সাময়িক প্রসঙ্গ অনলাইন ডেস্ক
করিমগঞ্জ : ১৯৭২ সালে দ্বিতীয় পর্যায়ের মাতৃভাষা আন্দোলনে শহিদ হয়েছিলেন বিজন চক্রবর্তীর (বাচ্চু)। বুধবার ছিল তাঁর শহিদত্ব বরণের পঞ্চাশতম বর্ষপূর্তি দিবস। শহরের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে ১৭ আগস্ট ভাষা শহিদ দিবসের পঞ্চাশতম বর্ষপূর্তি কমিটি গঠন করে বর্ষব্যাপী অনুষ্ঠানের কর্মসূচি নেওয়া হয়। এদিন এই কর্মসূচির ছিল সূচনা পর্বের দিনব্যাপী অনুষ্ঠান। সকাল নয়টায় শম্ভুসাগর পার্কের কেন্দ্রীয় শহিদবেদীতে মাল্যদান, বরাক উপত্যকার চার পর্যায়ের মাতৃভাষা শহিদদের স্মরণ, অভ্যাগতদের ভাষণ, কবিতাপাঠের আসর, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং সঙ্গীত বিদ্যালয়গুলির সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
বুধবার উদ্বোধনী সঙ্গীত পরিবেশন করেন অরূপরতন দাস, সম্যদীপ পুরকায়স্থ, সুস্মিতা চক্রবর্তী। শহিদ বেদীতে মাল্যদান করেন পঞ্চাশতম বর্ষপূর্তি উদযাপন কমিটির পক্ষে সঞ্জেন্দু নাথ, শিবানি বিশ্বাস, বরাক উপত্যকা বঙ্গসাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ড.রাধিকারঞ্জন চক্রবর্তী, করিমগঞ্জ জেলা কমিটির সম্পাদক নিশিকান্ত ভট্টাচার্য, শহর সমিতির ড.সব্যসাচী রায়, শহিদ পত্নী মীরা চক্রবর্তী, মাতৃভাষা সুরক্ষা সমিতির স্বপন বনিক, বিষ্ণুপদ নাগ সহ উপস্থিত বিদগ্ধজনেরা। শিবানি বিশ্বাসের সভাপতিত্বে সংক্ষিপ্ত সভায় বক্তব্য রাখেন উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক ড. রাধিকারঞ্জন চক্রবর্তী, মাতৃভাষা সুরক্ষা সমিতির পক্ষে গৌতম চৌধুরী, সমাজসেবী অরুনাংশু ভট্টাচার্য, ড.সব্যসাচী রায়, ১৯৬১ ইংরাজির মাতৃভাষা আন্দোলনের সেনানী প্রাক্তন বিধায়ক নিশীথরঞ্জন দাস প্রমুখ।
সুপ্রিয় দেব তাঁর ভাষণে বলেন, আমাদের মাতৃভাষা আজও আক্রান্ত। এই আক্রমণ আজ বহুমুখী।এর বিরুদ্ধে লড়াই করেই মাতৃভাষার অধিকারকে রক্ষা করতে হবে।অন্যদিকে ড. রাধিকারঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, আজকের প্রজন্মকে উপত্যকার ভাষা সংগ্রামের ইতিহাস জানতে হবে, তাদের উত্তরাধিকারের কথা জানতে হবে। তিনি বলেন, বিজন চক্রবর্তীকে আমরা খুব কাছে থেকে দেখেছি। তিনি ছিলেন প্রকৃত অর্থেই নেতা। কবিতা পাঠ করেন নির্মাল্য দাস, ড. গীতা সাহা, সীতাংশু চক্রবর্তী, গৌতম চৌধুরী, প্রবীর ভট্টাচার্য, বাণীব্রত রায়, সুব্রত দাস, অনুপম দাস। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ছিল শৈলজারঞ্জন মনিমুক্তা বিদ্যামন্দির, ডাঃ প্রমোদ রঞ্জন চৌধুরী শিশুনিকেতন, সরস্বতী বিদ্যানিকেতনের ছাত্রছাত্রীরা, এছাড়া ছিলেন নৃত্যনীড় সংস্কৃতি কলাকেন্দ্রের ছাত্রছাত্রীরা, অজপা চৌধুরী ও সহ শিল্পীরা। বাংলা ও বিষ্ণুপ্রিয়া মনিপুরিতে একক সঙ্গীতের মাধ্যমে ভাষা শহিদদের স্মরণ করেন সুচরিতা সিনহা। সমস্ত অনুষ্ঠানে তবলায় সঙ্গত করেন চিরঞ্জীব অধিকারী। এদিন সন্ধ্যায় বিপিনচন্দ্র পাল ভবনে আলোচনা সভা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়।