গুয়াহাটি, ২১ ডিসেম্বর : অসমে বেদখলকারীদের বিরুদ্ধে উচ্ছেদ অভিযান সম্পর্কে তাঁর সরকার গৃহীত কঠোর স্থিতি থেকে একচুলও সরে আসবে না, মঙ্গলবার রাজ্য বিধানসভার শীতকালীন অধেবিশনের দ্বিতীয় দিন সাফ জানিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্ৰী হিমন্তবিশ্ব শর্মা। নগাঁও জেলার বটদ্রবা এবং অসমের বিভিন্ন প্রান্তে রাজ্য প্রশাসনের উচ্ছেদ অভিযানকে কেন্দ্র করে গতকাল বিধানসভার ভিতরে এবং বাইরে বিরোধীরা হইচই ফেলে দিয়েছিলেন। এর ওপর জবাব দিতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্ৰী শৰ্মা উচ্ছেদ সম্পর্কে তাঁর সরকার যে কঠোর স্থিতি অবলম্বন করেছে তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন।
মুখ্যমন্ত্ৰী বলেন, ‘রাজ্যে যতদিন বিজেপি সরকার ক্ষমতায় থাকবে, ততদিন উচ্ছেদ চলবেই। যাদের পাট্টা নেই কেবল তাদেরই উচ্ছেদ করেছি।’ তিনি বলেন, ‘গত ৭৫ বছর ধরে কংগ্ৰেস সরকার তাদের পাট্টা দেয়নি। কংগ্ৰেস তাদের নিরাপত্তাহীন অবস্থায় রেখে রাজনীতি করেছে। ৭৫ বছর পাট্টা না দিয়ে এই কংগ্রেস এখন বটদ্ৰবার উচ্ছেদ নিয়ে মায়াকান্না জুড়েছে। আজ না কেঁদে, আগে কাঁদা উচিত ছিল। এমন-কি, ওই অঞ্চলে একটি ভালো বিদ্যালয়ও দেয়নি কংগ্ৰেস।’
উচ্ছেদের শিকার মানুষজনের উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্ৰী হিমন্তবিশ্ব শর্মা বলেন, ‘তাদের ভোট আমাদের প্রয়োজন নেই। নিৰ্বাচনী ইস্তাহারে আমরা বলেছিলাম, মাত্র দেড় বছরে সবকিছু আমি করতে পারব না। বটদ্ৰবায় যার যার প্ৰকৃত ভূমি নেই, তাদের ভূমি দিতে জেলাশাসককে বলেছি। যাদের পাট্টা নেই, অথচ ভূমি বেদখল করে আছেন, কেবল তাদেরই আমরা উচ্ছেদ করেছি৷’
তিনি বলেন, ‘গোয়ালপাড়ায় উচ্ছেদ অভিযান চালাতে উচ্চ আদালত নিৰ্দেশ দিয়েছে। নিম্ন অসমের মানুষ পরিবার পরিকল্পনা না মানলে ৫০ বছর পর মরতে হবে৷ আদালত বলেছে, ভূমির ব্যবস্থা করে দাও। কিন্তু আমি কোথা থেকে ভূমির জন্ম দেব?’ মুখ্যমন্ত্ৰী আরও বলেন, ‘গোয়ালপাড়া কংগ্ৰেস বিধায়করা হাইকোৰ্টে পিটিশন দিন উচ্ছেদ না চালাতে৷ পিটিশন না দিয়ে পরে কেঁদে-কুটে কোনও লাভ হবে না।’ নিয়ম অনুযায়ী উচ্ছেদ চলতে থাকবে বলে হিমন্তবিশ্ব বলেন, ‘সত্ৰের (ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান) জমি যারা দখল করে আছেন, এখনও সময় আছে, সরে যান। আমি বিনম্ৰতার সঙ্গে বলছি, সত্ৰের আশপাশ এলাকা থেকে সরে যান৷’
আন্তঃরাজ্য সীমা সমস্যা সম্পৰ্কে মুখ্যমন্ত্ৰী শর্মা বলেন, ‘মিজোরাম সীমান্তে অসম পুলিশ চরম ত্যাগ করেছে। এখনও একজন পুলিশ সুপার মুম্বাইয়ের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।’ মুখ্যমন্ত্ৰী বলেন, উত্তর-পূৰ্বাঞ্চলকে শক্তিশালী করার দিকে এগোচ্ছি আমরা। আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে এগোচ্ছি। মেঘালয়ের সঙ্গে ইতিবাচক আলোচনা চলছে, অরুণাচলের সঙ্গেও আলোচনা বহু এগিয়েছে, নাগাল্যান্ডের সঙ্গে সৌহাৰ্দ্যপূৰ্ণভাবে আলোচনা এগোচ্ছে। যে সব বিষয়ে কঠোর হওয়া দরকার, সে সব ব্যাপারে কঠোর হয়েছি, বলেন মুখ্যমন্ত্ৰী শৰ্মা। (হি.স.)