অনলাইন ডেস্ক : রাধারানী সিংহ নামে মহিলার মৃত্যুর ঘটনায় ঘনীভূত হলো আরও রহস্য। তার বাবার বাড়ির লোকেদের সন্দেহ তাকে খুন করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ঘুংগুর বাইপাস এলাকা থেকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছিল বছর ৪৪-এর রাধারানী কে। এরপর ওই রাতেই মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু ঘটে। রাধারানীর বাবার বাড়ি শিলচর তারাপুর শিববাড়ি রোড মণিপুরী বস্তি এলাকায়। শশুর বাড়ি বড়খলা কালিনগরে। স্বামী সুরজিৎ সিংহ একজন প্রাক্তন সেনাকর্মী। বিয়ে হলেও রাধারানী কিছুদিন ধরে ছিলেন তার বাবার বাড়িতে। তার বাবার বাড়ির লোকেরা জানান, বৃহস্পতিবার ঘটনার দিন রাত সাতটা নাগাদ রাধারানী বাড়ি থেকে বেরিয়ে ছিলেন। তিনি যখন বেরিয়েছিলেন তখন তার সঙ্গে ছিল নগদ প্রায় দেড় লক্ষ টাকা এবং শরীরে ছিল বেশ কিছু স্বর্ণালংকার। কিন্তু তাদের যখন মৃতদেহ সমঝানো হয় তখন সেসব কিছুই পাওয়া যায়নি। পুলিশ তাদের জানিয়েছে বাইপাস থেকে আহত অবস্থায় উদ্ধারের সময় রাধারানীর সঙ্গে এসব কিছুই পাওয়া যায়নি। বাবার বাড়ির লোকেদের সন্দেহ, কেউ রাধারানীকে হত্যা করে তার সঙ্গে থাকা নগদ অর্থ ও স্বর্ণালংকার নিয়ে পালিয়ে গেছে। বাবার বাড়ির লোকেরা জানান রাধারানী ছিলেন এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্য। সেই সংস্থার পক্ষ থেকে সম্প্রতি এক লটারি খেলা শুরু করা হয়েছে। সেই লটারি খেলার কাজের সূত্রে তিনি রায়দিনি রাতে বাড়িতে থেকে বেরিয়ে আশপাশে অন্যান্যদের বাড়িতে যেতেন। ফিরেও আসতেন কিছুক্ষণ পর। বৃহস্পতিবার রাতে বেরিয়ে যাওয়ার সময় বলে গিয়েছিলেন ফিরবেন শীঘ্রই। বেরিয়ে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর এক বিশেষ প্রয়োজনের জন্য তার সঙ্গে মোবাইলে কথাও হয় বৌদি রনিতা সিংহের। তখনও রাধারানী বলেছিলেন, কিছুক্ষণের মধ্যেই ফিরছেন বাড়িতে। কিন্তু এরপর অনেকক্ষণ তাকে ফিরতে না দেখে ফের ফোন করা হলে দেখা যায় তার মোবাইলের সুইচ অফ।আর গভীর রাতে পুলিশ তাদের বাড়িতে পৌঁছে জানায় রাধারাণীকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে বাইপাস থেকে। মেডিক্যালে তার চিকিৎসা চলছে। এতে রাধারানীর ভাই দ্রুত ছুটে যান মেডিক্যালে। সেখানে পৌছে দেখেন রাধারানীর মৃত্যু ঘটেছে।
বাবার বাড়ির লোকেদের কথায়, তর্ক সাপেক্ষে যদি ধরে নেওয়া যায়, পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু ঘটেছে রাধারানীর, তবুও তো প্রশ্ন থেকে যায় বাড়ি থেকে এত দূরে ঘুংগুর বাইপাস এলাকায় তিনি গেলেন কিভাবে। কারণ প্রতিদিনই কাজের সূত্রে বেরিয়ে তিনি ঘুরাঘুরি করতেন পাড়ায়। বৃহস্পতিবারও বেরিয়েছিলেন একই কথা বলে। এই অবস্থায় তার বাইপাসে পৌঁছে যাওয়াটা গভীর রহস্যজনক। তাদের অনুমান কেউ কিছুদিন আগে থেকেই রাধারানীর গতিবিধি লক্ষ্য করছিল। বৃহস্পতিবার রাতে অন্যান্য দিনের মতো তিনি বের হওয়ার পর কোনওভাবে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় বাইপাসে। এরপর কাজ হাসিল করে সরে পড়ে সেখান থেকে। পুলিশ সুপার নূমল মাহাতো জানিয়েছেন, ঘটনা নিয়ে ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু হয়েছে। ঘটনার পেছনে কোনও রহস্য লুকিয়ে থাকলে, অবশ্যই সেই মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে।