের সঙ্গে তাদের কোনও সম্পর্কই নেই বলে জানিয়েছেন তৃষা নন্দী। কাছাড়ের পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করেও তাদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা সহ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের আর্জি জানিয়েছেন তিনি।