অনলাইন ডেস্ক : ঘোষণা করা হলো বিজেপি কাছাড় জেলা কমিটির নতুন পদাধিকারীদের নাম। কমিটিতে একটি সাধারণ সম্পাদক পদকে ঘিরে বিধায়ক দীপায়ন চক্রবর্তী ও জেলা সভাপতি রূপম সাহার দড়ি টানাটানির খবর প্রকাশ্যে চলে আসার পর মঙ্গলবার তড়িঘড়ি করে ঘোষণা করা হয় পদাধিকারীদের নাম।তবে তড়িঘড়ি করতে গিয়ে কার্যকরী সদস্যদের নাম ঘোষণা করা সম্ভব হয়নি। ঘোষণা করা হয়েছে শুধু ১৭ জন পদাধিকারীর নামই। এতে রফা সূত্রে আগের কমিটির সাধারণ সম্পাদক দীপায়ন ঘনিষ্ট অভ্রজিত চক্রবর্তী ওরফে ঝলককে করা হয়েছে সহ-সভাপতি।আর রূপম ঘনিষ্ঠ গোপাল কান্তি রায়কে করা হয়েছে সাধারণ সম্পাদক । এই ডামাডোলে সহ-সভাপতি পদের এক দাবিদার সাংসদ পরিমল শুক্লাবৈদ্যের ঘনিষ্ঠ পুরানো কমিটির সাধারণ সম্পাদক শশাঙ্ক চন্দ্র পালের স্থান হয়নি কমিটিতে ।
এদিন জেলা সভাপতি রূপম সাহা কমিটির যে তালিকা প্রকাশ করেন এতে ৬ সহ-সভাপতি হিসেবে রয়েছেন-কঙ্কন নারায়ণ শিকদার, চামেলী পাল, অভ্রজিত চক্রবর্তী, প্রসেনজিৎ ভট্টাচার্য, বিপ্লব কুমার পাল ও সঞ্জয় কুমার ঠাকুর। ২ সাধারণ সম্পাদক হলেন-অমিতাভ রায় ও গোপাল কান্তি রায়। ৬ সম্পাদক হলেন-সৌমিত্র দেব, পরেশ তাঁতি, পঞ্চমী নাথ, অনিতা দেবী, রত্না দাস ও সুমনা দাস। কোষাধ্যক্ষ-গুলাব রায় এবং কার্যালয় সম্পাদক–বিজয় চন্দ। জেলা সভাপতি রূপম সাহা এই পদাধিকারীদের নাম ঘোষণা করে জানান, সব মিলিয়ে কমিটি হবে ৬৬ জনের। কার্যকরী সদস্য হিসেবে কমিটিতে যারা অন্তর্ভুক্ত হবেন তাদের নাম ঘোষণা করা হবে আগামীকাল বুধবার।
দলের রাজ্য কমিটি রূপম সাহাকে জেলা সভাপতি পদে মনোনীত করার পর তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয় কমিটির অন্যান্য পদাধিকারীদের বাছাই করতে ।দলীয় সূত্রের খবর অনুযায়ী এই প্রক্রিয়া শুরু হলে একাধিক পদকে ঘিরে দলের অভ্যন্তরে শুরু হয় দড়ি টানাটানি।প্রভাবশালী কর্মকর্তারা নিজেদের প্রভাব কায়েম রাখতে অনুগতদের কমিটিতে স্থান করে দেবার জন্য শুরু করেন নানা কসরত। অন্যান্য পদকে ঘিরে সমাধান সূত্র বের হলেও সাধারণ সম্পাদকের একটি পদকে ঘিরে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত চলে দড়ি টানাটানি।খবর অনুযায়ী সাধারণ সম্পাদকের একটি পদে অমিতাভ রায়ের নাম চূড়ান্ত হয়ে গেলেও অন্য পদে কাকে বসানো হবে এ নিয়ে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত দর কষাকষি চলে রূপম সাহা ও বিধায়ক দীপায়ন চক্রবর্তীর মধ্যে। দীপায়ন চাইছিলেন অভ্রজিত চক্রবর্তীকে আর রূপম চাইছিলেন গোপাল রায়কে।শেষ পর্যন্ত আলাপ-আলোচনা করে রফার মাধ্যমে অভ্রজিৎকে সহ-সভাপতির পদ দিয়ে গোপালকে করা হয় সাধারণ সম্পাদক।দলীয় সূত্রটির খবর অনুযায়ী,সহ-সভাপতি পদে সাংসদ পরিমল ঘনিষ্ঠ শশাঙ্ক চন্দ্র পালের নাম এক প্রকার নিশ্চিত হয়ে গেলেও শেষ মুহূর্তে অভ্রজিৎকে এই পদ দিতে গিয়ে শশাঙ্কর নামটাই বাদ পড়ে যায় । দলের লবিগত সমীকরণে প্রাক্তন জেলা সভাপতি অমিয় কান্তি দাস যে এবার কমিটিতে স্থান পাচ্ছেন না তা অবশ্য স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল আগেই। শেষ পর্যন্ত তাকে রাখাও হয়নি কোনও পদে ।
এদিন কমিটির নতুন পদাধিকারীদের নাম ঘোষণার পর সভাপতি রূপম সাহা অবশ্য দাবি করেন,কোনও পদকে ঘিরেই দলের অভ্যন্তরে মনোমালিন্য বা দড়ি টানাটানি ছিল না।তার কথায়,মন্ত্রী- বিধায়ক থেকে ধরে দলের বরিষ্ঠ কর্মকর্তা সবার সঙ্গে কথাবার্তা বলে সর্বসম্মতিতেই সব দিক চিন্তা করে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে।
তাৎপর্যপূর্ণ ব্যাপার হলো এদিন ঘোষিত কমিটিতে সহ-সভাপতি পদে নাম রয়েছে দীর্ঘদিন দলে অনেকটাই ব্রাত্য হয়ে থাকা প্রসেনজিৎ ভট্টাচার্যের।একইভাবে রূপম যখন নাম ঘোষণা করছিলেন তখন তার পাশে প্রাক্তন জেলা সভাপতি বিমলেন্দু রায়, চন্দন দে ও হেমাঙ্গ শেখর দাসদের সঙ্গে দেখা যায় অভিমানী হয়ে অনেকদিন দলের সঙ্গে ব্যবধান রেখে চলা বাসুদেব শর্মাকেও ।এ নিয়ে রূপমকে জিজ্ঞেস করলে জবাব দেন,- দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সবাইকে নিয়ে চলাই তার লক্ষ্য।